পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

en resn ) জীবনদোলা 8ミ○を বিশেষ পছন্দ করিতেছেন তাহা বলা যায় না । এখন হইতে তাহাকে যদি সাবধান না করা যায় তাহ হইলে যথাকালে সে যে র্তাহার মেয়ের মুখের পথে হঠাৎ বিঘ্নস্বরূপ হইয়া উঠিবে না তাহ কে বলিতে পারে ? আর তা ছাড়া শাস্থে দেশাচারে এতকাল যে কাজটা মানা করিয়া আসিতেছে, তাহার ভিতর কিছু গলদ আছে বৈকি ! মেয়েকে ভালবাসা দেখাইতে গিয়া বড়ঠাকুর ও দিদি না হয় আপন কল্যাণ অকল্যাণের কথা না ভাবিলেন । কিন্তু মৃণালিনী ময়ূনfর মা হইয় তাহার কল্যাণের কথাটা ত আগে না ভাবিয়া পারেন না । গৌরীকে লইয়। এত মাখমাখি তাহার যে ভাল লাগিবে না এবং সেইজন্য ভাস্থর ভায় রবি ও জ। সকলের প্রতিই যে র্তাহার মনটা বিরূপ হুইয়। উঠ:ব ই । আর বিচিত্র কি ? দিন যত ধনাইয়। আসিতে লাগিল ভাস্করের পরিবার-পরিজনের সহিত তাহার কথাবাৰ্ত্তা ততই সংক্ষিপ্ত ও গম্ভীর হইয়৷ উঠিতে লাগিল । তরঙ্গিণীর মন এবিষয়ে সজাগ ছিল, সুতরাং তাহার কিছুই বুঝিতে বাকী থাকিত না। কিন্তু কিছু করিবার উপায় ছিল না । গৌরীকেও বলিতে পাবেন না ছেলেবেলার সাথীদের হঠাৎ অ কারণে ছাড়িয়া নিজের ঘরে একল খেলাধূল করিতে, জাকেও বলিতে পারেন না। আপনার মেয়ের অকল্যাণের ভয়ে আত উতলা হুহয়; না উঠিতে । এই সমস্যার কি সমাধান করা যায় ভাবিয়া আকুল হইয়। তরঙ্গিণ যখন স্বামীর পরামর্শ লইতেছেন এবং সেই সঙ্গে ভাল করিয়া ন ভাবিয়াই হঠ করিয়া একটা কাজ না করিতে স্বামীকে উপদেশও দিতেছেন তখন অকস্মাৎ একদিন খবর আসিল স্বষ্টিধর কালই মেয়ে দেখিতে আসিবেন, সব ব্যবস্থা যেন করিয়া রাখা হয়। এমন আচম্ক আসিয়া পড়ার মধ্যে মেয়ে দেখ ছাড়া আর একটা উদ্দেশ্যও যে রহিয়াছে তাহা সকলেই বুঝিল এবং বুঝিয়া ভয়ও পাইল । কিন্তু ভয় পাইয়া বসিয়া থাকিবার আর সময় কই ? আয়োজন করিতে হইবে । ● পরদিন রাত না শেষ হইতে কাক-কোকিল ডাকিবার আগেই মৃণালিনী উঠিয়া লণ্ঠন জালাইয়। ঘরসংসার তদারক করিতে আরম্ভ করিয়া দিলেন। হুষ্টিধর স্বয়ং মেয়ে দেখিতে আসিবেন, তক্তাপোষের উপর সাদা ফরাস পাতিয়া ত তাহাকে বসিতে দেওয়া যায় না ; হরিসাধন বলিয়াছেন জরির কাজ করা চাদর ও মকমলের তাকিয়৷ চাই। গৃহিণী যদিও বলিলেন, “ওমা, জরি গায়ে ফুটবে যে,” তবু কর্তা তাহাকে তাড়া দিয়া আপনার জেদ বজায়. রাখিলেন। বাড়ীতে ভাল তাকিয়া দুটা ছিল, কিন্তু ওরকম, কোনো চাদর ছিল না। অগত্যা শেষ রাত্রে পুলিশের হাতে পড়িবার ভয় থাকা সত্ত্বেও জগু বেয়ারাকে নারিকেল ডাঙ্গায় ছুটিতে হইল লাবণ্যর বাপের বাড়ী হইতে একটা জরিদার আস্তরণ সংগ্ৰহ করিবার আশায়। নূতন কুটুম্বকে রূপার্বধানে হু কায় মুগন্ধি তামাক দিতে হইবে ; কিন্তু হরিকেশবের বাবার আমলের একমাত্র স্মৃতিচিহ্ন রূপার হু কাটি অব্যবহারে ভাড়ারে পড়িয়া কলঙ্কে এমন কালো হইয়া গিয়াছে, যে তাহা লোহা কি রূপা বোঝা যায় না । মৃণালিনী ভাগিনেয়ী শোভনার শেষ রাত্রির মুখ-নিদ্রাটি ভাঙাইয়া তাহাকে তেঁতুল দিয়া ছক মাজিতে বসাইয়াছেন । তাহার নিদ্রালস চোখে সে ভাল করিয়; না দেখিয়াই শিথিল হাতে ধসিয়া যাইতেছে, কলো কালো দাগগুলা তাহাতে উঠিবার কোনো লক্ষণ দেখাইতেছে না। মৃণালিনী আবার ব্যস্ত হইয় নিজে খানিকট খড়ি গুড়া লইয়া সেট। দ্বিতীয়বার ঘসিতে বসিলেন । জলখাবারের রূপার বাসন কতকগুলি তরঙ্গিণীর আলমারীতে তোলা ছিল, তাই সেগুলি বিশেষ কালে হয় নাই ; কিন্তু তাহাও ত বাহির করিয়া রাখা হয় নাই । অথচ ভাস্করের শয়নগৃহে গিয়া তিনি ডাকাডাকিই বা করেন কি করিয়া ? শৈলটাকেই বাধ্য হইয়া ঘুম হইতে টানিয়া তুলিতে হইল জ্যাঠাইমাকে ডাকিবার জন্য । সে ত কঁাদিয়া-চটিয়াই অস্থির, “দিদিকে দেখতে আসবে, তাকে পাঠাও না ; বারে, আমায় কেন মাঝ রাত্তিরে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলে ?” মা চটিয়া তাহাকে ঠাস করিয়া এক চড় বসাইয় দিলেন ;. “বেfকা মেয়ে, বড় মুখ হয়েছে তোমার না ? ফের একটি কথা বলবে ত নোড়া দিয়ে সব কটা দাত ছেচে দেব।” শৈল ঝাঝিয়া বলিল, “আমি যাবই না, মারো দেখি কেমন পার!” অকস্মাৎ তাহার সমস্ত ঘুম কোথায়