পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] অনুসন্ধান করিবার যথেষ্ট সময় না থাকায় অনেক মিথ্যা খবর বাহির হইয়া যায়। মুখে মুখে যে-সব গুজব ও খবর রটে, তাহার মধ্যে মিথ্যার ভাগ আরও বেশী। অতএব, উত্তেজনার সময় যাহা পড়া যায় বা শুনা যায়, তাহাই প্রচার না করা ভাল। যথাসম্ভব চুপ করিয়া থাকিবার অভ্যাস অনেকের থাকিলে, হুজুক, উত্তেজনা ও আতঙ্ক বাড়িতে পায় না । অবশ্য লোককে সাবধান করিবার জন্য যতটুকু সত্য সংবাদ বলা দরকার, তাহা বলা উচিত । বিপদের সময়ও যাহার দলাদলি ভুলিতে পারে না, তাহারা শ্রদ্ধার পাত্র নহে। দাঙ্গাহাঙ্গামার সময় কোন রাজনৈতিকদল কি করিল না, তাহার আলোচনা সম্পূর্ণ অনাবশ্বক এবং লঘুচিত্ততা ও পক্ষপাতদুষ্ট বিকৃতচিত্ততার পরিচায়ক । ভাল কাজ কে কি করিয়াছেন, তাহা অবশ্যই লেখা উচিত। কেহ ভাল কাজ করিয়া থাকিলেও, তাহার অপলাপ করিয়া অধিকন্তু তাহার নিন্দ। করা সুণ্য মনোবৃত্তির পরিচায়ক । মানহানির মোকদ্দমায় সুভাষ বস্থর জিৎ সুভাষচন্দ্র বসুকে যখন বিনা বিচারে বন্দী করা হয়, তখন ইংলিষম্যান ক্যাথলিক্‌ হেরাল্ড হইতে নকল করিয়াছিল, যে, তাহার পিতা প্রকারান্তরে স্বীকার করিয়াছেন, যে, সুভাষচন্দ্র বিপ্লববাদীদের দলে থাকিয়া বিপ্লব-চেষ্টা করিতেন। স্বভাষবাবু এই মিথ্যা কথার প্রতিকার কল্পে ইংলিষম্যানের নামে মানহানির মোকদম রুজু করেন, এবং ক্ষতিপূরণ চান । তিনি মোকদ্দমায় জিতিয়া ২০০০ টাকা খেসারৎ এবং মোকদ্দমার খরচার ডিক্ৰী পাইয়াছেন। সরকার স্বভাষবাবুকে বিনা বিচারে বন্দী করিয়া রাখিয়াছেন বলিয়াই যে তাহার বিরুদ্ধে যাহার যাহা মন পাইবে, সে অবাধে তাহাই বলিবে, ইহা অসহ। স্বভাষবাবু ইংলিষম্যান কাগজকে শিক্ষা দিয়া কেবল যে আপনাকে অখ্যাতিমুক্ত করিয়াছেন, তাহা নহে, সৰ্ব্বসাধারণেরও উপকার করিয়াছেন। কারণ, আশা করা যাইতে পারে, যে, বিদেশীদের যে-সব কাগজ ভারতবর্ষে অন্ন করিয়া খায়, তাহার। অতঃপর জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে যা-ত বলিবার আগে কথাগুলার প্রমাণ আছে কিনা ভাবিয়া দেখিবে। বিবিধ প্রসঙ্গ-—মুভাষ বাবুর নির্বাসনের কারণ সম্বন্ধে গুজব ২১৭ মৃভাষবাবুর নির্বাসনের কারণ সম্বন্ধে গুজব স্বভাসবাবুর নির্বাসনের কয়েক দিন পরে আমরা শুনিয়াছিলাম, যে, কলিকাতা নগরের কোন জনতৃত্যের এবং রাজনৈতিক দলবিশেষের কোন বিশ্বাসঘাতক সভোর সাহায্যে মৃভাষবাবুর অজ্ঞাতসারে উত্তোলিত একটি ফোটোগ্রাফ ইহার কারণ। এই গুজব আমরা সম্প্রতি আবার শুনিয়াছি। গুজবটি এই প্রকার যে, ঐ সভ্য স্বভাযবাবুর কামরায় তাহাকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র দিতে যাইতেছে, এমন সময় ফোটোগ্রাফ তোল হয়। কিন্তু বস্তুতঃ পরমুহূৰ্বেই সুভাষবাবু যে উহ। না লইবার মুখ ভঙ্গী ও হস্তভঙ্গী করিয়া উহা লইতে অস্বীকার করেন, ফোটোগ্রাফে তাহ উঠান হয় নাই। গুজবটি সত্য কিনা, জানি না । কিন্তু উহ। বাংলা দেশের অন্তর্গত দূরবর্তী দুটি জায়গায় দীর্ঘকাল পরে পরে শুনায় উল্লেখযোগ্য মনে হইল। ফোটোগ্রাফী বিদ্যার আজকাল এরূপ উন্নতি হইয়াছে, যে, এক সেকেণ্ডের ভগ্নাংশ মধ্যে সুস্পষ্ট ফোটোগ্রাফ তোলা যায়। সুতরাং কোন মানুষের বিরুদ্ধে প্রমাণ কষ্টি করিবার জন্য উহ। চাতুরীর সহিত ব্যবহৃত হইতে পারে। যদি কোন রাজনৈতিক নেতা কোন সময়ে বলিয়া থাকেন, “আমি রাজনৈতিক হত্যায় রাজী নহি,” কিন্তু তাহার কথা গুলি গ্রামোফোনে ধরিবার সময় “রাজী” পৰ্য্যস্ত ধরিয়া কল থামাইয়া দিয়া “নহি” কথাটা বাদ দিতে পারা যায়, তাহা হইলে তাহার প্রকৃত মতের ঠিক বিপরীত প্রমাণ তাহার বিরুদ্ধে গবন্মেন্টের নিকট কেহ উপস্থিত করিতে পারে। উল্লিখিত ফোটোগ্রাফের গুজবটি সত্য হইলে তাহ ঠিক এই প্রকারের প্রমাণ। এরূপ প্রমাণের স্বষ্টি লাট সাহেবদের ও শাসনপরিষদের সভ্যদের সম্পূর্ণ অগোচরে হওয়া অসম্ভব নহে। স্বভাষবাবুকে যাহারা ভাল করিয়া জানেন, তাহার র্তাহার নির্বাসনের সময় বিশ্বাস করেন নাই, যে, তিনি রিভলভার বোমাআদির দ্বারা বিপ্লব ঘটাইবার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন ; এখনও বিশ্বাস করেন না। আমরা উহাকে না জানিলেও কখনও বিশ্বাস করিতে পারি নাই, যে, তাহার মত বুদ্ধিমান কোন লোক এরূপ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থাকিতে পারেন। ইংলিষ