পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పెsb= প্রবাসী Nరి3-9 এমনি করিয়া সাবধানতা লওয়া হইয়াছিল, ভয় পাছে কেহ লয়। অধিকার তাহার ঠিক বজায় আছে, 4ঘরকে কেহ কোনদিন “নায়েব-মশায়ের ঘর” ভিন্ন অঙ্ক কিছু বলিবে না। এই নায়েব-মহাশয়ের ঘরে বাড়ীর যুবক ও প্রায়প্রৌঢ়দের তাসের আড্ডা বসে। একখানি ছোট তক্তাপোয, তাহার মাত্র তিনখানি পায়, অপরটির পরিবর্তে একটি কেরোসিনের বাক্স। তাহার উপরে চার জনে বসিয়া অনবচ্ছিন্ন মনোযোগের সহিত ব্রিজ খেলেন, এবং আরও জনকয়েক আশেপাশে ছিন্ন মোড়া ও ভাঙা টুলের উপর বসিয়া সেই খেলা নিবিষ্টচিত্তে দেখে। হয়ত প্রচুর আনন্দ পায় । তক্তাপোষের পিছনে কাঠের দেওয়ালে পেরেক পুতিয়া দুইখানি মারাত্মক অস্ত্র টাঙাইয়া রাখা হইয়াছে—একটি বিপুলকায় মরিচ-ধরা মহিষ-বলির খড়গ, আর একখানি রামদা। বলি এ-বাড়ীতে আগে নিয়মিত হইত—একবার পাঠা বলিতে খড়গ বাধিয়া যায়—তাহার পরে বৎসর নাঘুরিতেই তিনটি শিশু এবং একটি কিশোরের অকালমৃত্যু ঘটে। তাহার পর হইতে জীববলি বন্ধ । রামদাখানি কিন্তু পূজার সময় এখনও কাজে লাগে ; তবে কতকগুলি নিরীহ ছাগশিগুকে স্বর্গে পাঠাইবার কাজে নহে ; নবমীর দিনে একটি পাকা শশা, একটি চালকুমড়া ও একটি আখ বলি হয়। অবশু তাই বলিয়া বাড়ীর কেহ বৈষ্ণব নহেন। পূজাবাড়ীর অবিশ্রান্ত কোলাহল, ঢাক-ঢোলের জাওয়াজ, সমস্ত উপেক্ষা করিয়া নায়েব-মশায়ের ঘরের তাসখেলা চলে । শুধু একজনের এসব তেমন ভাল লাগে না। সে মণীশ। তেইশ-চব্বিশ বছরের যুবক, খামবৰ্ণ, দীর্ঘ একহারা সবল সপ্রতিভ চেহারা। স্বপুরুষ ঠিক নয়, চেহারায় খুঁতের অভাৰ নাই। ছোট খুনী চরিত্রের দৃঢ়তার অভাব ধরাইয়া দেয়। কিন্তু গভীর কালো টানা দুইটি চোখের দিকে চাহিলে সেসব কথা মনে থাকে না। পারে ন!—খেলা ত ভাল লাগেই না। যত ক্ষণ পুরাদমে তাসখেলা চলে, তত ক্ষণ সে বড় দালানের ভিতরে ঘুরিয়া এর-ওর-তার সহিত গল্প করিয়া সময় কাটাইয়া দেয়। তবে তাসখেলার ফাকে নায়েব-মশায়ের ঘরে গল্পগুজবও মন্দ চলে না, সে-সময়টা মণীশের মন্দ লাগে না। মজলিসে রসিক লোকের অভাব নাই, তাহাদের গালগল্প গুনিয়া সময় ७ॉलझे कांdः । চারি দিকে পূজাবাড়ীর আমোদ-প্রমোদ হৈচৈ। সার বাড়ীর নরনারী বালক-বালিকার মনে কোথাও দুঃখের লেশ আছে বলিয়া মনে হয় না। এত আনন্দ, এত হাসি, এত কোলাহলের মধ্যে বাড়ীর ভিতরে একটি অতি-ক্ষুদ্র নিভৃত কক্ষে ছিন্ন শয্যার উপর মলিন বালিশে মুখ লুকাইয়া একটি সদ্যবিধবা কান্নার আবেগে ফুলিয়া ফুলিয়া উঠতেছে। তিন মাস আগে স্বামী মারা গিয়াছেন, বাইশ বংসরের বধূ ও দুই বৎসরের একটি শিশু রাখিয়া । বারান্দার এক কোণে একথানি চেয়ারে একটি অতিবুদ্ধ ইটুতে মুখ গুজিয়া বসিয়া আছেন। বয়স ছিয়াশি। মৃত্যুর প্রতীক্ষা তিনি করিতেছেন সত্য, কিন্তু বাহির হইতে লোকে যেমন করিয়া ভাবে তেমন করিয়া নহে। ছিয়াশি বৎসর ধরিয়া এই পৃথিবীর সমস্ত সম্ভোগ্য আকণ্ঠ ভোগ করিয়া জীবনসায়াহ্নে তিনি মৃত্যুর প্রতীক্ষা করিতে করিতে ভগবানের নাম করেন না—যে-পৃথিবীকে আর কয়টি দিন বাদে চিরদিনের জন্ত ছাড়িয়া যাইতে হইবে, তাহারই কথা ভাবেন । জরাজীর্ণ বৃদ্ধ মহিমারঞ্জনের সহিত যুবক মণীশের এক অদ্ভূত বন্ধুত্ব গড়িয়া উঠিয়াছিল। মহিমারঞ্জন মাত্র বছরখানেক এ-বাড়ীতে আসিয়া স্থায়ী আসন পাতিয়াছিলেন। ছেযটি বছর আগে, যখন তাহার বয়স মাত্র কুড়ি, সেই সময় তিনি এই গ্রাম ছাড়িয়াছিলেন, জীবনের পশ্চিমসীমান্তে পৌঁছিয়া এ-গ্রামে ফিরিয়াছিলেন। মহিমারঞ্জন নামে এ-বাড়ীতে যে কোন দিন কেহ ছিল, কিছু দিন আগে বাড়ীর নেহাৎ বয়োবৃদ্ধগণ ছাড়া সে-খবর জীকার করিতে হয়, রূপবান না হইলেও হই । লয়টি আর্নােতি৷ এবাটতে তালি না ছিল আলখেলা দেখিয়া লোকে কি স্বখ পায় তাহলে