পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిస్రి ‘ফাল্গুনী’র জন্য, এবং সেই দিন সন্ধ্যায় ক্লাবে সকলকে বসন্তের দূতের মতে জানান দিলাম ‘ফাল্গুনী’ আসছে, আমাদের প্রাণটাকে জাগাতে । শু'নে সকলেরই প্রাণের মাঘ ম'রে তখনই ফাগুন হয়ে উঠল। যথাসময়ে দখিন হাওয়ার মতন ‘ফাল্গুনী’ এসে হাজির । কিন্তু গানের সুর ত জানা নেই, ভীষণ ভাবনায় পড়ে হতাশ হ’য়ে পড়লাম। আমাদের তখন গান এসেছে, স্তর আসেনি চোথওয়ালার দৃষ্টির মতে আমর। আমাদের বহিদৃষ্টির সাহায্যে অনেক-প্রকারে গানের স্বরের খোজ করলাম কিন্তু পেলাম না ; তখন চোখ গুয়ালার দৃষ্টি অস্ত যেতেই—অন্ধের দৃষ্টির উদয় হ’ল, অতএব বোলপুরের অভিয় নিতে হ’ল । প্রবীণ-প্রাচীনদের মান সত্ত্বে ও আমাদের বাউলকে বোলপুরে পাঠানে গেল, কারণ তা’র গান তা’কে ছাড়িয়ে যায়। বোলপুরে কবিশেখর আমাদের বাউলকে বলেছিলেন, “ওরে, তুষ্ট কি তিন দিনের ভিতর আমাদের ফাস্তুনাকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে চাস ? এত সহজ মনে করিস্নে, এতদিন ত পশ্চিমের সাড়া পাইনি।” আমাদের বাউল তাই তা’র দেহ মন প্রাণ দিয়ে যত্ন ক’রে সত্যই তিন দিনের ভিতর গানের স্বরগুলি ঘূর্ণিহাওয়ায় উড়িয়ে সুদূর, মরুময় দিল্লীতে এনে হাজির করূলে অরুণ আলোয় খেয় নৌকাটির মতে । আমাদের প্রাণে আশা হ’ল । বাউল গাহিল, “হবে জয়, হবে জয় হবে জয় রে, হে বীর হে নিৰ্ভয় ।” রিহাস্যাল । সমস্ত ফাল্গুনীটাই একটা সুরের মতন, তাই এর ভিতর বেঙ্করের কিছু ঠেকূলেই প্রত্যেক অভিনয়ের রিহাস্যালের সময় আমাদের মধ্যে মতদ্বৈধ হ’ত । “ফাগুন লেগেছে বনে বনে’ না হ’য়ে আগুন মনে-মনে লাগত। প্রত্যহই সন্ধ্যায় রিসালের সময় মনে হ’ত আজই ফাল্গুনীর সংক্রান্তি,কিন্তু দ্বিতীয় দিনই আবার নবউৎসাহে রিহাস্যাল সুরু হ’ত, আবার মতদ্বৈধও হ’ত । তখন আমাদের মনে হ’ত, "তোমায় নূতন ক’রে পাবো ব'লে হারাষ্ট ক্ষণে ক্ষণে ।" রবীন্দ্রনাথ ফান্ধনীতে যেমন প্রকৃতির আশ্রয় নিয়েছেন, তেমনি আমরাও আমাদের মীমাংসার জন্য প্রকৃতিকে যিনি যথার্থই উপলব্ধি করেছেন, সেই প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড সারদাচরণ উকিলের আশ্রয় নিলাম। র্তার প্রাণের ' শীতের বসনটা কেড়ে নিতেই দেখি তার প্রাণ চিরনবীনতায় ভরা, তখন তার গোপন প্রাণের পাগলামি আমাদের কাছে প্রকাশ হ’ল । সারদ।-বাবুর উৎসাহ এবং ফাঙ্কনীর গানের কুর গুলি আমাদের ফসল-ক্ষেতের গোড়ায় রস জগিয়ে এসেছে । অভিনয় —ফাল্গুনীকে গ্রহণ ক’রে অবধি আমরা এত আনন্দ পেয়েছিলাম যে আমরা আমাদের নবপল্লবিত ছেলেমেয়েদেরও ফাল্গুনীর ফাগ মাগিয়ে গতিভূমিকায় টেনে এনেছিলাম। তাদের কচি-কচি হাত-পা নাড়া, কচি গলায় গানের সুরে, দর্শকের কথা জানি না, আমাদের প্রাণ আনন্দের আবারে রঙীন ক’রে তুলেছিল। কচির শোভাই বসন্তের শোভা । মাসের সংএন্তির দিন ফল্গুনীর অভিনয় হ’ল । সারা-যার করেছিলাম অভিনয়কালে কেহই মর্ত্যের নই, এ ধারণা আমাদের হয়েছিল। ফাল্গুনীর সূচনা, গীতিভূমিকা এবং নাট্যাংশের প্রত্যেক দৃগু সারদাবাবু প্রকৃতির অন্তকরণে রকমারি ফুলের গাছ, লতা, পাত। কচি খাস, ফুল, কুটার নৌকা, গুহ্যদ্বার ইত্যাদির দ্বার। এমন সুন্দর ভাবে সাজিয়েছিলেন যে প্রত্যেক দৃশুটিই এক-একটি নিখুং ছবির মতন ফুটে উঠেছিল। দর্শকমণ্ডলী এ-দৃশ্যগুলির ভিতরকার সৌন্দয্য সম্যক্ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন কি না তা জানিনে। গান ত অনেকেই গায়, কিন্তু কান ক’জনের আছে। চোখ ত সকলেরই আছে, কিন্তু দৃষ্টি ক’জনের আছে ? কিন্তু আমরা জানি ফাল্গুনীর সাজসজ্জা এবং দৃশ্ব গুলির ভিতর দিয়ে সারদাবাবুর কতথানি শিল্পচাতুৰ্য্য ও স্বক্ষ সৌন্দর্য্যবোধ প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্বকবির ভাবকে মূৰ্ত্ত করুবাব চেষ্টা সফল হ’ত না, যদি-না এ অপূৰ্ব্ব হষ্টির উপকরণগুলি স গ্রহ হ’ত —-এ দায়টি ছিল নৃত্যগোপাল ভট্টাচার্য্যের । পার্থী যেমন তা’র বাসা তৈরি করুবার সময় কত ঘুরে কত কষ্ট করে, কত যত্নে, কত দিনে এক-একটি ক'রে কুটো এনে অত বড়ো বাসা তৈরি করে, আমাদের ফাল্গুনীর দৃশ্বের প্রত্যেক কুটােটি নৃত্যগোপাল ঐরুপেই সংগ্রহ করেছিলেন। ফাঙ্কনীকে পেয়ে আপন বেগে পাগলপারা হয়ে আনন্দের স্রোতে ጙ [ %ሙ! অন্ততঃ