পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] রামানন্দবাবু এডমন্‌ষ্টোন রোডের একটি বাংলায় উঠিয়া গেলেন। পরে লায়েল রোড ও কুপার রোডের দুটি বাড়ীতে বাস করিবার পর সিটিরোডের উকীল দেশী খৃষ্টিয়ান সিমিয়ন সাহেবের বাড়ী উঠিয়া যান। এলাহাবাদে তিনি আর একবার বাস পরিবর্তন করেন। তখন গিয়াছিলেন মেঘরাজ লুনিয়ার বাংলায় । উহাতে এখন ক্রস্থেয়েট গালর্স কলেজ অবস্থিত। শেষবারে শ্ৰীযুক্ত ফুলমণি দাস নাম্নী এক শিক্ষিত ধাত্রীর বাড়ী ভাড়া করিয়া প্রবাসের শেষ কয়েক বৎসর বাস করেন । এই বাড়ী ইতিহাসপ্রসিদ্ধ গ্র্যাণ্ড ট্রাঙ্ক রোডের উপর অবস্থিত এবং এই বাড়ীতেই মডার্ণ রিভিউ পত্রিকার জন্ম হয় । অতঃপর ১৯০৮ অবোর মার্চ মাসে “প্রবাসী”কে আট বৎসরের করিয়া রামানন্দবাবু এলাহাবাদ বাঙলার উৎকর্ষ ও প্রবাসী” ৯৭ ত্যাগ করিয়া কলিকাতায় প্রত্যাগমন করেন। আজ “প্রবাসী’র জন্মকথা মাত্র বলিলাম। “প্রবাসী” সম্বন্ধে অনেক কথাই বাকী রহিল। তাহার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের কথা, “প্রবাসী’ বাঙ্গালীকে কি দিয়াছে, এবং জগতে কি প্রচার করিয়াছে, তাহার কথা ক্রমে ক্রমে বলিব। আজ “প্রবাসীর” পঞ্চবিংশতি বর্ষ পূর্ণ হওয়ার আনন্দের দিনে তাহার এবং ধন্যবাদার্হ শ্ৰদ্ধাস্পদ সম্পাদক মহাশয়ের আরও গৌরবোজ্জল দীর্ঘ জীবন কামনা করিয়া আমার বক্তব্য শেষ করিলাম । ইতি । ১৫৮ কর্ণেলগঞ্জ, এলাহাবাদ । ১৩ই মার্চ, ১৯২৬ । বাঙলার উৎকর্ষ ও ‘প্রবাসী শ্ৰী সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ১৩৩৩ সাল প’ড়লে, ‘প্রবাসী’ তার পচিশ বছর পূর্ণ ক’রলে, এইটি তার প্রথম জুবিলী’ বা বৈজয়ন্তীর বছর। এই পচিশ বছরের মধ্যে বাঙালী তার আধুনিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায়ে এসে পৌছেচে, বাঙালীর পক্ষে নানা কারণে এই শতক-পাদিক চিরস্মরণীয় হ’য়ে থাকবে । নোতুন আশা আর আশঙ্কা, নোতুন কতকারিল আর বাধাবিপত্তি,নোতুন সমস্ত আর চিন্তা, . নোতুন, আকাজক্ষার সঙ্গে-সঙ্গে অবস্থার প্রতিকুলতা—এইসবের মধ্যে দিয়ে বাঙালী জাত চ’লেছে ;–রাজনৈতিক, সামাজিক, মানসিক, আর্থিক, আধ্যাত্মিক, সব দিকে উন্নতি লাভ করবার জন্য চেষ্টা ক’বৃছে। জীবনের নানা দিকে বাঙালী গত পচিশ বছরের মধ্যে যতটুকু কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছে, তার সব চেয়ে পূর্ণ পরিচয় এক প্রবাসীই দিতে পারে ; আর অনেক বিষয়ে বাঙালী যে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারেনি বা পাবুছে না, বাঙালীর চোখের সামনে প্রবাসী’ סאצ তাও ধ’রে দিয়েছে । গত পচিশ বছর ধ’রে উৎকর্ষকামী বাঙালীর মানসিক চেষ্টা, চিন্তাশীল বাঙালীর মনন, কল্পনাশীল বাঙালীর সত্য-শিব-মুন্দরের দর্শন, কবি আর শিল্পী বাঙালীর স্বষ্টি, কৰ্ম্মী বাঙালীর সাধনা আর সিদ্ধি,—এক কথায়, বাঙালীর ‘ক্যলচর’ বা সৰ্ব্বাঙ্গীন উৎকর্ষের পূর্ণ প্রতিচ্ছায়া প্রতিফলিত হ’য়ে আছে এক এই ‘প্রবাসীর দপণে । প্রত্যেক যুগকেই তার আগেকার যুগের চেয়ে আশ্চৰ্য্যতর ঠেকে—এ কথা বিশ্বমানবের অর্থাৎ সমষ্টিগতভাবে পৃথিবীর সমগ্র মানব-সমাজের বিষয়ে ভেবে বললে খাটে বটে, কিন্তু কোনও বিশেষ জাতির সম্বন্ধে এ কথা সব সময়ে না খাটুতেও পারে। ঢেউয়ের ভঙ্গীতে, ‘পতন-অত্যুদয়-বন্ধুর পস্থা ধ’রে সমষ্টিময় মানব-সমাজের গতি ; আর এই গতি উন্নতির দিকে ব’লেই আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু এই গ্ৰতন আর অভু্যদয় ব্যাপারটা বিশেষ-বিশেষ জাতির ব্যষ্টির উপর দিয়েই ঘ’টে যায়। সমস্ত মানব-সমাজ বা স্বদুর