পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা] ভারতের শিক্ষার আদর্শ ভারতে জগত-সভ্যতার যে দুইটি বিরাট স্রোত তাহ। মিলিয়া এক হইয়াড়ে । এইজন্য ভারতবর্ষ পৃথিবীর সকল দেশ অপেক্ষ ভীবষ্যৎ পৃথিবীর আশ স্থল। কারণ,ভারতেই শারীরিক ও মানসিক উ3য় দিক দিয়া সকল জাতীয় মানবের বিভিন্নতা ও চরিত্র মিলিয়া মিশিয়া এক নূতন সাৰ্ব্বভৌমিক মানব-চরিত্রে স্বষ্টি হইতেছে ৷ ‘ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলনভূমি ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির এই কথা সৰ্ব্বদা মনে রখা প্রয়োজন । ভারতে যে শিক্ষার আদর্শ অতি প্রচীনকাল হইতে বর্তমান ছিল তাঙ্গর সহিত আধুনিকতম যে আদর্শ, তাহার সাদৃশু রহিয়াছে।. মানুষকে সমাজের অঙ্গ রূপে দেখা ও সেই ভাবে তাহাকে শিক্ষার সাহায্যে গড়িয়া তোলাই ভারতের শিক্ষাপদ্ধতির উদ্দেশ্য ছিল। ইহার ফলে শিক্ষার্থী বিদ্যার পথে বহুদূর অগ্রসর হইলেও কখন সমাজের অঙ্গ-রূপে জীবন নিৰ্ব্বা করিবার পক্ষে অযোগ্য হইয়। পড়িত না । সমাজের মর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে তাহার স্থান সৰ্ব্বদা নির্দিষ্ট থাকত ও সে সেই স্থান যোগ্যতার সহিত পূর্ণ করিত । আমাদের প্রাচীন পদ্ধতি অনুসারে কার্য্য করিয়া আমাদের দেশে জ্ঞান যতটা বাড়িয়াছিল তাহাতে আমাদিগের গৌরব ব্যতীত লজ। বোধ করিবার কিছু নাই। আমাদের প্রাচীন গণিত, জ্যোতিবিদ্য, অস্থিবিজ্ঞান, ন্যায়; রসায়ী, ব্যাকরণ প্রভৃতি তৎকালীন ও তাহার বহুপরের পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের বিষ্ঠার তুলনায় মল্প অগ্রসর হইয়াছিল একথা ত বলা চলেই না, বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তাহ পাশ্চাত্যকে ছাড়াইয়া গিয়াছিল । বৃটিশ রাজত্বের ঠিব পূৰ্ব্বে অথবা তাঙ্গর প্রথম দিকে ভারতে শিক্ষার যতটা প্রসার ছিল তাহার তুলনায় বৰ্ত্তমানে আমাদিগের অবস্থা অতিশয় শোচনীয়। শতবৎসরের অধিককাল অবনতির পথে চলিয়াও ১৮১৫ খৃঃ অব্দে আমাদের দেশে শিক্ষা যতটা ছিল, আজ তাহা কোথায় ? পূৰ্ব্বে আমাদিগের দেশে প্রতি গ্রামে একটি পাঠশালা ছিল, এখন তাহা কোথায় ? আমাদের ভৱিষ্যং শিক্ষা বিস্তারের কার্য্যে আমাদিগকে নিজেদের অতীতক সহিত সম্বন্ধ অটুট রাখিতে হইবে এবং তৎসঙ্গে জগতের সহিত উল্লুটতর পথে সমানে অগ্রসর হইয়া চলিতে হইবে । আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে এক সময়ু আমরাই ইংলণ্ডকে জনসাধারণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করার আদর্শ দিয়ছিলাম ; কিন্তু আমাদের আরও মনে বিবিধ প্রসঙ্গ - স্যার ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের অভিভাষণের মূল্য . jo e রাখিতে হইবে সে’ জনসাধারণ শুধু “দ্বিজ” জনসাধারণ নহে । ভবিষ্যত ভারতে সকল মানবই “दिअ”, বে। একবার তাহার জন্ম হুইবে শী ধারিকভাবে ও একবার আধ্যাত্মিক ভাবে । আধুনিক জগতের সর্বগ্রাসী ব্যক্তিত্বমূলক স্বার্থপরতা ঔষধ ও আমাদের প্রাচীন আদর্শের মধ্যে রহিয়াছে । ধেমন একদিকে আমাদের দেশে মোক্ষ ও আত্মবিদ্যা লইয়া ব্যক্তি সতত ব্যস্ত ছিলেন তেমনি অপরদিকে তিনি সৰ্ব্বযুক্তি, লোকস্থিতি, লোক সংগ্রঃ, মহাজন । প্রত্যয়, মহাজন-সম্প্রদায় প্রভৃতি বিষয়ে ও সতন্ত আত্মনিয়োগ করিতেন । এক সময় ভারতে ব্যক্তি, সংঘের কল্যাণের জন্য এতদূর আত্মবলিদানে চিরপ্রস্তুত থাকিতেন যে কালে এই অবস্থার বিরুদ্ধে একটা জাগরণের স্বচনা হয় । এই সংঘ-বিরুদ্ধতা ও ব্যক্তিসৰ্ব্বভাবের গতি এখন বহুদূর পৌছিয়াছে। এখন.আমাদের পুনৰ্ব্বার সংঘের কল্যাণ জাতির সকল ব্যক্তির নিকট আদর্শরূপে উপস্থিত করিতে হইবে । আমাদের জাতীয়তা আমাদের জাতীয়তা রাষ্ট্রীয় নহে ; উঠা সভ্যতামূলক । এই জাতীয়তার ছাপ আমরা আমাদিগের ইতিহাসে শত শত রাজদরবারে না লাগাইয়। থাকিলেও ইহার ছাপ ভারতে ও যেখালে ভারত-সভ্যতা গিয়াছে সেখানকার সকল জাতির ভাষায়, রীতিনীতিতে, আদর্শে, ব্যরহারে, ধৰ্ম্মে, দর্শনে, বিশ্বাসে, এক কথায় তাহদের জীবনের প্রতি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর ভারতবর্ষ চাগাইয়া দিয়াছে । আমাদের সভ্যতার ভিতর যাহা কিছু আমাদিগকে জগতের বর্তমান অশাস্তি ও ভেদাভেদ দূর করিতে সক্ষম করিবে তাহ লইয়া আমাদিগকে আবার জগতের সম্মুখে দাড়াইতে হইবে । অহিংসা ও মৈত্রীর আদর্শ ও ব্যক্তির পক্ষে অধিকার অপেক্ষ ধৰ্ম্ম বা কৰ্ত্তব্যের উপর অধিক নির্ভরশীল হওয়া ; এই সকল আদর্শ আমরা নিজেদের বলিয়া জগতের সম্মুখে দাড়াইতে পারি, এই সকল অাদর্শের প্রচার আমাদের এবং জগতের পক্ষে মঙ্গলকর হুইবে । - স্তার ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের অভিভাষণের মূল্য আমরা উপরে শুধু সংক্ষেপে স্তার ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের অভিভাষণের কয়েকটি কথা নিজেদের ভাষায় পাঠকদিগের