পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S要浮矿征 [ পুস্তক-পরিচয়ের বা পুস্তক-সমালোচনার সমালোচনা বা প্রতিবাদ না-ছাপাই আমাদের নিয়ম—সম্পাদক ] ভারতীয় স্বাস্থ্যবিদ্য—কপিরাজ গীভূদেব মুখোপাধ্যায় এম এ, ভিষগাচাৰ্য্য জ্যোতিভূষণ প্রণীত। মূল্য ২ টাকা । প্রান্ত:কৃত্য, স্নান, আহার, বিশ্রাম, নিদ্রা, ব্যtয়াম, ঋতুচয্যl, শরীর বিজ্ঞান, মাদক-দ্রব্য সেবন, দ্রব্যগুণ প্রভৃতি বিষয় সম্বন্ধে আয়ুৰ্ব্বেদ-সন্মত কতিপয় স্বাস্থ্যতত্ত্ব গ্রন্থকার এই পুস্তকে সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করিতে ৫ায়াস পাইয়াছেন। গ্রন্থকারের উদ্দেশ্য প্রশংসনীয় হইলেও এবং গ্রন্থ মধ্যে অনেক ভাল কথা থাকিলেও তিনি স্থানে স্থানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার সমালোচনা-কালে যেরূপ সদ্বিচারের অভাব ও একদেশদর্শিত প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহতে ভয় হয়, যে, এই গ্রন্থ আমাদের সমাজে সুশিক্ষা বিস্তার না করিয়া কুশিক্ষ। বিস্তারের সহায়তা করিলে । গ্রন্থকার পাশ্চাত্য চিকিৎস-বিজ্ঞান এবং পশ্চাত্য স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানের সম্পূর্ণ বিরোধী। তাছার মতে পাশ্চাত্য চিকিৎস। এদেশে কিছুমাত্র উপকার করে নাই এবং কখন করিতে পরিবে না। পাচুতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান উাহার মতে এ দেশের উপযোগী নহে এবং উক্ত স্বাস্থ্যবিজ্ঞানমুমোদিত যাঙ্গ কিছু কাৰ্য্য এ দেশে হইতেছে তাহ দ্বার দেশের লোকের স্বাস্তোয় উন্নতি না হইয়| ক্রমশঃ অবনতি ঘটিতেছে । আয়ুৰ্ব্বেদোক্ত স্বাস্ততত্ব ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যরক্ষার (Personal hygiene) পক্ষে অমুকুল একথা কেহই অস্বীকার করিবে না, কিন্তু জনসংঘের স্বাস্থ্যরক্ষ (Public Ilealth) সম্বন্ধে | যেমন বিস্তুত জনপদের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল *āhitefon (Conservancy) CŞGigi (Drainage) * স্বব্যবস্থl. সংক্রমিক রোগের কারণ নিৰ্দ্ধারণ এবং তাহার প্রতিষেধের স্বাবস্থা, মহামারী নিবারণ ইতাদি বিষয়ে ] প্রাচীন হিন্দু চিকিৎসকদিগের জ্ঞান ও দৃষ্টি নিতান্ত সীমাবদ্ধ ছিল। বৰ্ত্তমান যুগে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলে আমাদের জ্ঞান এসকল বিষয়ে যে বহুদূর অগ্রসর হইয়াছে এবং প্তাহীর ফলে ব্যবহারিক স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানের কাধ্যক্ষেত্র যে বহুপ্রসার লাভ করিয়৷ মানবজাতিকে রোগ ও অকাল-মৃত্যুর কবল হইতে রক্ষা করিeেtছ, ইহা কোন শিক্ষিত ব্যক্তির অবিদিত থাকিতে পারে না । আমাদের দেশে রোগের যে এত প্রাদুর্ভাব, আমাদের স্বাস্থ্য যে এত ইন, আমাদের মধ্যে অকালমৃত্যু যে এত প্রবল, তাহার কারণ কেবল আমরা ভারতীয় স্বাস্থ্যবিদ্যা-সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ বলিয় নহে । তাহার মূল কারণ---পাশ্চাত্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞানামুমোদিত স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়মাবলী সম্বন্ধে আমাদের অজ্ঞতা এবং তৎপ্রতিপালনে সম্পূর্ণ ঔদাসীষ্ঠ ও ও পরাভূখতা। আমরা এমনই নিৰ্ব্বোধ যে, যে জল আমরা পান করি তাহার সহিত মনুষ্য ও পশুর মলমুত্র মিশ্রিত হইবার যথেষ্ট সুবিধ কবিয়া দিই ; যে গৃহে আমরা বাস করি, তাহার চতুষ্পার্শ্বে আবর্জন সঞ্চিত রাখা ও জঙ্গল জন্মাইতে দেওয়া দোষজনক বলিয়৷ মনে করি মা ; কলের প্রভৃতি সাংঘাতিক রোগের প্রাদুর্ভাব হইলে পানীয় জলের পুষ্করিণীতে রোগীর বস্ত্র ও শয্যাদি ধৌত করা