এলাহাবাদে ফলসংরক্ষণ-শিক্ষণ t-RS পরিমাণে হয়, ও দামও বেশী নয়। কিন্তু ফল যতটা নয় ; দেখতে মোট ও লম্বা ; শুধু মুখের কাছে যেখানে ব্যবহার করা উচিত তা হয় না। বারমাস নিয়ম করে ফল খাওয়ার রেওয়াজ আমাদের দেশে নেই। পাড়াগায়ে কত সময় ফল মাটিতে পড়ে থাকে, নষ্ট হয়ে পচে গিয়ে রোগের বীজাণুর আড়ত হয়ে দাড়ায়। ক্ষীর রাবড়ি ও অন্যান্ত মিষ্টান্নতে আমরা যত টাকা খরচ করি, তার অৰ্দ্ধেক বা সিকি ভাগ দিয়েও ফল কিনলে আমাদের স্বাস্থ্যের প্রভূত উন্নতি হবে। শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণমোহনের বক্তৃত হয়ে যাবার পর শ্রযুক্ত প্রেমবিহারী মাথুর ফলসংরক্ষণের কয়েকটি প্রধান প্রণালী আমাদের বুঝিয়ে দিলেন। মিষ্টার মর্গানের ফলের চাষ সম্বন্ধে কিছু বলবার কথা ছিল, কিন্তু কোন কারণ বশতঃ তিনি আসেন নি। মাথুর-মহাশয়ই তার পরিবর্তে বক্তৃত দিলেন। ফলের চাষের বিষয়ে তার খুব ভাল জানা ছিল না, তাই তিনি অন্য বই থেকে পড়ে শোনালেন। তবে এটা তিনি বার-বার জোর দিয়ে বললেন যে আমাদের দেশে যদি ফলসংরক্ষণ একবার আরম্ভ হয় তাহলে ফলের বেশী চাহিদ হবার সঙ্গে সঙ্গে ফল-উৎপাদন করতে চাষীদের আপন থেকেই উৎসাহ বেড়ে যাবে। তার পর জ্যাম, জেলি, চাটনি, আচার মোরব্ব, কনজার্ডস, প্রিজার্ভস, ক্যাত্তি, ফলের রস, সিরাপ, কডিয়াল, ও সির্কার (vinegar) প্রভেদ আমাদের বলা হ’ল। আমাদের ক্লাসে একটি বৃদ্ধ লোক ছিলেন। তিনি জেলি কাকে বলে জানতেন না। তাকে জেলি চাখতে দেওয়া হ’ল ও অন্যান্য জিনিষও অনেকে চেখে দেখতে লাগলেন । আমাদের ব্যবহারের জন্য সামনে খুব বড় একটা টেবিলের উপর একটা চেম্বারল্যাও অটোক্লেড বা প্রেসার কুকার, একটি ক্যান সীমিং মেশিন, হাইড্রোমিটার, থামোমিটার (ফারেনহিট) ও স্প্রিং ব্যালান্স রাখা ছিল। সেগুলি কেমন করে ব্যবহার করতে হয় আমাদের দেখান হ’ল । এই সব যন্ত্রের সাহায্য না নিয়েও কাজ চলতে পারে, কিন্তু থাকলে কাজের সুবিধা হয়। বাড়ীতে করতে হলে একটি ছোট শুিং ব্যালান্স ও একটি থামোমিটারের সব সময়ে দরকার হতে পারে। এ জর-দেখবার থামেৰ্গমিটার br?-一般 পারা জমে থাকে, সেটি ফুটন্ত জল বা ফলের রস কিংবা জেলিতে ডুবিয়ে দিলে পারা গলে যায়। উপর থেকে দেখা যায় যে উত্তাপ কত হ’ল। একটু সাবধানে এই থামোমিটার ব্যবহার করা দরকার, কারণ তার পারা-অংশটা যদি পাত্রের গায়ে ঠেকে যায়, তাহলে ফেটে যাবার সম্ভাবনা। আমরা যেটা দিয়ে কাজ করতাম সেটাতে 400 F পৰ্য্যস্ত উত্তাপ দেখবার দাগ করা ছিল। সেদিনকার মত ক্লাস সাঙ্গ হ’লে পরদিন শ্ৰীযুক্ত মেহত ক্লাস নিলেন । তিনি ফল পচে যাবার কারণ সম্বন্ধে নোট লেখালেন ও পচন কয় রকমের হয় তার নমুনা আমাদের দেখালেন । আচার, জেলি প্রভৃতি তৈরি করবার ও রাখবার জন্য আমরা কোন ধাতু ব্যবহার করব সেবিষয়ে সাবধান করে দিলেন। অম্লের সংস্পর্শে এসে প্রত্যেক ধাতুর একটি বিশেষ প্রতিক্রিয়া হয়। সাধারণ ভাষায় একে কলঙ্ক-পড়া বলে। আচার-মোরব্বা তৈরি করার সময়ে কাচের আস্তরণ-দেওয়া ধাতুপাত্ৰ হ’লে সবচেয়ে ভাল, কিন্তু তাহ ব্যয়সাধ্য বলে সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য বাধ্য হয়ে আমাদের এলুমিনিয়মের পাত্র ব্যবহার করতে হবে, তবে পুরনো হয়ে গেলে সে এলুমিনিয়ম পরিত্যাজ্য। বিদেশ থেকে ফোটনে ক’রে ফল আসে, তার ভিতরেও কোন একটি বিশেষ ধাতুর আস্তরণ থাকে বলে নষ্ট হয়ে যায় না। স্থায়ী রূপে ফল রাখতে হলে কেমন করে বীজাণুরহিত (sterilize e pasteurize) ##ì sfR** Gi-*&fe তিনি বললেন। এজন্য দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখা দরকার। প্রথমতঃ যে বীজাণু ফলে আছে সেগুলি নিৰ্ম্মল করা ও দ্বিতীয়ত: যাতে বাইরে থেকে বীজাণু আর প্রবেশ না করতে পারে তার ব্যবস্থা করা। অনেক সময় সেজন্য প্রতিষেধকেরও ব্যবহার কর হয়। অন্যান্য ঔষধ ছাড়া চুন, চিনি, রাইসর্ষে, সর্ষে তেল ও হলুদ বীজাণুনাশকের কাজ করে। অল্প পরিমাে বোরিক এসিড বা সোডিয়ম বেনজোয়েট ব্যবহার কর৷ে জিনিষ ঠিক থাকে, কিন্তু পাশ্চাত্য সভ্য দেশসমূহে খাদ্যগ্র:ে কোন প্রকার ঔষধের ব্যবহার অবৈধ । সাড়ে আটটার পর মেহতা-মশায় আমাদের জ্যাম গ্রন্থ
পাতা:প্রবাসী (ষট্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।