পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ) আত্মদর্শন bله م অন্য-এক ব্যক্তিত্বের চাপে তাহার সঙ্গে মিশিয়া যাইবার মায়িক ভাব । ৪ । মৃত্যু—নিখিলের ব্যষ্টি ও সমষ্টি সত্তার সঙ্গে একাত্ম হইয়া যাইবার স্বম্পষ্ট পূর্ণ চেতনা ; শুধু সঙ্কীর্ণ ব্যক্তিত্বের দাসত্ব-শৃঙ্খল খসিয়া যাওয়া নয়, তাহার সমস্ত অলীক অহম্-বোধ হইতে মুক্তি ; নির্বিকল্প অহম্—অসীম মোক্ষ-লোকে তাহার অনন্ত উন্মেষ-লীলা । ভাব সমাধির অহম ও মৃত্যুঞ্জয়ী অহম্ত্রর মধ্যে একটা ঐক্য আছে যদিও পার্থক্যও যথেষ্ট—প্রথমটি শূন্য, দ্বিতীয়টি পরিপূর্ণ—কারণ জীবন্ত যোগসমাধি মৃত্যু, কিন্তু শেষ অবস্থার মৃত্যুই অসীম জীবন। যাহা হউক ইহারা যেন মোক্ষের দুটি ধাপ । - স্বাতন্ত্র্য জীবাত্মা সম্বন্ধে সামান্য যাহা-কিছু আমরা জানিতে পারিয়াছি তাহ বিধিবদ্ধ করিয়া লওয়া যাক ; যাহা আপেক্ষিক ও পরিবর্তনশীল তাহ অপেক্ষা নিরপেক্ষ সত্তাকে ভূমাকে আমারা যেন বেশী বুঝি ! যাহা হউক জীবাত্মা সম্বন্ধে অনুসন্ধান করিয়া যে নিয়ম আবিষ্কার করা যায় তাহা সকল মানুষের পক্ষেই অত্যাবশ্যক, কারণ যদি আমরা বঁাচার্টাকে সম্পূর্ণরূপে অদৃষ্টের খেয়াল বলিয়া হাল ছাড়িয়া না দিই তাহা হইলে বাচার মত বাচার একট। আদর্শ ও পদ্ধতি দাড় করান দরকার । ( নিম্নে দ্রষ্টব্য ) প্রথমেই দেখি স্বাধীনত বা স্বাতন্ত্র্যের সমস্য আমাদের সম্মুখে । কেমন করিয়া বাচা উচিত এটা ভাবিবার পূৰ্ব্বেই জানা দরকার বাচা সম্বন্ধে আমাদের কোন আত্মকর্তৃত্ব বা স্বাতন্ত্র্য আছে কি না । সত্যই কি আমরা স্বাধীন ? এই ভীষণ প্রশ্নটি আমাদের যুগের সমস্ত যুবকদের মত আমাকেও অনেক দিন উদভ্ৰান্ত করিয়াছে— কিন্তু এখন যেন সে কথা ভাবিতে হাসি পায়। এমনভাবে ঐ প্রশ্নটি করা হয় যে, তা’র জবাব দেওয়া ও নাদেওয়া দুইই অসম্ভব হয়। বস্তুতঃ প্রশ্নটি ঐভাবে নাই । স্বাধীনতা, প্রয়োজন ইত্যাদি শূন্তগর্ত কথা মাত্র—কোন বাস্তবের সঙ্গে তাদের যোগ নাই । ভাবা যাক, ভূম যেন এক সঙ্গীত শিল্পী, তিনি নিজের কাছে নিজে একটি রাগিণীর তান লইয়া আলী করিতেছেন ; সেই তানের প্রত্যেক স্বরটি পরমাত্মার এ একটি চেতনা ; অন্য দিকে রম্য রলাও এমনি কতকগু চেতনার সমষ্টি—একটি স্বর-সন্ধি (accord) যাহা ভূম তানের সম্বাদীরূপে তাহার অনুবৰ্ত্তন করিতেছে। ভূমা শি। সেই স্বরসন্ধিটি তার আলাপে জুড়িয়া তাকে পরিস্ফুট ; করিতেও পারেন ; তবু আমি রল আমার তানটি আলা করিয়া যাইতেছি ; এ ক্ষেত্রে তোমরা বলিবে কি ( আমার ঐ আলাপের ঐ স্বরসন্ধিটার স্বাতন্ত্র্য নাই ? · আলাপ যে আমারই অনুপরমাণুতে গড়া ; আমি । নিজেকে ঐ আলাপের ভিতর দিয়া এক অভিনব চেতন জাগাইয়াছি ; উহার অস্তিত্ব ও প্রকাশ যে আমার উপর নির্ভর করিতেছে ; এই আমিই ত মুক্ত ; আমার কো খণ্ড ভগ্নাংশ মুক্ত নয়—কারণ মুক্তি কি এ বিষয়ে তা কোন চেতনাই নাই—ইহা শুধু আছে । তেমা আপেক্ষিক আমির মধ্যে স্বাতন্ত্র্যের কোন অর্থ নাই— নিরপেক্ষ আমির মধ্যেই তা’র আসল তাৎপৰ্য্য। কোন মানুষ নিজেকে স্বাধীন মনে করে, কারণ প্রবৃত্তি তাড়নাকে নিজের ইচ্ছার বলে ঠেকাইয়। যাহা যুক্তি-সঙ্গ তাহাই সে করে । অপর একজন নিজেকে নিয়তি-চালি ভাবে কারণ সে প্রবৃত্তির হুকুমকে ঘাড় পাতিয়া লয় উভয়ের কেহই না স্বাধীন না পরাধীন। ইহাদে মধ্যে একজন যুক্তিপ্রধান আর-একজন প্রবৃত্তি অথ কামনাপ্রধান, ইহা শুধু কথার মারপোচ ; একটি আপেক্ষি সত্তা কেমন করিয়া স্বাধীন হইতে পারে ? ইহা ত অপ একটি মহত্তর সত্তার খণ্ড মাত্র, খণ্ড পূর্ণ হইতে না পারিে ত মুক্ত হইতে পারে না। অন্য পক্ষে প্রাচীন নিয়তি বাদীদের নিৰ্ব্বেদ-পূৰ্ণ ঔদ্ধত্যের অর্থ কি ? এই ে আমাদের সত্তা নিজেকে নিজে চালাইতে পারে কে ইহা:ে সম্পূর্ণ নিয়তির দাস বলিবে ? জুলিয়েতের প্রতি প্রেমে যে দাস্যভাব রোমিও দেখাইল তাহার মধ্যেই ত ে প্রচুর মুক্তির আস্বাদ পাইয়াছে। নির্বিকল্প সত্তা ব্যতীত পূর্ণ মুক্তি আর কাহার নাই । তিনিই ভূম এবং নিয়ম তার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে ছন্দ স্বাধীনতা ও নিয়তি র্তার দুই পত্নী ।