পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] জীবনদোলা ) ) ఫి আল্‌তা, সিন্দুর, চন্দন যাহার ঘরে যাহা-কিছু ছিল সব সে ভাবিয়া পাইল না। শোভন বলিল, “আচ্ছ। সে হবে জড়ো করিয়াছে, তাহার উপর ফিতা কাটা ব্রোচ পিন ও অসংখ্য জুটিয়াছে । শাড়ীর উপর জামা এবং জামার উপর শাড়ী ফেলিয়া তাহার মাঝখানে গেীরীকে দাড় করাইয়। সে বারবার দেখিতেছে কোন রঙের সঙ্গে কোন রং দিলে তবে গেীরীর রূপটা সবচেয়ে ভাল করিয়া ফুটে । গৌরী বির ই ইয়। ক্ষেপিয় উঠিতেছে। “বোঁ দি বড় জালাতন করছে, আমি যাচ্ছি মাকে বলে দিচ্ছি।" .বলি বলিল, “যা ও না, মাকে বলগে ন, ম চড় ধরে আবার এখানে পাঠিয়ে দেবে । ওঁর আসছে বর, আর অপরাধ হ’ল আমার ! ধন্তি মেয়ে বাপু !" গৌরী মুখ বাকাইয়া বলিল, “আমি বাবাকে বলে দেব।" লাবণ্য খিল খিল করিয়া হাসিয়| গড়াইয় পড়িয় বলিল “মাগে। মা, কি বেহায়া মেয়ে ভাই তুই ! বাবাকে কি বলতে যাবি শুনি ?” গেীরীর পিসতুতো বোন শোভন বলিল, "নাও ভাই বেদি, একটা ক্ষ্যাপ মেয়ের পেছনে তোমায় আর লাগতে দাও না যেমন-তেমন ক’রে সাজিয়ে ; একরত্তি ত মেয়ে, তাকে আর অপর সেজে বরের মন ভোলাত হবে না !" লাবণ্য মুখ নাড়িয়া বলিল, “ওগো, তুমিও একরত্তি ছিলে, তা ব’লে কিছু কম যাওনি।” শোভনা গালে হাত দিয়া বলিল, “মাগে, বৌদি, কি ঘে বল তার ঠিক নেই! আমাতে আর গৌরীতে এক হ’ল ? আমি তখন এগারো পেরিয়ে বারোয় চলছি।” গৌরী কিছু ন বুঝিয় এতক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করিয়া তাকাইয়া ছিল। এইবার পরম গম্ভীর মুখ করিয়া বলিল, “আমিও পৌষ মাসে এগারোয় পা দিয়েছি।” লাবণ্য বলিল,"দেখলে ত তোমার বোন কেমন ছেলে মাচুর্য ! নিজেই বয়স গুনছে। আজকালকার মেয়ে, বাবা, পেটে পেটে বাকু ! দেখো এখন বাইরে যতই লাফানি দেখাক, দুদিনে বরকে হাতের মুঠোয় পুরুবে।" গৌরী নিৰ্ব্বাকবিস্ময়ে তাকাইয়া রহিল । বরনামক ব্যক্তিকে হাতের মুঠোয় পূরিয়া তাহার যে কি লাভ, হবে ল । এখন । এখন গল্পনা গুলো তাড়াতাড়ি পরাও ত দেখি । তা’র ও এসে পড়ল ব'লে।" লাবণ্য বলিল, “মার ঘেমন কাণ্ড ! এই ছত্ৰিশ অলঙ্কার পরিয়ে নাকি কপন ও সাজ খোলে । তার মেয়েকে মেম সাহেব সাজাতে হবে, আবার গয়না ও একটি বাদ পড়বার জে নেই । আচ্ছ। বিপদ লাহোক ৷” শোভন বলিল, “ত। বাপু , মামীম ত ভালই বলেছেন । ৪ ত আর তোমার খৃষ্টান ইস্কুলে পড়তে যাচ্ছে না যে বিবি সেজে ব’সে থাকৃবে । গায়ে দু-দশপান গয়না না থাকুলে নতুন ক’নেকে মানালে কেন ?" শোভন। গৌরীর বাকী গহনা-গুলি একে-একে তাহার মাথায় গলায় হাতে পরাইয়া দিল । গচনার ভারে গৌরীকে তখন খুজিয় পাওয়া ভার। লাবণ্য ননদের কাজে বাধা দিয় তাহাকে আর চটাইতে সাহস করিল না । কিন্তু ক’মেকে বেগুনী কাপড়ের সহিত সবুজ পাথরের গহনাগুলি পরানোতে তাহার মন অত্যন্তই খুংখুং করিতে, লাগিল । সাজসজ্জা সমাপন করিয়া শোভনা ঘড়ির দিকে চাহিয়া বাহিরের দিকে দৌড়াইয়। চলিল, “গুম, আড়াইটে মে বেজে গেছে ভাই ! ওর। এতক্ষণ নিশ্চয় এসে পৌছেছে । আমার দেখাই হ’ল না ।” লাবণ্য বৌমাতুম ঘরেই উৎসুক হুইয়া দাড়াইয়া রহিল। গৌরী কিন্তু ঝমর-ঝমর করিতে-করিতে শোভনার পিছনে ছুটিল । লাবণ্য তাঙ্গর আঁচল পরিয়া টানিয়া বলিল, “এই বোক মেয়ে ! তোমাকে বর তুলতে যেতে হবে না । এখানে চুপ ক’রে বোসে ।" বাড়ীর যত বীচাকর তাহাদের সাধ্যমত পোষাক পরিচ্ছদে সজ্জিত হইয় এবং সস্তার সুগন্ধি তৈলে মাথার চল চকুচকে ও মুখ মন্ত্ৰণ করিয়া রাস্তার ধারে নুতন জামাইকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য দাড়াইয়া ছিল । বাড়ীর পুরুষের সময় উত্তীর্ণ হইয়া যায় দেখিয়া ঘরে বাহিরে ছুটছুটি করিয়া ও মিনিটে দশবার ঘড়ি দেখিয়া অস্থির উঠিয়াছিলেন । ছোট ছেলে মেয়েরা তাহার চেয়েও ব্যস্ত । তাহারা বারান্দার সীমানা অতিক্রম করিয়া