পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বাড়ীর পানে এগুতে লাগল ; এমন সতর্ক হয়ে রইল, যে শক্ৰতার একটু আভাস পেলেই, যে-গাছটার গুড়ি সবচেয়ে মোট তার আড়াল থেকে গুলি চালাতে থাকৃবে। স্ত্রী ঠিক পিছন পিছন আসতে লাগ ল—তার হাতে বাড়তি বন্দুকট আর টােটার বাক্স। সতী স্ত্রীর কাজই হচ্ছে—যুদ্ধের সময় স্বামীর বন্দুকে টোট ভৰ্ত্তি করে দেওয়া । । এদিকে মাতেওর এই ভাব দেখে দলপতির বড় ভাবনা হ’ল। সে ভাবতে লাগল— “জানেত্তে ঘদি মাতেওর কোনোরকম জ্ঞাতি বা বন্ধু হয়, আর যদি সে তাকে রক্ষা করতে চায়, তাহ’লে ওই দুই বন্দুকের দুই গুলি আমার দলের দুটিকে এসে পৌছবে –একেবারে ডাকের চিঠির মতন । আর যদি কুটুম্বিত অগ্রাহ করে আমাকেই লক্ষ্য ক’রে—” —তখন এই বিপদে সে একটা অসমসাহসের সঙ্কল্প কবুলে ; নিজেই এক এগিয়ে গিয়ে মাতেওকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে সবকথা খুলে বলাই যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হ'ল। কিন্তু দু জনের মাঝখানে সেই অল্প পথটুকুও তখন ভয়ানক লম্ব বলে’ বোধ হ’তে লাগল । “আরে এই যে ! শুন্‌ছ হে ভায়া ! বলি, কেমন আছ বন্ধু ? আমি গাস্ব-তোমার কুটুম্বু হে!" মাতেও কথা না কয়ে দাড়িয়ে পড়ল ৷ যতক্ষণ এ লোকটা চেচাচ্ছিল, ততক্ষণ সে আস্তে-আস্তে বন্দুকের নলটা উচু করতে লাগল, শেষে যখন লোকটা কাছে এসে পৌঁছল তখন নলটা আকাশ-মুখো হয়ে গেছে। দলপতি হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললে “ভালো ত ?” “হা, ভালো ?” “এইথান দিয়েই যাচ্ছিলাম কি না, তাই ভাবলাম কুটুম্বুর সঙ্গে একবার অম্নি দেখাটা করে যাই । আজ অনেকখানি পথ মার্চ করে এসেছি ; তবে সে কষ্ট পুষিয়ে নিয়েছি—একটা খুব বড়দরের কাতলা ডাঙ্গায় তুলেছি আজ। এই একটু আগে জানেত্তো সান্‌-পিয়েরোকে পাকৃড়াও করেছি।” 酸 শুনে জিসেপ বলে উঠল, “বাচা গেল! আর হঞ্চায় ওই হতভাগা আমাদের একটা দুধ-দেওয়া ছাগল চুরি করেছিল।” মাতেও ফালকোনে ©8ፃ এতক্ষণে গাস্ব যেন বঁাচল । মাতেও বললে, “আহা বেচারী ! নিশ্চয় পেটের জালা ধরেছিল।” দলপতি একটু থমকে গিয়ে আবার বলতে লাগল, “বেটা যা লড়াই করেছে ! —যেন বাঘের মতন ! কপোরাল শাদের্ণর একটা হাত ভেঙ্গে দিয়েছে, তার উপর আমার একটা লোককেও খুন করেছে। ত ক্ষতি বিশেষ হয়নি, লোকটা ছিল জাতে ফরাসী । তারপর বেটা এমনি লুকোন লুকিয়েছিল যে, কার বাবার সাধ্যি খুজে বের করে। ওই আমার বাচ্ছ ভাগ্নেটি যদি না থাকৃত, তা হ’লে সব পণ্ড হয়ে গিয়েছিল আর কি ?” মাতেও বললে, “কে ? ফচুনাতো !” জিসেপাও সঙ্গে-সঙ্গে চেচিয়ে উঠল,“ফচুনাতো!" “হা, জানেত্তো ওই খড়ের গাদায় লুকিয়েছিল, ভাগ্নেই ত চালাকিট। ধরিয়ে দিলে। ওর সেই কর্পোরালকাকাকে খবরটা দেবো অথন, তিনি ওকে একটা ভালো উপহার পাঠিয়ে দেবেন। আমিও বড়-দারোগীকে যে রিপোর্ট পাঠাব, তাতে তোমার নাম আর তোমার ছেলের নাম দিয়ে দেবো ।” শুনে মাতেও চাপা গলায় ব’লে উঠল, "চুলোয় যাক ৷” এতক্ষণে তার সৈন্যদের কাছে এসে পৌছল। জানেত্তোকে খাটুলির উপর শুইয়ে দিয়ে তারা তখন যাত্রার আয়োজন করছে। জানেত্তো গাস্বার সঙ্গে মাতেওকে দেখে একটা অদ্ভুত হাসি হাস্লে, তারপর বাড়ীর দরজার দিকে মুখ করে চৌকাঠের উপর থুতু ফেলে বলে’ উঠল— “বেইমানের বাড়ী !” যার মরণের ভয় নেই, সেই কেবল এমন কথা মাতেওকে বলতে পারে। ছোরার একটি খোচায় এ অপমানের শোধ হ’য়ে যেত, দ্বিতীয়বার ছোরা তুলতে হ’ত না। কিন্তু মাতেও তাই শুনে—ভয়ানক আঘাত পেলে লোকে যেমন করে—তেমনি করে নিজের কপালট হাত দিয়ে টিপে ধবৃলে। বাপকে আসতে দেখেই ফৰ্চনাতে বাড়ীর ভিতর চলে’ গিয়েছিল, এখন একবাটি দুধ নিয়ে সে ফিরে’ এল, এসে