পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե-ՅՅ প্রবাসী SNరిgN9 উপস্থিত হইল! আমনি সেগুলি কুঠতে লইয়। যাইবার জন্ত এক জন শিবকে গুরুদেব উচ্চৈঃস্বরে আহবান করিতে লাগিলেন । পাঠ ক্ষণকালের জন্য স্থগিত রহিল। আমরাও সংসারে অনাসক্তির অপূৰ্ব্ব আস্বাদ পাইয় গৃহে প্রত্যাবর্তন করিলাম ! একবার এক সাধুকে দেখিতে গিয়া দেখি, বহু সরকারী পেনসনভোগী সেখানে জড়ো হইয়াছেন । শাস্ত্রালাপ চলিতেছে । এক জন জিজ্ঞাসু ভগবদ্দশম সম্বন্ধে প্রশ্ন করিতেছেন । আর গুরু তাতার জিজ্ঞাসা চরিতার্থ করিতেছেন। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হইল যে কিছুই গুরুর উপদেশ ছাড়া জানিবার উপায় নাই ; সুতরাং গুরু-করণ একাস্ত প্রয়োজন । কিন্তু যে-কোন গুরুই শিষ্যের উপকার করিতে পারে না সদৃগুরুর প্রয়োজন । অর্থাৎ— এদিকে এক জন আমার সঙ্গে আলাপ জুড়িয়া দিলেন এবং আমার নাম ধাম ইত্যাদিও জিজ্ঞাসা করিলেন । ইহার কিছু কাল পরে এক ছাপানো চিঠিতে জানিতে পারিলাম যে কোনও এক স্থানে এক মহোৎসব হইবে ; ভক্তদের সাহায্য প্রয়োজন ; যৎকিঞ্চিৎ পাঠাইসু দিলে বাবা সন্তুষ্ট হইবেন । চিঠিতে আমার ঠিকান নিভুল দেখিয়া প্রথমটায় নিজেকে অত্যস্ত প্রসিদ্ধ মনে হইতেছিল ; কিন্তু পরক্ষণেষ্ট মনে হইল যে, আমার উপস্থিতির সময় সেখানে আমার নাম ঠিকানা জানিয়া রাখার মত লোক বৰ্ত্তমান ছিল ! ইহারা সব পালের শুভ্ৰ মেষ না কৃষ্ণ মেষ ? বর্তমানে ভারতে সন্ন্যাসীদের সংখ্যা কত তাহ কোথাও নির্ণীত হইয়াছে বলিয়। জানি না, কিন্তু যে-কোন মেলায়, বিশেষত: কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ সংসাববিরাগী সাধু জমায়েং হন বলিয়৷ জানি । সমাজে ইহাদের অস্তিত্ব একটা ভাবনার কথা । নীতি, অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রনীতির দিক্ দিয়া এই প্রশ্ন বিবেচিত হইতে পারে। নীতির দিকে ইহাদের অস্তিত্ব সমাজের কতখানি হিত সাধন করে, তাহ। কতকটা বুঝাইতে চেষ্টা করিয়াছি। অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির দিক্ দিয়াও বিষয়টির গুরুত্ব কম নয়। পয়ত্রিশ কোটি লোকের ভিতর এক কোটি লোক যদি কৰ্ম্মক্ষম হইয়াও অস্তের উপাৰ্জ্জনের উপর নির্ভর করে তবে সেটা কি সমাজের স্বাস্থ্যের লক্ষণ ? এ ছাড়া অন্ধ, আতুর, দুঃস্থ প্রভৃতি ত রহিয়াছেই । বড় বড় শহরে অত্যধিক ভিক্ষুকের উপস্থিতি একটা বিবেচ্য সমস্ত হইয়া দাড়াইয়াছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই বর্তমানে বেকারসমস্যাও একটা সমস্ত । বেকারের কৰ্ম্ম করিতে ইচ্ছুক কিন্তু কৰ্ম্মহীন। ভিক্ষুকের প্রায়ই কৰ্ম্মাক্ষম স্বতরাং আয়তীন । ইহাদের কথা যদি সমাজ ভাবিতে পারে, তবে কৰ্ম্মক্ষম অথচ কৰ্ম্মে অনিছু সাধুদের কথাই বা সমাজ ভাবিবে না কেন ? যে-কোন শ্রেণীর লোকের অস্তিত্ব সমাজের পক্ষে কল্যাণকর কি না সে-কথা আক্ত সাহস করিয়া সব দেশের লোকেই ভাবে । ধনী-মজুরের কিংবা জমাদার-প্রক্তার সমস্যা আজ পৃথিবী বিচার করতে যাধ্য হইয়াছে ; এবং কোন কোন শ্রেণীর অস্তিত্ব-বিলোপ আজকাল অনেক দেশেই ঈঙ্গিত হইয়া দাড়াইয়াছে । শুধু অপরিগণনীয় সাধুদের দ্বারা হিন্দুসমাজের উপকার হইতেছে কি না এ-কথাটা ভাবাই কি দোষ ? জমীদারদের অস্তিত্ব-বিলোপের কথা আক্ত বাংলা দেশে স্পষ্টভাবে উঠিয়াছে। তাহাতে জমীদারেরা কৃষ্ট