পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పెళ్సి করিতে লাগিলেন । .-লামাকে লইয়া শোভাযাত্র হইল, আগে আগে ধূপধুনা জীৰাইয়া কয়েক জন চলিল। রাস্ত হইতে কিছু দূরে এক জায়গায় গালিচা বিছান ছিল এবং পেয়ালা রাখিবার ছোট ছোট চোঁকিও ছিল। বসিবামাত্র চা আসিল—যদিও আমি ঘোল সেবা করিলাম এবং ডুকৃপা লামার সম্মুখে চাউল ও নেপালী মুহুরের ( রৌপ্য মুদ্রা) ভেট পড়িতে লাগিল, তিনি মস্ত্রোচ্চারণ করিতে করিতে মন্ত্ৰপূত লাল ও হরিদ্র বর্ণের কাপড়ের টুকরা বিতরণ করিতে লাগিলেন । আধ ঘণ্টার মধ্যে এই ব্যাপার সাঙ্গ হুইল এবং আমরাও পথে অগ্রসর হইলাম। ধীরে ধীরে আমর কোসী নদীর এক ছোট শাখার সম্মুথে আসিলাম ; উহার ধারা এইখানে ঘোর নিনাদে বহু উচ্চ হইতে প্রপতিত হইতেছিল। নদীপারের উপরে লোহার শিকলে কুলান সুদীর্ঘ সেতু, কিন্তু উহার মাঝামাঝি পৌছিলেই উহ! এমন দুলিতে আরম্ভ করে যে অনেকে ভীত হইয়া পড়ে। আমাদের সঙ্গের নেপালী বালক গুম-জু অতি কষ্টে পার হইল। সেতুরক্ষার জন্য নানাবর্ণের পতাকাযুক্ত দেবতা স্থাপিত আছে । পুলের পাশেই উচুনীচু ক্ষেতের মধ্যে ডাম্গ্ৰাম । গ্রামে বিশ-পচিশটি ঘর, প্রায় সবই প্রস্তরের দেওয়াল ও কাঠের ছাউনি দিয়া নিৰ্ম্মিত। একটু উপরেই দেবদারুর জঙ্গল, স্বতরাং ঘর-ছাওয়া ইত্যাদি সকল কাৰ্য্যেই দেবদার কাঠের প্রচুর ব্যবহার হয়। একটি বড় ঘরে আমাদের থাকিবার ব্যবস্থা করা হইয়াছিল। যদিও এসময়ে লবণ সংগ্ৰহকারীদের ঘর ভাড়া দিলে লাভ হইত, তথাপি লামার সম্মান ও ভয় বড় কম ব্যাপার নহে । গ্রামে প্রবেশ করিতেই নরনারীর দল লামার আশীৰ্ব্বাদ লাভের জন্য দৌড়াইল, ঘরে প্রবেশ করিবার পরই সেখানেও ভীড়ে ঘর ভরিয়া গেল। ঙ্গেীতলায় আমাদের স্থান নির্দিষ্ট হইল। ডুকৃপা লামাকে মাখনমিশ্রিত মদ্য নিবেদন করা হইল। আমাদেরও মাখনযুক্ত উত্তম চা জুটিল । রাত্রেই রিঞ্চেনের কাছে শুনিলাম, কাল হইতে অবলোকিতেশ্বরের মহাব্রত আরম্ভ হইবে। অনেকেই প্রবাসী sesరి ব্রতধারণের জল্প প্রস্তুত হইতেছিল ; আমিও বলিলাম ব্ৰত পালন করিব। এই ব্রত তিন দিন ব্যাপী হয়, প্রথম দিনে দ্ধিপ্রহরের পর ভোজন নিষেধ, দ্বিতীয় দিন নিরাহারে মৌনব্ৰত ধারণ করিতে হয়, তৃতীয় দিনে কেবল পূজা করিতে হয়। ব্রতের সঙ্গে মন্ত্রজপ, পাঠ, পঞ্চাশাধিক স্বতদীপ প্রজ্জালন, সত্ত্ব ও মাখনের তোমর্প ( বলি ) সাজাইয়া নিবেদন ইত্যাদি চলে, উপরন্তু বহু শত সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবংও করিতে হয় । অবলোকিতেশ্বরের এই ব্ৰতে (স্থ্যম ) মদ্য ও মাংস সৰ্ব্বথা নিষিদ্ধ। পরদিন দ্বিপ্রহরে সকলে অন্নভোজন করিলাম তাহার পর পূজাপাঠ আরম্ভ। অন্তদের সঙ্গে আমিও কয়েক শত দগুবৎ করিয়া ক্লাস্ত হইয়া পড়িলাম। অনর্থক কেন পরিশ্রম করিয়া হয়রাণ হই, এই ভাবিয়া দ্বিতীয় দিন প্রাতেই ব্রতভঙ্গ করিয়া চা ও সন্তু ভক্ষণ করিলাম। সেই দিন দ্বিপ্রহরে এক ভোটীয় সজ্জন আমাকে তাহার গৃহে লইয়া পরম তৃপ্তির সহিত মুরগীর ডিমে প্রস্তুত সেওয়ষ্ট’ ইত্যাদি ভোজন করাইলেন । ভোজনের পর নানা বিষয়ে কথাবাৰ্ত্ত হইল। এই ভদ্রলোক লাস, চীন-সীমাস্তের খাম্‌ অঞ্চল ইত্যাদি নানা স্থলে অধ্যয়ন করিয়াছেন, গোখ1ভাষাও উত্তমরূপ জানেন । তৃতীয় দিন বৈশাখী পূর্ণিমা ছিল ; উপরোক্ত সজ্জন আজ বুদ্ধোৎসব মানত করিলেন। বৌদ্ধদের এই পবিত্রতম তিথিতে বুদ্ধদেবের জন্ম, বোধ ও নিৰ্ব্বাণ তিনটিই হয়, শুনিলাম এই দিনে সমস্ত ভোট দেশে বুদ্ধোৎসব হয় । এই তিন দিনে লোকের ভেট-পূজা ইত্যাদি শেষ হইলে, ২৪শে মে প্রাতরাশের পর আমরা পুনৰ্ব্বার পথে বাহির হইলাম। কিছুদূর যাইতেই পৰ্ব্বতের দেবদারু কটিবন্ধে প্রবেশ করিলাম, নদীর দুই পাশেই দেবদারু-বৃক্ষরাজি দেখা দিল। বেলা দুইটার মধ্যে চিনা গ্রামে পৌছিলাম। এখানেও আমাদের খবর আগেই পৌঁছিয়াছিল, স্বতরাং খুব বাদ্যভাগুের সহিত ডুকৃপা লামাকে স্বাগত করা হইল। ডুকৃপা লাম আসনে বসিতেই দুই-তিন ডজন থালায় চাউল, মুহর ও খাতা' (চীনদেশে প্রস্তুত শ্বেত রেশমী বস্ত্র, যাহা মাল্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় ) ইত্যাদি উপস্থিত হইল। সন্ধ্যার সময় রিঞ্চেন বলিল, “গুরু এখানে তিন দিন পূজাপাঠ করিবেন।” এইরূপে মাঝে মাঝে নিশ্চলভাবে থাকা আমার নিকট