পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WoS8 “একটা লোককে যেতে দেখিছি ?” “হ্যারে হ্যা ! তার মাথায় একটা চুড়ো-ওলা টুপী, গায়ে লাল আর হলদে রঙের ফতুয়া।” “মাথায় চুড়ে-ওলা টুপী, গায়ে একটা লাল আর হলুদে রঙের ফতুয়া ?” “ওরে হ্য!!—বল না শিগ গিরি ! কেবল আমার কথাগুলোই আওড়ায় দ্যাথো !” “আজ সকালে আমাদের পাদ্রীমশাই এইখান দিয়ে ষাচ্ছিলেন বটে,—সেই যে র্তার ‘পিয়েরো’ বলে’ ঘোড়াটা ? —তারই উপর চড়ে । আমাকে জিজ্ঞেস করলেন—তোর বাবা কেমন আছে রে ? আমি বললাম---” “নে নে, তোর ন্যাকামী এখন রাখ ! জানেত্তো কোনদিকে গেল তাই বল দিকি ? আমরা তারই খোজে এসেছি—সে নিশ্চয় এই দিক দিয়ে গেছে ।”." “তার আমি কি জানি ?” “তুই কি জানিস ! তুই তাকে নিশ্চয় দেখেছিল।” “মজার লোক ত ! লোকে ঘুমিয়ে থাকৃলে—রাস্ত দিয়ে কে কোথায় গেল তার খোজ রাখে বুঝি ?” "ওরে ছুচে ! তুমি ঘুমুচ্ছিলে বটে ? আমার বন্দুকের আওশাজ শুনেও জেগে ওঠনি ?” “ও ! তাই বুঝি মামু!—তুমি মনে কর তোমার বন্দুকের বডড আওয়াজ ? আমার বাবার বন্দুকের আওয়াজ কখনো শোননি বুঝি ?” “ব্যাট কি বজাত –জানেত্তোকে তুই না দেখে থাকিস ত কি বলেছি ! হয়ত তুইই তাকে কোথাও লুকিয়ে রেখেছিস্ !—ভাই সব ! তোমরা এসো ত আমার সঙ্গে, একবার বাড়ীর ভিতরটা খুজে দেখা যাক—কোথাও আছে কি না । ব্যাট। ত শেষটায় একপায়ে হাটছিল —এমন অবস্থায় সে যে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ‘মাকী পৰ্যন্ত যাবে, তেমন বোকা সে নয়। তা ছাড়া রক্তর দাগ ত এইখানে এসে শেষ হয়েছে ।” ফচুনাতো এবার যেন খুব খুশী হয়ে বলে উঠল, “আচ্ছ বেশ ত! বাবা এখন নেই—জোর করে বাড়ীতে ঢোক’ না দেখি । বাবা এসে যখন শুনবে, তখন ?” এবার গাম্বা তার কাণটা ধরে বললে, "শয়তান ! প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড জানিস, এখুনি ইচ্ছে করলে তোর বোল ফিরিয়ে দিতে পারি ? তলোয়ারের পিঠটা দিয়ে ঘা কতক দিলেই সত্যি কথা বল্বার পথ পাবিনে ৷” তবুও ফচুনাতো মজা দেখবার জন্যে বলে উঠল, “হু, আমার বাবার নাম মাতেও ফালকোনে।” “তবে রে উল্লুক —জানিস্, তোকে এখ খুনি চালান করে দিতে পারি ? জানেত্তো কোথায় আছে যদি না বলিস, তা’হলে তোর পায়ে শিকল দিয়ে গারদে পূরে, খড়ের বিছানায় শুইয়ে রাখব, শেষে মাথাটি দেব উড়িয়ে ।” শাসনের এই ভঙ্গি দেখে ছেলেট হো হো করে? হাসতে লাগল, বললে—“আমার বাবার নাম মাতেও ফালকোনে।” -- তখন সৈনিকদের মধ্যে একজন দলপতির কাণে কাণে বললে, “কাজ নেই কৰ্ত্তা, মিছিমিছি মাতেওর সঙ্গে ফ্যাসাদ বাধিয়ে ।” গাম্বা যে ভারী মুশকিলে পড়েছে তা কারু বুঝতে বাকি রইল না। এর মধ্যে লোকগুলো যখন বাড়ীর ভিতর থেকে ঘুরে এল, তখন সে তাদের নিয়ে চুপি চুপি পরামর্শ করতে লাগল। বাড়ীর ভিতরটা ঘুরে আসতে বেশীক্ষণ লাগেনি, কারণ কসিকায় বাড়ী বলতে কেবল একখান বড় চারকোণা ধর । আসবাবের মধ্যে একটা টেবিল, থানকতক বেঞ্চি, গোটা তিন-চার সিন্দুক, কিছু তৈজস-পত্র, আর শিকারের অস্ত্রশস্ত্র : ফচুনাতে তখন খড়ের গাদার পাশে দাড়িয়ে বেড়ালটার গা চাপড়াচ্ছিল,—মামু আর মামুর দলবলের এই দুৰ্গতি দেখে তার ভারী ফুৰ্ত্তি একজন সৈনিক খড়ের গাদাটার কাছে এসে দাড়াল, দেখলে তার উপর একটা বেড়াল রয়েছে, তবু খড়ের ভিতর বেয়োনেটের একটা খোচ দিয়ে—কাজটা যে কত অনাবশ্যক ও হাস্যকর তাই ভেবে—নিজেই বিরক্তি প্রকাশ করলে। ভিতরে কিছুই নড়ে উঠল না, ছেলেটার মুখেরও একটু ভাবান্তর হ’ল না । তখন সকলেই হতাশ হয়ে, যাত্রাটাই অশুভ বলে দুঃখ করতে লাগল। সকলেই আবার মাঠের দিকে ফিরে যাবার উদ্যোগ করছে, এমন সময় দলপতির মাথায় একটা