পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৮ মাসের একটি ছেলে । এই প্রথম পৌত্রের অন্নপ্রাশনের সময় সকলেরই ইচ্ছা মেজ বৌটিকে রিাগন, করাইয়। লইয়া আসা হয় । তাহার বয়স তের বছর পার হুইয়া গিয়াছে । গৃহিণী বলেন আর বাপের বাড়ী ফেলিয়া রাখা চলে না। কিন্তু বেী আসিয়া থাকিবে কোথায় ? ছেলে ত এখনও বাহিরের ঘরে যত পোড়ে ছেলেদের সঙ্গেই ঢাল বিছানায় গড়াইয়া কোনো-প্রকারে রাত কাটায় । গত বৎসর তাহারই জন্য যে নুতন ঘরখানা উঠিয়াছিল, তাঙ্গতে মেজ বোন ভূবনেশ্বরীর মেয়ে-জামাই আজ পীচ মাস হুইল আসিয়া রহিয়াছে । জামাইটির ডাক্তারখানায় একটা কম্পাউণ্ডরের কাজ হইবার আশা আছে ; সুতরাং সে যে শীঘ্র আর কোথাও যাইবে তাঙ্গার সস্তাবনা নাই । হরিকেশব ভাবনায় পড়িয়াছেন । ভাগ্নে-জামাইকে অন্যত্র ব্যবস্থা করিতে ত আর বল চলে না, এদিকে পুত্রবধুকেও আর না আনিলে নয় । এই সংসার-সমুদ্রের মাঝে কর্ণধার হইয়া তাহাকে হাজার সমস্যার মীমাংস-সাধনে দিবারাত্র মাথা ঘামাইতে হয় । তাহার উপর আছে তাহার আপিয আদালত, উমেদার, দেনাদার, পাওনাদার, তাহার যশপ্যাতি বিদ্যাবুদ্ধির সৌরভে আকৃষ্ট মধুকর বৃন্দ । কেহ চায় দান, কেহ চায় মান, কেহ চায় সুবিচার, কেহব পরামর্শ। কেহবা কিছুই না চাহিয়। বড়-রকম একটা-কিছুর আশায় তাহার আশে-পাশে অহরহ ঘুরিয় ফেরে। এইসকলের দাবীদাওয়া মিটাইয়া এড়াইয়া জীবনে অবকাশ খুজিয়। মেলা ভার। ঘরে বাহিরে স্থানে কালে সৰ্ব্বত্ৰ যেন ঠাসাঠাসি টানাটানি পড়িয়া গিয়াছে । প। মেলিবার যেমন স্থান নাই, দুদণ্ড বিশ্রামের যেমন অবকাশ নাই, মনটা মেলিয়। ধরিবারও তেমনই ঠাই নাই । তবু জীবনের রসপাত্র একেবারে শুকাইয়া যায় নাই। এই অস্তুর বাহিরের ভীড়ের ভিতর একটি কচিমুখ ঘিরিয়া এখনও একটু আলো-বাতাস খেলা করে, একটি কচি মুখ -প্ররণ করিয়া মন অকস্মাং মাধুর্য্যে ভরিয় উঠে । ভীড়ের ভিতর সে মুখখন হারাইয়া যায় না ; অন্তরবাহিরের সমস্ত কলরোলের উপর গৌরীর সে শিশুমুখ পদ্মের মতন ফুটিয়া থাকে । を|マー প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ { ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড 歇 来 舉 来 বেল দ্বিপ্রহরে জামাই আসিবার কথা । হরিমাধবের গাড়ীতে হরিকেশবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শিবপ্রসাদ ছোট কাকরি ছোট মেয়ে টিনি ও রামটহল দরোয়ানকে লইয়া ষ্টেশনে ভগ্নীপতিকে আনিতে গিয়াছে। বাড়ীতে সকলকে তাড়। দিয়া গিয়াছে যেন জামাই আসিয়া পড়িবার আগে তাহার অভ্যর্থনার বন্দোবস্ত সব পুরাপুরি হইয় থাকে। শেষ মুহূৰ্ত্তে “এটা কইরে" “ওটা কইরে” যে করিবে তাহাকে সে দেরিয়া লইবে । কাজেই সবাই সন্ত্রস্ত। তরঙ্গিণী মেয়েকে ঘসামাজ ও উপদেশ দেওয়ার পাল। শেষ করিয়৷ তাইণকে আপন পুত্রবধু লাবণ্যলতার হাতে সপিয়া দিয়াছেন প্রসাধন করিয়া দিবার জন্য। সন্ধ্যার আগে জামাইএর সহিত তাঙ্গার সাক্ষাৎ ন হইবারই সম্ভাবনা ; কিন্তু কি জানি মেয়ের ধ৷ বুদ্ধি । কখন হয়ত হুট করিয়া বাহির বাড়ীতে এই বেশেই গিয়া সামনে হাজির হইবে । তা ছাড়া সঙ্গে লোক জনও ত দুই-এক জন থাকিতে পারে। তাঙ্গাদের বাড়ীর বেীকে তাহারা যদি যেমন-তেমন বেশে ধূলাকাদমাখ অবস্থায় দেখিয়া যায় তাহা হইলে বাড়ী গিয়া কি বলিবে ? সেও আবার যেমন-তেমন বাড়ী নয়, সেকেলে জমিদারের বাড়ী। সুতরাং শাশুড়ী লাবণ্যলতাকে আকুরোধ করিলেন মেয়েকে যেন সমস্ত গহনাগাটি পরাইয়া বেশ আধুনিক রুচিমত চুল ও শাড়ীর বাঙ্গর করিয়া নিখুৎভাবে সাজাইয় দেওয়া হয়। লাবণ্য বার বৎসর বয়স পৰ্য্যন্ত নব্য বালিকাবিদ্যালয়ে পড়িয়াছিল ; সে জুতা মোজা পরিয়া সাবানে চুল ঘসিয়া মাথায় রঙীন ফিতা বাধিয়া হাল ফ্যাশানে সাজসজ্জ করিয়া প্রত্যহ গাড়ী চড়িয়া ইস্কুল যাইত । সুতরাং সম্বন্ধে আপনার জ্ঞানের উপর তাহার একটা শ্রদ্ধা ছিল । প্রসাধন-শাস্ত্রে তাহার মতকে উপেক্ষা করিয়া যাহারা চলিত তাছাদের অনভ্যস্ত হস্তের শিল্প-কষ্টিকে সে করুণার চক্ষে দেখিত কিন্তু গায়ে পড়িয়া কিছু বলিত না । কিন্তু যাঙ্গর - তাহার বিদ্যাকে মানিয়া চলিত, তাহাদের সাহায্যে লাবণ্য সমস্ত মন ঢালিয়া দিত । - আজ ঠাকুরঝিকে সাজাইবার ব্যাপারে লাবণ্যের উৎসাহের অন্ত ছিল না। পাউডার, এসেন্স, ক্রীম, তেল, বেশভূস|