পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবনদোলা সংখ্যা হয় ১.৪. সমস্ত বৎসরে ১৮৩২ অর্থাৎ প্রতিসংখ্যায় ১৫২ পৃষ্ঠারও ১৩১৮ হইতে ১৩৩২ সাল পর্য্যন্ত প্রবাসীতে আরও বহু নুতন লেখকঅধিক। প্রবাসীর মূল্য কিন্তু সেই অনুপাতে বাড়ে নাই। প্রথম বৎসরে লেখিকা ও বহু নবীন শিল্পী দেখা দিয়াছেন। আমরা উহাদের পরিচয় প্রবাসীর মূল্য ছিল বাৎসরিক ২০, ১৩৩২ সালে ৬-, প্রথম বৎসরে প্রতি- পরে দিতে চেষ্টা করিব । আপাতত সকলকে আমাদের কৃতজ্ঞতা ১ম সংখ্য j `ම সংখ্যার মূল্য ছিল V•, এখন।• আট আন মাত্র। জানাইতেছি । 회 জীবনদোলা ঐ শাস্তা দেবী বাহির বাড়ীতে বড়কর্তার বৈঠক বসিয়াছিল । দেনাদার, পাওনাদার, উমেদার, মোসাহেব, বন্ধু, পোষ্য ইত্যাদির ভীড়ে কৰ্ত্ত চাপা পড়িবার যোগাড় ; কিন্তু হাস্যমুখে সকলেরই বক্তব্য তিনি শুনিয়া যাইতেছেন। র্তাহার স্মিতহাস্ত্যের অন্তরাল হইতে আপন-আপন ভাগ্যলিপি খুজিয়া বাহির করা কাহারও পক্ষে বড় সম্ভব নয়। নানা মানুষ নানা আশা লইয়া তাহার কাছে আসিত, মনের কথা সব নিবেদন করিয়া যাইত ; কিন্তু শ্রোতার মনে যে কি ছাপ পড়িল তাহা জানিতে পারিত না । তাই দায় থাকিলে ভাগ্যপরীক্ষার জন্য বারে বারেই আসা যাওয়া চলিত। এমনি করিয়া বৈঠকে ভীড়ের কম্‌তি একদিনের জন্যও ছিল না । মানুষগুলি ছিল নানারকম ; শাস্ত্রবিধি লইতে বড় কৰ্ত্তার আসরে ভিন্ন বন্ধুবর্গের গতি ছিল না ; আবার শাস্ত্রের পেষণ এড়াইতেও তাহাকেই সহায় বলিয়া ডাকিতে হইত। অর্থ যাহার না থাকিত সে ভাবিত বড়বাবুর মনে দয়ার সঞ্চার করিলে হয়ত কিছু মিলিতে পারে ; যাহার থাকিত সে মনে করিত ধার দিলে বড়বাবুর কাছেই একটু উচু হারে স্বদ যোগাড় করিতে পারিব। নানা জনের এমনি নানা মনোবাঞ্ছা সকল দিনের মত আজও বাহির বাড়ীর হাওয়া ভরপুর করিয়া রাখিয়াছিল। ভিতর বাড়ীতে কৰ্ত্তার জননী “বড় ঠাকুরুণ” একা তিনটি রন্ধনশালা তদারক করিয়া বেড়াইতেছেন ; অঁাষ হেঁশেল, নিরামিষ হেঁশেল ও তোলা উনানের দুধ মিষ্টির ঘর, কোথায়ও যেন বউ কী দাসী চাকরে ফাকি দিয়া St কাজ না নষ্ট করে এবং অজ্ঞতার দোষে খাদ্যকে অখাদ্যে পরিণত না করিয়া বসে। এঘর ওঘর হাসি মস্কর করিয়া বেড়াইবার লোভে তাহারা অঁাষ নিরামিষ ছোওয়া নাতাও করিয়া ফেলিতে পারে, সেটাও একটা মস্ত ভয়। স্বতরাং সকল দিকে দৃষ্টি প্রখর রাখা দরকার। এই রান্নাঘরই ছিল তাহার সংসারের সবচেয়ে বড় বন্ধন । সংসারে পাচজন কি লইয়া কেমন করিয়া দিন কাটাইতেছে তাহা ভাবিবার তার আর বয়স ছিল না, মনও যাইত না, তাই সেদিক হইতে তিনি অবসর লইয়াছিলেন। উঠানে পেয়ার ও পেপেতলায় শিশুরা জটলা করিতে ছিল। উচু নীচু জমির উপর রাস্তার ধূলা দিয়া তিন ইঞ্চি চওড়া চার হাত লম্বা প্রাচীর তুলিয়া তাহারই ভিতর দূৰ্বাঘাস,নিমপাত ও ঝুম্কোজবা কাঠির সাহায্যে বসাইয়া গৌরী, ময়না, শৈল, টিনি, ট্যাব, হাবু পাচুর বিশাল স্বরম্য উদ্যান হইয়াছিল ; বাগানের মাঝখানে ছয় খানা ইটের ও বড়-বড় খবরের কাগজের আকাশম্পর্শী স্বর্ণপুরী গড়িয়া উঠিয়াছিল; পাশ দিয়া বালতির জলের স্বর্গমন্দাকিনী দেশ দেশান্ত ছাড়াইয়া বহিয়া চলিয়াছিল। শিল্পী গৌরী মুগ্ধ নয়নে আপনার স্বষ্টি দেখিতেছিল ও নূতন-নূতন অলঙ্কারে তাহাকে ভূষিত করিয়া তুলিতেছিল। ছেড়া চিঠির কাগজের নৌকা তাহার মন্দাকিনী বাহিয়া ময়ুরপন্থীর মত সাত সমুদ্র তের নদীর পারেই বুঝি-বা ভাসিয়া যায়, ভাবিয়া গৌরীর অন্তর আনন্দে বিস্ময়ে দুলিয়া উঠি৬ে ছিল। নৌকার অধিষ্ঠাত্রী মুড়ি পুতুলগুলি যেন জীবন্ত হইয়া হাসিয়া গৌরীর মুখের দিকে চাহিতেছিল। তাহাদের