পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

אלפי енія —čajъ, yoее [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড কথার শেষটাও তিনি আর একটা নিঃশ্বাসের উপর দিয়েই কবুলেন । দেবীর-মা একটু ভেজা গলায় ব’লে উঠলেন,—“সবই তোর কপাল বউ ! তা এখন একটি হাত মুড়কুং বউ না হ’লে কিছুতেই আর তোর চলে না । আজ বাদে কাল মেয়েটিও শ্বশুর-ঘর চ’লে যাবে, হাতের কাছে জল-বাটুনাটি এগিয়ে দেবারও ত একটি কাউকে চাই। ছেলেটির পানটি, জলটি দিতে হ’লেও সেই নিজে । ষেটের কোলে তেইশ চব্বিশ বছর বয়সও হ’লো তার, এখন ঘরে একটি বউ না আনলে মানাবেই বা কেন ?” যশোদা বললেন—“আমার কি অসাধ বোন যে ঘরে বউ না আনি ? তা এই কর্জ-ঋণের ওপর এখন পরের মেয়েকে আনি কি করে ? কৰ্ত্তার মত না, ছেলেরও মত না ।” দেবীর-মা বললেন—“ছেলের মত আবার একটা কথা । ছেলেতে আর এ বয়সে কবে কোথায় বেহায়ার মতন ব’লে থাকে যে আমার বিয়ে দিয়ে দাও । তবে কৰ্ত্তার অমত—তা দাদা মিছে অমত করছেন এখুনি সোণার চাদ ছেলের বিয়ে দিয়ে করকরে দেড়টি হাজার টাকা তুমি গুণে নাওনা ! দেনা কৰ্জ সব শোধ হ’য়ে যাবে, ঘর-আলো-করা একটি বউও হবে।” যশোদা যে এ কল্পনা করেননি তা নয় তবে কি না নিজের সাধের কল্পনার বর্ণনা পরের মুখে শুনলে রূপটা তার প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠে ; স্বতরাং যশোদা বেশ একটু উৎসুক হ’য়ে ব’লে উঠলেন, “তা বেশত ঠাকুর-ঝি, তুমি একটু দেখে শুনে সম্বন্ধ ঠিক্‌ ক’রে দাও না ; ভেতরে-ভেতরে সব ঠিক ক’রে তার পর প্রবালকে বললেই হবে।” দেবীর-মা খুমী হ’য়ে বললেন “তা না ত কি ? কেদারের-মা রোজই জিজ্ঞেস করেন প্রবালের বিয়ের কি হ’ল। দুটিতে সমজুট পড়াশুনো চিরকাল এক সঙ্গেই করলে এক সঙ্গেই পড়া ছেড়ে কাজ স্বরু করলে ; অথচ একটি বেথা ক’রে সংসারী হয়েছে আর তোমার প্রবাল সন্ন্যাসী হ’য়েই রইল।” তার পর দেবীর-মা নিজের দূর-সম্পৰ্কীয়া এক ভাইঝির সঙ্গে প্রবালের বিয়ের কথা তুললেন। মেয়ের বাপ হাজার দেড় টাকা নগদ দিতে চান, মেয়েটিও স্বত্র। প্রবালের স্বভাব চরিত্র খুব ভালো জেনে গরীবের ঘরেই তিনি মেয়ে দিতে প্রস্তুত হয়েছেন ; তার পর তার মেয়ের বরাতে থাকে এই গরীব ঘরেই লক্ষ্মীর কৃপায় সে মুখে স্বচ্ছন্দে থাকৃতে পারবে। এ সব কথার একটা নিম্পত্তি হবার পর যশোদা জিজ্ঞেস করলেন---“কেদারের বউটি এখন কোথা, ছেলে পিলে কিছু হবে না কি ? দেবীর-মা বললেন—“তা তো কিছু বোঝাচ্ছে না, কৰ্ত্তা-গিল্পীর কিন্তু ভারী সাধ শীগগীর বউটর কোল জোড়া হয়। বউ এখন এইখানেই আছে ; কেদার নূতন কাজ নিয়ে যে কলকাতা যাবে শুনচি ” যশোদা বললেন—“বউ ত নেহাৎ ছেলে মাহব, ছেলে পিলে দুবছর দেরীতে হ’লেই ভালে । কেদার কি তবে পুলিশের কাজেই চুক্ল না কি ? প্রবাল বলছিল ও সব ঝকুমারীর কাজে কেদার ঢুকতে রাজী নয় ।” © “তা ত কই কিছু শুনিনি, এখন আজ উঠি তবে” ব’লে দেবীর-মা গা তুললেন। মুমতি এই সময় তার গ ঘেসে এসে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলে—“হ্যা পিসী, মানুষআমূী কি সত্যিই হয় না কি ?’ মা ধমক দিয়ে বললেন “এই এক পাগল মেয়ে যা কিছু শুনবে তার অমূনি তদারক তদন্ত না ক’রে ওর আর সোয়াস্তি নেই। এই বুদ্ধি নিয়ে শ্বশুর ঘরে যে কেমন ক’রে ও দিন কাটাবে আমি তাই ভাবি ? দেবীর-মা হেসে স্বমতির মাথাটি নেড়ে দিয়ে বললেন “চালকুমড়ীর গল্প শুনেছিস তো স্বমি। ঐ যারা বাপ-মা মরবার সময় হ’লে চালে ছুড়ে ফেলে মেরে ফেলত, তার পর তাকে আমসী শুক্লো করে শুকিয়ে তবে খেতো ; তারাই মানুষ-আমণী করে।” “ও সে ত রাক্কপদের কথা ; তাদের দেশ কোথায় পিসি ?” পিসিমা আর সে খবরটি বলতে পারলেন না ; “বাড়ীতে কাজ আছে” ব’লে চলে গেলেন। বেচারী স্বমতি রাক্ষসদের দেশ কোথায় জানবার জন্যে বিশেষ উৎসুক হ’লেও বকুনী খাবার ভয়ে মাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারলে না। ভেবে রাখলে দাদা কাদের ছেলে পড়াতে গেছেন তিনি এলে তার কাছ থেকে জেনে নেবে ।