পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శళ': : - "క్కా -- অণশ্বিন পূবখোলা জানাল দিয়া যেমন মুখে আসিয়া পড়িত—অমনি ঘুম তাহার ভাঙিয়া যাইত। উঠান-নিকানো শেষ করিয়া মা তখন রান্নাঘরে ঠাড়ি-ম্যাত লইয়া ঢুকিয়াছেন। কোমরে জড়ানো কাপড়ের পাড় কাজের বাস্ততায় অল্প অল্প দুলিতেছে, দেখিয়া সে হাকিত, মা, তোমায় বললাম খুব ভোরে উঠিয়ে দিয়ে, তা না-মা দূর হইতে কোন উত্তর দিতেন না, কাছে আসিলে মহিম যদি পুনরায় ন-জাগাইবার অভিযোগ আনিত ত মৃদু হান্তে বলিতেন, সারারাত জেগে পড়িস, ভোরে একটু না ঘুমুলে যে অস্থখ করবে ? এখানে সারারাত ভাল ঘুম না হঠলেও এই ত স্বৰ্ষা উঠবার বহু আগে সে জাগিয়াছে ও বই খুলিয়া বসিয়াছে। কিন্তু স্নিগ্ধ প্রভাতে পড়ায় তেমন মন দিতে পারিতেছে কই ? স্বর্যোদয়ের সে শোভাই ব কোথায় এখানে ? এক দেখা যায় মধ্যাহের দীপ্তিময় স্বর্যাকে,--অন্য সময়ে রৌদ্রের কোমলতায় প্রভাতের বা অপরাহ্লের কল্পনা করিয়া লইতে হয়। নানা দেশ ইক্টতে আগত হোষ্টেলের ছেলেগুলির আচরণেরও কুলকিনারা যেমন পাওয়া যায় না! দুপুরবেল ইহারই মধ্যে ক্লাসে প্রকৃসি শুরু হইয়াছে, বাজি রাগিয়া কে কোন প্রফেসারকে বেমালুম ফাকি দিতে পারে তাহার প্রতিযোগিতাও কম বীরত্বপূর্ণ নহে। মহিমের এ-সব করিতে সাহসে কুলায় নাই—তাই পাড়াগেয়ে বলিয়। গ্যাতি রটিয়াছে। সবাকু চিত্র বা শীল্ডের গেল। দেপায় তার আপত্তি আছে। বাড়ী হইতে আসিবার সময় অনেকগুলি টাকা আবশ্ব সে আনিয়াছিল, কিন্তু বই কিনিতে, য়্যাডমিশন লষ্টতে, হোষ্টেলে য়্যাডভান্স করিতে সে-গুলি প্রায় শেষ হইয়া গিয়াছে। বাড়ীর অবস্থা এমন কিছু সচ্ছল নহে বাহাতে কলেজের পড় ও বিলাসিত একযোগে পূর্ণোদ্যমে চালানো যায়। ভাইবোনে ছয় জন ; একটি বোনের বিবাহ দিতে বাপের স্বল্প পুজি প্রায় খালি হইয়া গিয়াছে—আর একটি বোনের বিবাহ দিতে হইবে। বাপ মূরিগিরি করেন, জমি সামান্ত যা আছে সারা বছরের ভাতটা তাহ হইতে চলিয়৷ যায়। অন্যান্য গৃহস্থের তুলনায় তাহারা অবস্থাপন্ন বটে। না হইলে কলিকাতার হোষ্টেলে রাখিয়া ভাল কলেজে পড়াইবার সাধ মহিমের পিতার কেন হইল ? এই সৰ্ব্বস্ব বিশেষ চিন্ডিত আাছি b>SS ব্যয় করিয়া পড়ানের মূলে কতখানি আশা ও উজ্জল ভবিষ্যতের কল্পনা যে নিহিত, সে-কথা মহিমের মনে কষ্টিপাথরের সোনার কষের মত উজ্জ্বল হইয়া আছে। এক মাইল পথ সে অনায়াসে ইাটিয়া যায়, ট্রামে বা বাসে চড়ে না। কলিকাতার মাইল আবার নাকি মাইল । একজিবিশনের মধ্যে নানা দ্রষ্টব্য জিনিষ দেখিয়া শুনিয়া যেমন আনন্দ হয়, দৈহিক শ্রমের কথা মনেই হয় না, কলিকাতায় পথ চলিবার ক্লাস্তি—দুই ধারের বিচিত্র বিলাসপূর্ণ দ্রব্যসামগ্রীতে এমনই মিশিয়া গিয়াছে—বিশেষ ভাবে খুজিয়া বাহির না করিলে দর্শনই মিলে না। তার পর অপরাহ্লে পার্কে বেড়াইবার সময় মন আসিয়া চক্ষু বা কর্ণে আশ্রয় লয়। দীঘির চক্রপথে পায়চারি করিতে করিতে কখনও উচ্চ মঞ্চ হইতে সীতারুদের উল্লম্ফন দেখে, কখনও বেঞ্চের উপর দণ্ডায়মান কোন অদ্ভুত পরিচ্ছদ-পরিহিত ব্যক্তির বক্তৃতা শোনে, ক্লাস্তিবশত বেঞ্চে বসিলে পাশের বৃদ্ধদের রাজনীতি ও সমাজনীতির তথ্যপূর্ণ আলোচনা শুনিয় দেশ ও সমাজের সম্বন্ধে একটা অস্পষ্ট ধারণা করে, কখনও দীঘির ওপারে—ত্রিতল চারিতল অট্টালিকাগুলির উজ্জ্বল আলোকের পানে চাহিয়া ঐশ্বর্ষ্যের স্বপ্ন দেখে --সন্ধ্যায়ু পড়া ও খাওয়া শেষ করিয়া বিছানায় শুইলেই আবার বাড়ীর কথা মনে হয়। বর্ষাকালে বাহিরে বৃষ্টি পড়িতেছে, রান্নাঘরের দাওয়ায় এমন সময়ে তাহারা খাইতে বসিয়াছে— সঙ্গে সঙ্গে গল্প। দশ মিনিটের খাওয়া কলরবে কোলাহলে এক ঘণ্টায় শেষ হয়। অতঃপর বাড়ীর বৃদ্ধ পিসীমা দাওয়ায় বসিয়া আরম্ভ করেন সেকালের গল্প। সেকালের খাওয়ার স্থখ, লোকের স্বাস্থ্য, বউদের বখ্যতা ও লজ্জাশীলতা, ছেলেদের গুরুভক্তি ইত্যাদি মাঝে মাঝে রূপার কাঠির স্পর্শে সাগরশানীি রাজকন্যার নিবিড় নিদ্রা ও পক্ষীরাজ ঘোড়া চাপিয়া রাজপুত্রের দুঃসাহসিক অভিযানের রূপকথাও শোনা যায়। শুনিতে শুনিতে কাথামুড়িদেওয়া ছেলে-মেয়েগুলির চোখেও তন্দ্র ঘনাইয়া আসে– রাজকন্যার মতই নিদ্রা তাহাদের নিবিড় হইয়া উঠে। এতগুলি চিন্তা ঠেলিয়া নৃপেনের চিন্তা বড়-একটা মনে আসে না । আজ হঠাৎ নৃপেনকে মনে পড়িবার কারণ, ক্লাসে নোট