পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

898 মোসলেম জগতের ভাগ্য চক্রের সহিত আৰ্য্যাবৰ্ত্তের মোসলমানগণের ভাগ্যচক্রের কতটা সম্বন্ধ সংক্ষেপে তাহার আলোচনা করিয়। এ স্বদীর্ঘ প্রবন্ধের উপসংহার করিব । তিনটি স্বতস্থ শক্তি মানুষের ভাগ্যচক্র নিয়মিত করে। তন্মধ্যে প্রথম মানুষের জন্ম-এ স্ম-ক্ষেত্রের মাটি, জল, বায়ু, ফল, ফুল, ইত্যাদি অর্থাং নৈসর্গিক আবেষ্টন ( physical environnunu ) ; দ্বিতীয়, বংশগত ধতি বা প্রকৃতি ( heredily ). তৃতীয় শিক্ষা-দীক্ষ। এই শক্তিত্রয়ের মধ্যে প্রথম দুইটি একত্রে নিয়তি নামে অভিহিত হইতে পারে, কারণ শিখ দীক্ষার সহায়তায় ঐ দুটি শক্তির শাসন লক্ষণ করা সকল সময় অসাধ্য ন হইলেও দুঃসাধ্য। ইসলাম এক প্রকার শিক্ষা-দীক্ষ। পৃথিীতে যত প্রকার শিক্ষা-দীক্ষার রীতি প্রবর্হিত হইয়াছে তন্মধ্যে মানব চরিত্রের উপর ইসলামের প্রভাব সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রথর হুইলেও ইসলাম যে নিয়তির বন্ধন একেবারে ছিন্ন করিতে পারে একথা স্বীকার করা যায় না। ইসলাম নেসর্গিক আবেষ্টনের প্রভাব ধ্বংস করিয়া, বংশগত মতিগতি উন্মলিত করিয়া মক্কার কোয়ায়েশ সমাজে বনু হাসিম বংশের সহিত উন্মায় বংশের ঐক্য সাধন করিতে পরে নাই, ইস্পাম আরব দেশে বেদুইনকে কোরারেশের সহিত মিশাইতে পারে নাই,উন্মায়। খালিফার সমাজ্যে পারসীককে আরবের সহিত মিশাইতে পারে প্রবাসী-আষাঢ়, ১৩৩৩ ২৬ল ভাগ, ১ম খণ্ড নাই, আব্বাস খালিফার সাম্রাজ্যে তুর্ককে পারসীকের সহিত মিশাইছে পারে নাই । আমি এখানে শোণিত-মিশ্রণের কথা বলিতেfছন, সভ্যশুর মিশ্রণের কথা বলিতেছি, পুরুষ পরম্পরাগত মতি গতির সামঞ্জস্যের কপ বলিতেছি । কোরায়েশ সমাজে বসু হাসিম বংশীয় হজরত মোহম্মদের প্রধান প্রতিযোগী ছিলেন উন্মায় বংশীয় আবু মুকিয়ান । মোহম্মদের পর বনু হাসিমের নায়ক, মোহম্মদের খুল্লতাত পুত্র এবং জামাতা আলির প্রতিযোগী দাড়াইলেন আবু সকিয়ানের পুত্র মারিয়া। ইসলামের শিক্ষা, এবং মহাত্মা আবুবকরের ও রাজর্ষি ওমরের মহৎ দৃষ্টাস্ত কোয়ায়েশগণের পুরুষ পরম্পঃাগত দলাদলি মিটাইতে পারিল না । মোসলেম জগতের ইতিহাসে নিয়তির লীলা চলিতে লাগিল। আর্য্যাবর্ষের মাসলমানগণ যদি অতীতের এই ইঙ্গিত, নিয়তির নীতি বিস্তুত হয়েন, র্তাহাদের দহ যে গঙ্গা-যমুনা-সিন্ধুর ধারে বিগণিত, জননী-জন্ম-ভূমির স্তন্তে পরিপুষ্ট, তাহদের চিত্ত যে উত্তরাধিকারী-স্বত্ৰে আগত আর্যসভ্যতার ধারায় স্নাত, এই কথা বিস্তুত হইয়। যদি তাহার কেবল মোসলেম জগতের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া কাৰ্য্যক্ষেত্রে অগ্রসর হয়েল, তবে তাহার যে উন্নতির পথে বেশী দূর অগ্রসর হইতে পরিবেন, এমন মনে হয় না । সত্যেন্দ্র প্রসঙ্গ শ্রী সুরেশচন্দ্র রায়, এম-এ কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত আজ তিন বৎসর হইল ইহলোক ত্যাগ করিয়াছেন । , তাহার দান বাংলা সাহিত্যের একটি মণি-কোঠা উজ্জ্বল করিয়া রাখিয়াছে । বাংলা সাহিত্যের প্রতি তাহার একনিষ্ঠ প্রেমের গভীরতা কতখানি ছিল, তাহার স্থান বাংলা সাহিত্যের দরবারে কোথায়, তাহার বৈশিষ্ট্য কি—এসব যথাক্রমে নানা আলোচনার ভিতর দিয়া ফুটিয়া উঠিবে আশ করা যায়। আজ হঠাৎ তাহ নিদেশ করিবার চেষ্টা করা উচিত হইবে না । বছরে বছরে অনেক বর্ষার পলি পড়িবে, অনেক কিছুই ধুইয়া মুছিয়া যাইবে, কালের মাপকাঠি তাহার পর একদিন জানাইয়া দিবে যে, তাহার স্থান কোথায় । ভবিষ্যতে যিনি রবীন্দ্ৰ-যুগ-সাহিত্যের ইতিহাস লিথিবেন এ গৌরবময় গুরুভার তাহাকেই লইতে হইবে। কারণ রবীন্দ্রযুগে রবীন্দ্রশিষ্য সত্যেন্দ্রনাথ একটি বিশিষ্ট আসন দখল করিয়াছিলেন। দেশের ও বিদেশের এমন অনেক কবি ও সাহিত্যিকের নাম করা যাইতে পারে, পরিণত বয়সে ক্ষমতার বিকাশের সঙ্গে-সঙ্গে নানা ধারায় র্যাহাদের লেখনী-মুখে মাধুর্য্য ঝরিয়া পড়িয়াছে,—র্তাহাদের বাল্যে বা কৈশোরে সে উৎস কোথায় লুকান ছিল এবং কি উপায়ে কখন কোন সাহচর্য্যে তাহার মুখ খুলিল, তাহাদের জীবনী আলোচনা করিয়া জানিতে পারা গিয়াছে । সে-যোগস্বত্র খুজিয়া বাহির করিতে পারিলে, কবির মৰ্ম্মকথাটি বুঝিতে পারা অনেকটা সহজ হইয়া আসে। উত্তর কালে প্রতিভার অম্লানদীপ্তিতে যে জীবন মহিমামণ্ডিত হইয়াছে বাল্যে সে প্রতিভার বীজ কোথায় ংগোপনে ছিল এবং কোন অমুকুল পারিপাশ্বিক অবস্থার উষ্ণ-উত্তাপে বীজ গাছে বাড়িয়া উঠিয়াছে ইহা চিরদিনই সাহিত্যক্ষেত্রে আলোচনার সামগ্রী, ইহাতে কবির ঠি। স্বরূপ ধরিবার সাহায্য হয় । তাহা