পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vტზNy ছেড়ে দেয়নি। ঘড়ির মুখটা নীল, ডালাটি সদ্য পালিশকরা-রোদুর লেগে দপ-দপ করে জলে উঠল। লোভ আর সাম্লানো গেল না। ফচুনাতো তখনও খড়ের গাদায় ঠেস্ দিয়ে দাড়িয়েছিল। এই বার শুধু বঁ-হাতটা তুলে’ বুড়ো-আঙ্গুল দিয়ে পিঠের দিকে ইসারা করলে। দলপতি তথখুনি বুঝে নিলে— সঙ্গে-সঙ্গে ঘড়ির চেনটাও ছেড়ে দিলে । এতক্ষণে ফচুনাতোর বিশ্বাস হ’ল যে ঘড়িটা তারই বটে। তড়াক করে একটি লাফ দিয়ে সে খড়ের গাদাটা থেকে দশ হাত সরে দাড়াল, কারণ সৈনিকরা এর মধ্যেই সেটাকে ভেঙ্গে ফেলতে সুরু করেছে। একটু পরেই খড়গুলো নড়তে লাগল,আর অমনি ভিতর থেকে একটা রক্তাক্তদেহ পুরুষ বেরিয়ে এল—তার হাতে একখানা ছোরা । উরুতের রক্ত জমাট হয়ে ঘা-ট আড়ষ্ট হয়ে উঠেছে, তাই দাড়াতে গিয়ে সে পড়ে গেল । তখন দলপতি তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে অস্ত্রখানা হাত মুচড়ে কেড়ে নিলে । খুব ধ্বস্তাধস্তি করা সত্ত্বেও তাকে আচ্ছা করে বেধে ফেলা হ’ল । জানেত্তো যেন এক-তাটি কাঠের মত বাধা-অবস্থায় প’ড়ে আছে, এমন সময় ফচুনাতো তার কাছে এসে দাড়াতেই সে তার দিকে ঘাড় ফিরিয়ে চাইলে, চেয়ে বললে— “– র বাচ্ছা !”-কথাটায় রাগের চেয়ে ঘৃণাই ছিল বেশি । ছেলেট। তখন ভাবলে, টাকাটা আর রাখা ঠিক নয়, তাই সেটা সে ছুড়ে ফেলে’ দিলে। লোকটা কিন্তু সেদিকে ফিরেও চাইলে না। সে তখন খুব সহজ গলায় দলপতিকে ডেকে বললে— “ভাই গাম্ব, আমি ত' আর হাটুতে পারব না,আমাকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু।” গাম্বা এখন বিজয়ী,তাই নির্দয়—কথাটা শুনে সে বলে’ ਚੋੇ “কেন ?—এই একটু আগে ত বুনো-ছাগলের মত ছুট ছিলে! আচ্ছ, তা হ’বে এখন, ভাবনা নেই। তোমাকে ধরে’ আজ যে-রকম আহলাদ হয়েছে, তাতে নিজেই তোমাকে কাধে করে’ দশ ক্রোশ পথ নিয়ে যেতে প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড পারি, একটুও কষ্ট হবে না। আচ্ছ, ভায়া, তার আর কি ?—ডাল-পালা দিয়ে একখানা খাটুলি না হয় বানিয়ে নেওয়া যাবে, তারপর ক্রেস পলিতে পৌঁছে একটা ঘোড়া নিলেই হবে ।” “সেই ভালো, আর দেখ—খাটুলিতে চারটি খড় বিছিয়ে দিও, তাতেও একটু আরাম পাব।” সৈনিকেরা যখন নানান কাজে ব্যস্ত—কেউ জানেত্তোর পায়ের ঘা বেঁধে পরিষ্কার করে দিচ্ছে, কেউ চেষ্টনাট, গাছের ডাল কেটে খাটুলি বাধছে—সেই সময়, ‘মাকী’তে যাবার যে পথ,তারি মোড়ের মাথায় হঠাৎ মাতেও আর তার স্ত্রীকে আসতে দেখা গেল। স্ত্রী আসছে আগেআগে—একটা প্রকাগু চেষ্ট নাট ফলের বস্তা ঘাড়ে করে’ সে ঝুকে পড়েছে ; তার স্বামী বেশ সোজা হয়ে গট-গট করে পিছন-পিছন আস্ছে—একটা বন্দুক তার হাতে, আর একটা পিঠের উপর ঝুলিয়েছে। সে বোধ হয় মনে করে যে, পুরুষ-মানুষের পক্ষে অস্ত্রশস্ত্র ছাড়া আর কোনোরকম বোঝা বওয়া বড়ই লজ্জাকর । দূর থেকে সৈন্যদের দেখে মাতেওর প্রথমটা মনে হ’ল, তাকেই বুঝি গ্রেপ্তার করতে এসেছে। কিন্তু ঐরকম মনে হওয়ার কারণ কি? সে ত কোনো বে-আইনি কাজ করেনি । এবিষয়ে তার বরং স্বনামই আছে। কিন্তু লোকটা জাতে যে কসিকান ! এই পাহাড়ী জাতটার মধ্যে এমন মানুষ খুব কমই আছে,যার মন হাতড়ালে একটা-না-একটা ছোরাছুরির ব্যাপার উকি দেয় না। অবিশুি আর পাচজনের তুলনায় মাতেওর মনটা অনেকটা সাচ্চ বৈকি, কারণ মানুষ-মারা কাজ সে এই দশ বছরে আর একটিও করেনি। তবু বলা যায় কি ? যদিই ব্যাপারটা সেরকম কিছু দাড়ায়, তার জন্তে গোড়া থেকে একটু সাবধান হওয়ায় দোষ কি ? তাই জিসেপাকে ডেকে বললে— “গিল্পী, থলেট এখন নাবাও, নাবিয়ে তৈরী হ’য়ে নাও।” স্ত্রী তখনি সে আদেশ পালন করলে। পাছে নিজের কোনও অস্ববিধে হয় বলে সে তার কাধের বন্দুকটা স্ত্রীকে ধৰ্বতে বললে। তারপর যে-বন্দুকটা হাতে ছিল তার ঘোড়া তুলে, আন্তে-আন্তে গাছগুলোর আড়াল দিয়ে