পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

82や সে বললে—তোর প্রবাল ঠাকুরপোর কি বড় বড় চোখ সষ্ট, মানুষকে যেন গিল্তে আসে ।” প্রিয় হেসে বললে—“চোখ দুটে। তার খুব ডাগর বটে ! তোর দিকে বিয়ের সময় বরধাত্র এসে খুব চেয়ে চেয়ে দেখ ছিল, তাই বুঝি বলছিস । তা ভাই মাত্য সে ভারী ভালো, তার চাউনীর অন্য কোনো অর্থ নেই। সে স্বন্দর জিনিষ দেখতে খুব ভালবাসে, তুই কত সুন্দর, তlষ্ট বীর বার দেখ ছিল । নইলে তার মন বড় সরল ” সেবা উত্তর দিলে না। একটু থেমে প্রিয় বললে— “সত্যি সই, তোর সঙ্গে যদি প্রবাল ঠাকুরপোর বিয়ে হ’ত কী ভালই হ’ত, দুই সইএ কেমন একজায়গায় থাকৃতাম—, প্রিয় আর কথাটা শেষ করতে পারলে না, পুকুর পাড় থেকে সেলার মা তীক্ষ কণ্ঠে ডাক দিয়ে বলেন,—“হ্যারে সেবা এক বুক জলে বেহু স হয়ে দাড়িয়ে এত কিসের গল্পরে ? বাড়ীতে বসে গল্প করলে কি ত’ত না ? প্রিযু তার ম যে বাড়ীতে তোকে ডাকৃছেন, ছোট ভাইটি দিদি দিদি করে খুঁজে বেড়াচ্ছে। উঠে আয় নাম, নতুন জলে এতক্ষণ ক’রে গ৷ ভিজিয়ে অম্লখ করতেও ত পারে। দুই সই তাড়াতাড়ি তখন স্নান সেরে নিয়ে পুকুর পাড়ে উঠে পড়ল। আট বছর চার পরের কথা—কেদার চাকরী নিয়ে বীরভূমে বদলী : 'য়ে এসেছে । প্রিয় এখন শুধু কেদারের ‘প্রিয়া’ নয় সে এখন থোকাথুকির মা । মাঝখানে ঘটনা ও অনেক ঘটে গেছে, স্বদেশী হাঙ্গাম। সমস্ত ভারতবর্য, বিশেষ ক’রে বাঙ্গলাদেশকে যে কেমন ক’রে চমকে দিয়েছিল তা সবাই জানেন । নরেন গোসাইএর হত্য, কানাই, সত্যেন আর ক্ষুদিরামের ফাসী দেশের মনে একটা মস্ত আতঙ্ক এনে দিয়েছিল । পুলিশ কৰ্ম্মচারীদের মধ্যে দু এক জনের গুপ্ত-হত্যার ফলে কেদারের ম| বার বার ক’রে ছেলেকে চাকরীতে ইস্তফা দিয়ে ঘরে থাকার জন্তে অতুরোধ করেন । অগত্য কেদার বিনা বেতনে দুই বৎসর ছুটি নিয়ে বাড়ীতেই বসে থাকে। তারপর চারদিক বেশ শাস্ত স্বস্থির হয়ে উঠলে সে আবার চাকরী নিয়ে অস্থায়ী ভাবে দু এক জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এইবার স্থায়ীভাবে কিছু দিনের প্রবাসী--আষাঢ়, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড জন্যে বীরভূমে বদলী হয়ে এসেছে। সঙ্গে স্ত্রী পুত্রও নিয়ে এসেছে । কেদারের বাবা ইতিমধ্যে স্বৰ্গ লাভ করেছেন, প্রিয় ছেলেমেয়ের মা হ’লেও এতদিন শ্বশুর বাড়ীর বউ তার বাপের মেয়ে হয়েই বাস করছিল, এবারে সে সংসারের গিল্পী ত’য়ে এসেছে । বিশেষ ক’রে বীরভূম অঞ্চলে চোদ্দ বছরের বধূদেরও গিন্নি ত্যাখ্যা পাওয়াট ভারী সহজ । গুচস্বামী নবীনই হোন আর প্রবীণই হোন দাসদাসী থেকে পাড় প্রতিবাসী সবাই তাকে কৰ্ব বিশেষণটি দিবেষ্ট। ঘরে তার বয়স্ক ম থাকলেও তিনি কৰ্ত্তার মা ব’লেই পরিচিত হবেন, আর বাড়ীর বালিকা বধুই তার গৌরবহচক “গিন্নি" নামটি লাভ করবে। ছোট ছোট বউ-বির। যদি চ এ-নামটি মোটেই পছন্দ করে ন| প্রিয় নতুন জায়গায় এসে নতুন দাসী জয়ায় কাছে গিন্নি সম্ভাষণ শুনে ত হেসেই অস্থির । জয় তার হাসি দেখে একটু থতমত খেয়ে জিজ্ঞেস করলে —“কি হ’ল ঠাকরুণ হাস্চেন কেন ?” একে গিন্নিতে রক্ষে নেই, তার ওপর ঠাকুরুণ, আবার এক চোট হেসে নিয়ে প্রিয় বললে—“ওগো বাছা, আমি বাড়ীর গিন্নি নই।” জয় একটু চমকে উঠে বললে,—“ত হ’লে গিন্নি কই ? ? কৰ্ত্তা আপনার কে হন তবে ?” পাড়ার বাবুদের নন্দ বলে একটি মেয়ে তার ছোট ভাইকে কোলে নিয়ে বেড়াতে এসেছিল, সে ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলাতে প্রিয় গিন্নি নামটিই মেনে নিলে । দিনকতক বীরভূমের নতুন উচ্চারণ আর শব্দগুলি শুনতে ও বুঝতে প্রিয়র ‘ভারী কৌতুক বোধ হ’তে লাগল। নতুন ঘরকন্নার গৃহস্থালী গোছাতেও সে ভারী ব্যস্ত রইল। বধূর সাজ খুলে ফেলে অনভ্যস্ত গৃহকত্রীর পোষাকটা গায়ে জড়িয়ে সেটাতে খাপ খাওয়াতে গিয়ে তার আনন্দের সীমা ছিল না। তারপর প্রতিবাসি*ীরা একে একে এসে আলাপ পরিচয় ক’রে যেতে লাগলেন । প্রিয় জয়ার কাছে তাদের পরিচয় একে একে জেনে নিয়ে পালটে তাদের বাড়ী যেতে লাগল। এমনি ক’রে কয়েক বাড়ী যাওয়া আসার স্বত্রে অনেকের সঙ্গেই আলাপ জ’মে উঠল। তার মধ্যে