পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ হিন্দু-প্রভাবিত বাংলা-সাহিত্য ԳՇ: পৌত্তলিকতা ও হিন্দুসংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত সেই জন্য ইহা মুসলমানদের পাঠ করা অন্যায়। যদি মুসলমানদের পড়িতে হয় তবে তাহীদের প্রয়োজনমত সাহিত্য গড়িয়া তুলিতে হইবে । ইহা অবিসম্বাদিত সত্য যে, প্রতিভাবান লেখকের ছাপ সাহিত্যে পড়িবেই পড়িবে । ইহা পরিহার করিবার উপায় নাই। নিজ ধৰ্ম্মের আদর্শ অনুরূপ নহে বলিয় যদি মুসলমানকে কোন সাহিত্য পরিত্যাগ করিতে হয়, তবে সারা বিশ্বে পড়িবার মত সাহিত্য তাঙ্গর জন্তু একটাও পাওয়া যাইবে না । শুধু হিন্দু-প্রভাবিত বাংলা-সাহিত্য নহে, বিশ্বের বড় বড় সাহিত্য, রোম গ্রীস ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশের অমূল্য সাহিত্যসম্পদ মুসলমানদিগকে পরিত্যাগ করিতে হয়—অদ্য পরে কা কথা, প্রাগ ইসলামিক যুগের আরবী সাহিত্য, ইম্রাল কায়েম প্রমুখ কবিগণের অমর কবিতা মুসলমানদের জন্য হারাম হত য় পড়ে, অথচ এই সব আরবী সাহিত্য মুসলমানরা অতি সমাদরে পাঠ করিয়া থাকেন । আর অমুসলমান সম্প্রদায়গুলি যদি তাতাদের ধম্মের আদশের বিপরীত বলিয় ইসলামী সাহিত্যকে অস্পৃশু করিয়া রাখে তবে সংস্কৃতির ও ভাবের আদান কেমন করিয়া হতবে ? ইহার কুফল এই হইবে যে প্রত্যেক দেশের সাহিত্য কোণঠাসা কই ; পড়িয়া রহিরে । সাহিত্যক্ষেত্রে আস্ত জাতিকত বলিয়া কোন কিছুরঙ্গ অস্তিত্ব থাকিবে না । বিভিন্ন দেশের ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাহিত্যের মধ্যে আদানপ্ৰেদান যতই বেশ ইষ্টতে থাকিবে, ততঙ্গ তাহ প্রত্যেক সাহিত্যের পক্ষে লাভজনক ব্যাপার হইবে । ইহা বন্ধ করা উচিত হইবে না । পৌত্তলিক ও পরকীয়-প্রভাব আছে বলিয়া বাঙালী মুসলমানরা যদি অপরের সাহিত্য পরিহার করিতে চায়, আর বক্তমানে তাহদের যে যৎসামান্য সাহিত্যসম্পদ আছে কেবল তাহারত উপর নির্ভর করে, তবে ভয় হয় তাহার সাহিত্য-প্রগতি বুঝি বা বন্ধ হইয় যাহবে । এ বিষয়ে অসাহিত্যিক ব্যক্তি, বিশেষতঃ র্য্যহাদের সাহিত্যে কোন দখল পাই, তাহারা যদি কথায় কথায় নির্দেশ দিতে আসেন, আর সমাজের সংহতির নামে মুসলমানগণ যদি সেই নির্দেশ মাথ পাতিয়া মানিয়া লন, তবে তাই তাইশদের পক্ষে অe iস্ত ক্ষতিকর হস্তরে। বর্তমানে মুসলমানগণ যে বাংল-সাহিতো পশ্চাৎপদ তাহার জন্য উর্দ ওয়ালার দায়ী। এতদিন উদ,কে মাতৃভাষা করিবার চেষ্ট হইতেছিল, এখন আবার কুষ্টির নামে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হইতে মুসলমানকে বঞ্চিত করিবার ষড়যন্ত্র হইতেছে—এই কোটান শ্রোতে পড়িয়া মুসলমানগণ কি চিরকালই অনির্দিষ্ট ভাবে চলিতে থাকিবে ? পরিশেষে আমার বক্তব্য এই, বাংল-সাহিত্য আজ যে গৌরবান্বিত স্থানে উপনীত হইয়াছে তাহারই পার্থে নিজেদের স্থান করিয়া লইবার জন্য মুসলমানদিগকে কঠোর সাধনা করিতে হস্তবে । বঙ্গসাহিত্যে হিন্দুদের দেবদেবীর নাম দেখিলেই যেমন আতঙ্কিত হওয়া ভুল ও অন্যায়, ঠিক সেহরুপ তাহারঙ্গ প্রতিক্রিয়াস্বরুপ যথা-তথ। আরবী-ফারসী শব্দ ব্যবহার করাও অন্যায় হইবে । সাহিত্যে দেবদেবীর নাম অথব স্বতি, অথবা দেবদেবীর উপমামূলক কোন রচনা পাঠ করিলেই কেহ পৌত্তলিক হইয় পড়ে না। গৌরবের যুগে মুসলমানগণ রোমান ও গ্রীক সাহিত্য যথেষ্ট আলোচন করিয়াছিলেন, কিন্তু তজ্জন্য তাহার পৌত্তলিক হক্রয় পড়েন নাই । আর এই বিতর্ক উঠা সত্ত্বেও যে সব মুসলমান হিন্দুদের লিখিত বঙ্গসাহিত্য পাঠ করেন, তাহার কি পৌত্তলিক হইয়া পড়িয়ছেন ? যে-সব মুসলমান ইংরেজী xĩf*<I b#5 ##zi, ### Alma Mater, Temple of Learning, Pantheon 2ssfs own zoo “o so করেন, যাহার মূলে আছে পৌত্তলিকতার স্পর্শ। কিন্তু কহ সে-সময় ত কোনও কথা উঠে না । মুসলমানগণ বাংলা ভাযায় দেবদেবীর অনেক কাহিনী পডিয়াছে, কিন্তু কোনও দিন তাহাদিণকে খোদাতালাব প্রতিমুক্ত বলিয়া বিশ্বাস সৌন্দয্য-সৃষ্টির জন্য, উপযুক্ত উপম অন্তলেখনী হত্নতে কেনিওঁ অমৃত্যুপ্রেরণার করে নাই । প্রাস ও অলঙ্কারের জন্য যাই লেখকের স্বতঃউৎসারিত হইয়াছে তাতাকে আমরা কারণ দর্শাইয় পরিত্যাগ করিতে পারি না । সময় বহু শবকে বাদ দিয়া লেখক এক শুভ মুহূর্বে যে যোগ্যতম শব্দটি ব্যবহার করিয়াছেন, তাহাকে পবিত্যাগ করিয়, অথব, তাহর পরিবর্কে অনা শত্ব প্রযুক্ত কবিলে সমগ্র লেখাটি বার্থ হইয়: যাইবে । একট উদাহরণ দিয়া ব্যাপারটি বুঝাইবার চেষ্টা করিব । "রসাল ও স্বর্ণলভিক' নামক কবিতার এক স্তানে লিখিয়াছেন : কবি মধুসুদন তাহার