আপত্তিজনক বলিয়া মনে করি না। সংক্রামক রোগীর মলমূত্রাীি বিশেষ রূপে রিশোধিত ন হইলে ঐসকল রোগের বিস্তৃতি অনিবাৰ্য্য, ইহা আমাদের ধারণার মধ্যেই আসে না। ইহা বলা বাহুল্য, ষে, এই সকল বিষয়ে পাশ্চাত্য স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানমুমোদিত নিয়মাবলী সম্বন্ধে জ্ঞানের অভাব অথবা তৎপ্রতিপালন সম্বন্ধে ঔদাসীস্যহেতু আমাদের স্বাস্থ্যের আজ এই বিষম দুর্দশ । পুরাকালে ভারতবর্ষ ধৰ্ম্ময় স্তু, দর্শন, মনোবিজ্ঞান প্রভৃতি অন্ত অনেক বিষয়ে জ্ঞানের উচ্চ সোপানে উপস্থিত হইলেও জড়বিজ্ঞান, জীবাণুতত্ত্ব ও বীজাণুতত্ত্বের আলোচনায় বৰ্ত্তমান যুগ অপেক্ষা. যে অনেক পশ্চাৎপদ ছিল, তাহ অস্বীকার করিলে সত্যের অবমাননা করা হয় এবং অপ্রাকৃত স্বদেশপ্রেম ও অtয়শ্লtঘার পরিচয় দেওয়া হয় মাত্র । আলোচ্য গ্রন্থে অনেকস্থানে ইহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। ম্যালেরিয়ার উৎপত্তি-সম্বন্ধে গ্রন্থকার যে মত একাশ করিয়াছেন, তাহ নিতান্ত ভ্রমসকুল। বৰ্ত্তমান বিজ্ঞানলোকোদ্ভাসিত যুগে একজন শিক্ষিত ব্যক্তি যে এরূপ মত পোষণ ব৷ প্রচার করিতে পারেন, ত{হাই আশ্চৰ্য্য বলিয়। মনে হয় । তাহার মতে রক্ত দূষিত হইলে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু তন্মধ্যে আপনাআপনি উৎপন্ন হয় । বাহির হইতে আসে না । তিনি লিথিয়াছেন—ডাক্তারগণ “যাহাকে ম্যালেরিয়া বা কালাজ্বরের বীজাণু () বলিয়৷ থাকেন, সেই বীজাণু রোগীর শরীরের বাহির হইতে আসিয়া রোগীকে আক্রমণ করে না । উহার উৎপত্তি রোগীর শরীরের দূষিত রক্তের মধ্যে—কুচিকিৎসায় ও আহারাদির অনিয়মে রোগীর রক্ত দূষিত হইলে ঐ দূষিত রক্তে ম্যালেরিয়া ও কালাজ্বরের বীজাণু জন্মিয় থাকে।” এই বৈজ্ঞানিক যুগে যে-গ্রস্থে এরূপ ভ্রান্ত মত প্রচারিত হয়, তাহা দ্বার জনসমাজের উপকার না হইয়া অপকার হইবার কথা, কারণ এইরূপ ভ্রান্ত মতে বিশ্বাস স্থাপন করিয়া লোকে রোগ-প্রতিষেধের প্রকৃত উপায় অবলম্বন বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকিবার সম্ভাবনা । গ্রন্থকার কেবল কবিরাজ নহেন, তিনি একজন এম্-এ উপাধিধারী উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি। এরূপ অযুক্তি- - পূর্ণ আসার মতযদি প্রচারিত হইলে সাধারণের বুদ্ধি-বিভ্রম উপস্থিত হইয় অনর্থ ঘটিবার সম্ভাবন। এই দায়ীত্বজ্ঞান সম্পূর্ণ উপলব্ধি করিয়া উাহার মতো লোকের যে-কোন পুস্তক প্রচার করা কর্তব্য। পরিচ্ছদ সম্বন্ধে তিনি যে-সকল মত প্রকাশ করিয়াছেন, তাহও যুক্তি-সঙ্গত অথবা দেশকাল-পাত্র বিবেচনায় বর্তমান সময়ের উপযোগী নহে। তিনি দেশের লোককে একথানি মাত্র ধুতি পরিধান করিয়৷ মগ্ন গাত্রে থাকিতে উপদেশ দিয়াছেন এবং শীতকালে কেবলমাত্র ক্টোচার খুট অথবা পাতলা কাপাসবন্ত্র গায়ে দিয়৷ শীত কাটাইতে পারিলেই স্বাস্থ্যরক্ষার স্ববিধা হইবে, বলিয়াছেন। আমরা বিলাসৰাঞ্জক পরিচ্ছদ বা বস্তুবাহুল্যের একেবারেই পক্ষপাতী নহি । কিন্তু তাহ বলিয়া দেশকাল পাত্র বুঝিয়া ঋতুপযোগী আবশ্বক মত উপযুক্ত বস্ত্র ব্যবহার স্বাস্থ্যরক্ষার পক্ষে যে একান্ত আবশ্বক, তাহা আমরা বিশ্বাস করি এবং সেইরূপ উপদেশই লোককে দেওয়া সঙ্গত বলিয়া মনে করি। গ্রন্থকার ছাত্র ও অধ্যাপকগণকে বিদ্যালয়ে শুদ্ধ ধুতি ও উত্তরীয় ব্যবহার করিতে উপদেশ দিয়াছেন। তাহার মতে জাম, পায়জামা ইত্যাদি “অশ্বাস্থ্যকর পরিচ্ছদ্ধ পশমী জামা গায়ে দেওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে নিতান্তু অনিষ্টজনক । “e গীয়ে দিলে এ দেশে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়,” “জামা গায়ে দেওয়া ভ।