পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उञाiश्विन्म অপূৰ্ব্ব ভাবোম্মাদন দেখিয়া আর তাহ অসম্ভব বোধ হইল না। ধর্মের এ-দিকটা কোন দিন প্রত্যক্ষ করি নাই ; আজ যেন হঠাৎ চোখ খুলিয়া গেল । ভিক্ষু বাহঙ্গানশূন্ত ভাবে বলিতে লাগিলেন, ‘গৌতম! তথাগত। আমি অহঁত চান্ত না, নিৰ্ব্বাণ চাই ন-একবার তোমার স্বরূপ আমাকে দেখাও। যে-দেহে তুমি এই পৃথিবীতে বিচরণ করতে সেই দেব-দেহ আমাকে দেখাও। বুদ্ধ, তথাগত—” বুঝিলাম, বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম নয়, স্বয়ং সেই কালজয়ী মহাপুরুষ ভিক্ষু অভিরামকে উন্মাদ করিয়াছেন। পা টিপিয়া টিপিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিলাম । এই আত্মহারা ব্যাকুলত বসিয়া দেখিতে পারিলাম না, মনে হইতে লাগিল যেন অপরাধ করিতেছি । -

ধৰ্ম্মোন্মত্তত বস্তুটা সংক্রামক । আমার মধ্যেও বোধ হয় অজ্ঞাতসারে সঞ্চারিত হইয়াছিল । তাই, উল্লিখিত ঘটনার কয়েক দিন পরে এক দিন ফা-হিয়ানের ভ্রমণবৃত্তাস্তের পাতা উল্টাইতে উলাহতে হঠাৎ এক জায়গায় আসিয়া দৃষ্টি আটকাইয়া গেল ; আনন্দ ও উত্তেজনায় একেবারে লাফাইয়া উঠিলাম। ফা-হিয়ান পূর্বেও পড়িয়াছি, কিন্তু এ-জিনিষ চোখে ঠেকে মাহ কেন ? সেইদিন অপরাহ্লে ভিক্ষু অভিরাম আসিলেন। উত্তেজনা দমন করিয়া বইখানা তাহার হাতে দিলাম। তিনি উৎসুক ভাবে বলিলেন, “কি এ ? পড়ে দেখুন’ বলিয়া একটা পাতা নির্দেশ করিয়া দিলাম। ভিক্ষু পড়িতে লাগিলেন, আমি তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলাম। “বৈশালী হইতে দ্বাদশ শত্ৰু পদ দক্ষিণে বৈশ্বাধিপতি স্বদত্ত দক্ষিণাভিমুখী একটি বিহার নির্মাণ করিয়াছিলেন। বিহারের বামে ও দক্ষিণে স্বচ্ছ বারিপূর্ণ পুৰণি বই " ও নানাবর্ণ পুষ্পে অপূৰ্ব্ব শোভা ধারণ করে। ইহাই জেতবনবিহার । “বুদ্ধদেব যখন এয়ন্ত্রিশ স্বগে গমন করিয়া তাহার মাতৃদেবীর হিতার্থে নব্বই দিবস ধর্মপ্রচপি করিয়াছিলেন, চন্দন-মুক্তি ارایه نسوا তখন প্রসেনজিৎ র্তাহার দর্শনাভিলাষী হইয়া গোশীর্ব চন্দনকাঠে তাহার এক মূৰ্ত্তি প্রস্তুত করিয়া যেস্থানে তিনি সাধারণত উপবেশন করিতেন তথায় স্থাপন করিলেন। বুদ্ধদেব স্বর্গ হইতে প্রত্যাগমন করিলে এই মূৰ্ত্তি বুদ্ধদেবের সহিত সাক্ষাতের জন্য স্বস্থান পরিত্যাগ করিল। বুদ্ধদেব তখন মূৰ্ত্তিকে কহিলেন, ‘তুমি স্বস্থানে প্রতিগমন কর ; আমার নির্বাণ লাভ হইলে তুমি আমার বলিলে মূৰ্ত্তি প্রত্যাবর্তন করিল। এই মূৰ্ত্তিই বুদ্ধদেবের সৰ্ব্বাপেক্ষ প্রথম মূৰ্ত্তি এবং ইহা দৃষ্টেই পরে অন্যান্ত মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। “বুদ্ধ-নিৰ্ব্বাণের পরে এক সময় আগুন লাগিয়া জেতবন-বিহার ভস্মীভূত হয়। নরপতিগণ ও র্তাহাজের প্রজাবৰ্গ চন্দন-মূৰ্ত্তি ধ্বংস হইয়াছে মনে করিয়া অত্যন্ত বিমৰ্ষ হন ; কিন্তু চারি-পাচ দিন পরে পূর্বপার্থস্থ ক্ষুদ্র বিহারের দ্বার উন্মুক্ত হইলে চন্দন-মূৰ্ত্তি দৃষ্ট হইল। সকলে উৎফুল্ল হৃদয়ে একত্র হইয়া বিহার পুননিৰ্ম্মাণে ব্ৰতী হইল। দ্বিতল নিৰ্ম্মিত হইলে তাহার প্রতিমূৰ্ত্তিকে পূৰ্ব্বস্থানে স্থাপন করিল - - -” তন্দ্রামূঢ়ের ন্যায় চক্ষু পুস্তক হইতে তুলিয়া ভিক্ষু আমার পানে চাহিলেন, অস্পষ্ট স্বলিত স্বরে বলিলেন, ‘কোথায় সে মূৰ্ত্তি ? আমি বলিলাম, জানি না। চন্দন-মূৰ্ত্তির উল্লেখ আর কোথাও দেখেছি ব’লে ত স্মরণ হয় না।’ অতঃপর দীর্ঘকাল আবার দুই জনে চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। এই ক্ষুদ্র তথ্যটি ভিক্ষুর অস্তরের অস্তস্তল পৰ্য্যস্ত নাড়া দিয়া আলোড়িত করিয়া তুলিয়াছে তাহা অনুমানে বুঝিতে পারিলাম। আমি বোধ হয় মনে মনে তাহার নিকট হইতে আনন্দের একটা প্রবল উচ্ছ্বাস প্রত্যাশা করিয়াছিলাম, এই ভাবে অভাবিতের সম্মুখীন হইয়া তিনি কি বলিবেন কি করিবেন তাহা প্রত্যক্ষ করিবার কৌতুহলও ছিল। কিন্তু তিনি কিছুই করিলেন না ; প্রায় আধ ফট নিশ্চল ভাবে বসিয়া থাকিয়া হঠাৎ উঠিয়া দাড়াইলেন। চক্ষে সেই সন্তনিক্ৰোখিতের অভিভূত দৃষ্টি,—কোন দিকে দৃকপাত করিলেন না, নিশির ডাক শুনিয়া ঘুমন্ত মাতৃৰ