পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ స్క్రో অসমর্থ হইয়া, সমকক্ষ হইবার জন্য অন্যায় উপায়ে ধৰ্ম্মের ফিকির দেখাইয়া অগ্রসর হইবার চেষ্ট করিতেছেন, তখন ইউরোপীয় জাতির সমকক্ষ হইবার কথা তাহাদের মুখে শোভা পায় না। যে স্থলে আব্দার রহিম সাহেবের সাহায্যে মুসলমান যুবকগণ, শুধু মুসলমানগণ বাংলায় সংখ্যায় হিন্দু অপেক্ষ অধিক, এই দোহাই দিয়া অধিকসংখ্যক চাকুরী উপযুক্ততর হিন্দুদিগকে বঞ্চিত করিয়া পাইবার চেষ্টা করিতেছেন, সে স্থলে তাহার অন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যথার্থ ক্ষমতা দেখাইয়। অপর জাতির সহিত সমকক্ষত রক্ষা করিতে পারিবেন, এরূপ কল্পনা করাও বাতুলের কার্য্য। জনসাধারণের জন্য ও জনসাধারণের দ্বারা জনসাধারণের শাসন রহিম সাহেবের ইস্তাহারে দেখা যায়, যে, তিনি বলিতেছেন উপরোক্ত উদ্দেশ্ব সিদ্ধির জন্য আমরা বাংলার মুসলমানগণ, যাহাঁদের সংখ৷ এই প্রদেশে ২.৬•,••,• • •, বঙ্গীয় মুসলমান পার্টিতে সংগঠিত হইলাম। আমরা কোন সঙ্কীর্ণ সামাঞ্জিকত বা পুথক থাকিবীর ভাব হইতে এই পার্টি গঠন করি নাই। আমরা এক বিরাট সামাজিক সীমাবাদের উত্তরাধিকারী, আমাদের দৃষ্টি জাতিভেদ ও অস্পৃষ্ঠাতায় আবদ্ধ ও কলুষিত নয় এবং আমরা জনসাধারণের জন্য ও জনসাধারণের দ্বারা গভর্ণমেণ্টের কার্য পরিচালনার যে আদর্শ তাহ সফল করিবার জন্য আমাদের বিশেষ কর্তব্য আছে, এই বোধেই এই কার্যে ব্ৰতী হইয়াছি । আত্ম-প্রবঞ্চনার ইহা এক অপূৰ্ব্ব উদাহরণ। এই পার্টি গঠনের মূলে সঙ্কীর্ণতা ব্যতীত আর কিছু নাই বলিলেও চলে। যে সাম্যবাদের গৌরব রহিম সাহেব ও র্তাহার দলের অপরাপর লোকেরা করিতেছেন, ইসলামের সে সাম্যবোধ শুধু মুসলমানদিগের মধ্যেই আবদ্ধ। মুসলমানের সাম্যবোধ জগতের, এমন কি শুধু এদেশেরও, সকল অধিবাসীর সহিত নাই। মুসলমান অমুসলমানকে অতিশয় নীচ মনে করে—ইহাকে বিরাট সাম্যবাদ বলা যায় না। ইঙ্গ ব্যতীত বাংলায় মুসলমানদিগের ভিতরেও জাতিভেদ দৃষ্ট হয়, এবং কোন কোন নিম্নজাতির লোকেদের কুপব্যবহার নিবারণ ইত্যাদি সামাজিক অত্যাচারে মুসলমানেও যোগদান করিয়া থাকে। আবদার রহিম সাহেবের উদ্দেশ্য শুধু মুসলমান-প্রভুত্ব স্থাপন—দেশে সাধারণের জন্য ও সাধারণের দ্বারা গভর্ণমেণ্ট স্থাপন নহে। একথার সত্যতা প্রমাণ সহজেই হইবে। স্যর আবদার রহিমকে বলা যাউক, যে, মুসলমানগণ শুধু বাংলায় নহে, সকল প্রদেশেই সমগ্র জনসংখ্যার প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড