পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাগপঞ্চমী নাগপুজা বা সাপ-পূজা অনাৰ্য্য দেবতার পূজা কি না সে-সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন না তুলিয়াও বলা যাইতে পারে, বাংলা-দেশে বামুকী-ভগিনী মনসা দেবীর পূজা বহুদিন হইতেই চলিত আছে। পূর্ববঙ্গের ঢাকা প্রভৃতি জেলার কোনো কোনো স্থানে এখনও শ্রাবণ-সংক্রান্তিতে মনসাদেবীর পূজা হয় । বোম্বাই সহরে প্রভু নামক এক শ্রেণীর স্বশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠাপন্ন হিন্দু আছে ; তাহাদের মধ্যেও নাগপূজা প্রচলিত আছে। প্রভুদিগের জাতীয় ইতিহাস এই –কথিত আছে, প্রভুগণ পূৰ্ব্বকালে উদয়পুর ও মারবারে বাস করিত। মুসলমান বিজেতাগণের আক্রমণের ফলে তাহার রাজপুতনা ছাড়িয়া কাথিবীরে প্রভাস পত্তনে বস-বাস করিতে চেষ্টা করে । কিন্তু বিজেতাগণ সেখানেও তাহাদিগকে ধাওয়া করে । ১০২৪ খৃঃ-অব্দে গজনীর মামুদ কাৰ্থিবারে প্রবেশ করিয়া সোমনাথের মন্দির ধ্বংস করেন । তখন সোমনাথের মন্দির-রক্ষক প্রভুগণের রাজা ছিলেন ভীমদেব। তিনি রঘুপতি রামচন্দ্রের পুত্ৰ কুশের বংশধর বলিয়া পরিচিত । ভীমদেব গুজরাটের আনহিনওয়াড পত্তনে পলায়ন করেন । কিন্তু শেষে গুজরাট ও মুসলমানদের হাতে আসে। ১২৯৩ খৃঃ-অকে প্রভুগণ বোম্বাই ও মহিম দ্বীপে বাস স্থাপন করে । স্বৰ্য্যবংশধর প্রভুগণ যোদ্ধার জাতি বলিয়া পরিচিত ছিল। রাজা ভীমদেব বহু রাজ্য জয় করিয়া তুহার অধীন সেনাপতিদিগকে এক-একটি রাজ্যের ‘প্ৰভু করিয়া দেন। রাজা ভীমদেবের বংশ প্রায় একশত বৎসর রাজত্ব করেন। তাহার বংশের পতনের সঙ্গে সঙ্গে প্রভুগণ শক্তিহীন হইয়া পড়িলেও রাজা ভীমদেব ও তাহার বংশধরগণ প্রদত্ত উপাধি তাহারা এখনও পরিত্যাগ করে নাই । এখনও প্রভুগণের মধ্যে ধরাধর, ধুরন্ধর, গোরক্ষকর, জয়কর, কীৰ্ত্তিকর, কোঠাকর, মানকর, নায়ক, রাণে ও রাও প্রভৃতি উপাধি আছে । এইসমস্ত উপাধি প্রাচীন কালের যুদ্ধক্ষেত্রের অস্ত্রশস্ত্রের ঝনঝননিই স্মরণ করাইয়া দেয়। কিন্তু প্রভুগণের যুদ্ধ-ব্যবসা আর নাই । তাহারা বহু পূৰ্ব্বেই তলোয়ার পরিত্যাগ করিয়া গৃহস্থ সাজিয়াছে। শিবাজী ও পেশবাদের রাজত্বকালে প্রভূগণ র্তাহীদের অধীনে সামান্য চাকুরী করিত । পর্তুগীজগণ বোম্বাই আক্রমণ করিলে, প্রভুগণ বোম্বাই ত্যাগ করিয়া যায় । ব্রিটিশ রাজত্বে তাহারা পুনরায় পূৰ্ব্ব-পরিচিত বোম্বাই দ্বীপে ফিরিয়া আসিয়াছে ৷ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে প্রভূগণ সরকারী চাকুরীতে একাধিপত্য স্থাপন করিয়াছিল। তরবারী দ্বারা প্রভূগণ যশ উপার্জন করিয়াছিল ; কিন্তু লেখনীর বলে তাহার বোম্বাইএ অদ্বিতীয় ধনী ছিল । এখন এই অবস্থাও সত্যযুগের অতীত কাহিনীতে পরিণত হইয়া পড়িয়াছে । কিন্তু বর্তমান অবস্থাতেও প্রভুগণ অন্য বিভাগে বিশেষ প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছে। প্রভুগণের গৃহে এখন সোনারূপার ঝনঝনানি শোনা না যাইলেও তাহারা এখন লোকের যথেষ্ট প্রীতি ও সম্মানের পাত্র ; এবং গভর্ণমেণ্টের নিকট খুব বিশ্বস্ত । প্রভৃগণের সংখ্যা যদিও বৰ্ত্তমানে ৪১০০এর বড় বেশী নয়, তথাপি তাহাদের মধ্যে এখন বহু জজ, ব্যারিষ্টার, উকীল, ডাক্তার, প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, চিত্রকর ও ভাস্কর অাছে ৷ নাগপূজার ইতিহাস সম্বন্ধে প্রভুগণের মধ্যে এই গল্পটি প্রচলিত আছে – এক কন্যা । তার মা নেই, বাপ নেই, শ্বশুর-বাড়ীতে থাকে। পূজা-পালিতে যে একটু আমোদ-আহ্লাদ