হইয়াছেন, বিচলিতও হইয়াছেন ; কিন্তু আলোচনা বন্ধ করার শক্তি আর র্তাহাদের নাই । অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলিলে সাধুলা, কৃষ্ট হইবেন, ইহাও স্বাভাবিক। কিন্তু তাহাদের রোশষ্ট । র্তাহাদের উপকারিতা প্রমাণ করে মা ! যে ভ্রান্ত ধৰ্ম্ম-প্রেন্স ইহাদের অস্তিত্বের মূল, তাহারও আমল সংস্কার আবশ্যক। এ ধরণের ধৰ্ম্মভাব সম্বন্ধে ফ্রয়েড প্রভূতি । মনস্তত্ত্ববিৎ যাহা বলিয়াছেন, এখানে আর সে-কথা তুলিব মা । কিন্তু কিছু দিন আগে লঞ্জে-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যানসেলর ডাক্তার পরাঞ্চপে এক বক্ততায় এ-বিষয়ে যাহা বলিয়াছিলেন তাঙ্গর সারাংশ উদ্ধত করিবার লোভ সংবরণ করিতে পারিলাম না । “ভারতে বিশেষতঃ পশ্চিম-ভারতে, আজকাল গুরুকরণেপু ধুম পড়িয়া গিয়াছে। লোকে নিজের বিচারশক্তিতে আধ বিশ্বাস করে না। বহু শিক্ষিত ব্যক্তিও এই ধূয়ায় মতি৷ উঠিয়াছেন । নিল জ্ঞ এবং বেহায় না-তইতে পারিলে গু? হওয়া যায় না ...দুই এক বার সমাধি বা মূৰ্ছা ঘটাইতে পারিলে গুরুর ঈশ্বর-সাক্ষাৎকারের কাহিনী দেশময়ু ছড়াইয় পড়ে । অনেক সময় এইরূপ সমাধি গঞ্জ, আফিম কিংবা মদের সাহায্যেও আনয়ন করা চলে ।...একবার আমেরিকা ঘুরিয়া আসিতে পারিলে অভাবনীয় ফল পাওয়া যাক্টরে । আমেরিকাতেও মাথ!-খারাপ লোক আছে ; তাঙ্গারা এই মূতন টাজটিকে অবতার বলিয়। ঘোষণা করিতে কুঠাবোধ করিবে না । শিষ্য-শিষ্যাণী জুটিবে, কাগজেও নাম জাহির হইবে । তার পর আর ঠেকায় ক ?” ডাক্তার পরাঞ্জপের নিজের কথাতেষ্ট পরিসমাপ্ত করি— “আমি বলিতে চাই না যে এষ্ট (গুরুকরণ) ব্যাপারটা সমস্তই জ্ঞানত: কৃত যুথ-বদ্ধ কাৰ্য্য। কতকগুলি সজ্ঞান ভণ্ড অবশ্যই আছে আর কতকগুলি আত্মপ্রতারিত আর বাকী বেশীর ভাগই যাহ। কিছু বিচার-বিরুদ্ধ এবং রহস্যময় তাহার মোহে মোহিত এবং যে-কোন উপায়ে এই আকাঙ্ক্ষী চরিতার্থ করিতে উৎসুক । ইতাদের মধ্যে কাহারও কাহারও কোন গুরু উদ্ধেশ্বাও থাকে, এবং শেষ পর্য্যস্ত এই উদ্দেশ্য রাজনৈতিক বলিয়া প্রতিপন্ন হইলেও তাতাদের আশ্চৰ্য্য হওয়া উচিত হইবে না। কিন্তু আমি আমার দেশবাসীর বিচার-বৃদ্ধির প্রতি নিবেদন করিতে চাই –যাহাদিগকে খুব সদয়ভাবে বিচার করিলেও আত্মপ্রতারিত নিরেট মুখ ছাড়া আর কিছু বলা চলে না, সেই সব ব্যক্তিকে সাধারণের অনুসরণীয় আদশ হিসাবে শ্রদ্ধ করা এবং প্রশংসা করা কি দেশের পক্ষে কল্যাণপ্রদ ?"* আমরাও দেশের কাছে এই কথাই জিজ্ঞাসা করিতে চাই ।

  • “I do not mean to imply that the whole business is a tissue of organized conscious deceit. A few are conscious hypocrites, a few others are self-deceived, while the vast majority consists of people who have a vague fascination for all that is occult and against reason and satisfy this bent in the way that offers itself. A few of these people have usterior motives and should not be surprised if some of these were found to be political. But I appeal to the better nature of my countrymen whether it is in the best interests of the country to laud up such men—who, to." them mildly, are self-deceived idiots as model for the man to follow.” (Amrita Bazar Patrika, October 9, 1934).