সহিত মুসলমানের সংখ্যা তুলনা করিয়া সেই অনুপাতে চাকুরী পাইবে । তিনি কি এই বন্দোবস্তে রাজি হইবেন ? আমাদের তাহা বোধ হয় না। র্তাহার মতলব সকল দিক দিয়াই মুসলমানের প্রাধান্ত রক্ষা করা। যে স্থলে মুসলমানের সংখ্যা অধিক সে স্থলে তিনি বলিবেন, “সংখ্যার অনুপাতে আমাদের অধিক চাকুরী দেওয়া হউক।” আবার সংখ্যায় যে স্থলে তাহার ধৰ্ম্মাবলম্বীরা কম, সে স্থলে স্যর আবার আবদার করিবেন, “আমরা সংখ্যায় কম বলিয়া কি আমাদের কোনই দাবী নাই ? আমাদের স্বত্ব বজায় রাখিবার জন্য কিছু অধিক করিয়া চাকুরী দেওয়া হউক।” কথা এই যে, এই দ্বিতীয় দাবী প্রদেশবিশেষে সংখ্যায় নূ্যন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ইত্যাদির করিবে না কেন ? যদি অন্য প্রদেশে মুসলমানগণ সংখ্যায় অল্প হইলেও র্তাহীদের দাবী বজায় থাকে তাই। হইলে যে স্থলে তাঁহাদের সংখ্যাধিক্য আছে সে স্থলে অন্য ধৰ্ম্মাবলম্বীদিগের দাবী থাকিবে না কেন ? এই সবল কারণেই ধৰ্ম্ম দেখিয়া ভোট ও চাকুরীর বিভাগ আমরা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর বলিয়া মনে করি । এই দুষ্ট আদশের আমূল উচ্ছেদ প্রয়োজন। যে সকল কাবণে বাংলার মুসলমানগণ দৈন্য ও দুর্দশগ্রস্ত হইয়া আছেন, সে সকল কারণ দূর করা দরকার নিশ্চয়ই । কিন্তু এই কাৰ্য্য আরাম করিয়া ও আবদার করিয়া সিদ্ধ হইবে না। অপর ধৰ্ম্মাবলম্বীদিগের সহিত মুসলমানদিগকেও সমানে খাটিতে হইবে, লেখাপড শিখিতে হইবে এবং নৈতিক উন্নতি সাধন করিতে হইবে। * স্যর আবদারের ইস্তাহারের কয়েকটি ভাল কথা স্যর আবদার রহিমের ইস্তাহারে দুই চারিটি ভাল কথাও আছে। যথা, মুসলমান পার্টির উদ্দেশ্যের মধ্যে দেখা যায় : — মেষ্টন এওয়াড বা লডমেষ্টনের রাজস্ববিভাগ পাস্টাইয়া বাংলা ও সেন্টাল গভর্ণমেণ্টের রাজস্ব ভাগের ব্যবস্থার মধ্যে স্ববিচার আনয়ন ও এতদ্বার বাংলাকে উপযুক্তরূপে উন্নতির পথে অগ্রসর হইবার পক্ষে যথেষ্ট রাজস্ব বাংলা গভর্ণমেণ্টের হস্তে রাখার চেষ্টা করা । বাংলার অর্থনৈতিক উন্নতি প্রচেষ্টা এবং বাংলার স্বাস্থ্য উন্নত করিবার চেষ্টা ও গ্রামের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দান করা । বাংলার কৃষি ও ব্যবসাবাণিজের উন্নতির ব্যবস্থা করা। রায়তের প্রতি অবিচার দূরীকরণ ও তাহদের যাহতে জমী হইতে সহজে নিষ্কাসিত করা আর সম্ভব পর না হয় তাহার চেষ্টা করা এবং তাঁহাঙ্গের জীবনযাত্র প্রণালী উন্নততর कृश्न !