পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখf ] ধ্রুবতার & e (t ম{{ার চেয়ে বড় নয় । তার সম্ভাবনাও আমাদের *য়েছিল, তবু জ্যাঠামশায় পাচটা টাকা দিয়ে আমাদের সাহায্য করেননি, আর তোমার আশা, যে জাত যাচ্ছে বল্লেই অমনি এক থেকে তোমায় তিন শ’ টাকা দিয়ে ফেলবেন । কথা দেওয়াটা তোমার উচিত হয়নি। জাত ত যাবেই, তার উপর অপমানও ラび不 " তাহার মা ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, “কথা দেব না ত কপূব কিরে, বে-আঙ্কেল ছুড়ি ? সব কথায় তোর কথা বল কেন ? এমন বেহায় মেয়েও বাপের জন্মে দেখিনি।’ সরযু পুনৰ্ব্বার একটুখানি হাসিয়া চলিয়া গেল। রান্নাঘরের হাড়িকুড়ি এতক্ষণ তাহার পথ চাহিয়া বসিয়া ছিল। সে এখন তাহারই তদারক করিতে বসিল । বিবাহের দিন স্থির হইয়া গেল এবং তাহদের গণস্থায় যতটুকু সম্ভব সে রকম আয়োজন চলিতে লাগিল, অর্থাৎ প্রায় কোনে আয়োজনই হইল না। অতি দস্তাদরের একটি চেলীর দশহাত শাড়ী আসিল । প্রতিবেশিনী মুকুমারী দয়া করিয়া একটি লাল ব্লাউস উপহার দিল। সরযুর মায়ের হাতের দুগাছি সরু :{লই হইল তাহার একমাত্র স্বর্ণালঙ্কার । সতীশ চাহিয়া iচন্তিয়া, একরকম ভিক্ষা করিয়াই একশত টাক। ধার পরিল, বরযাত্র খাওয়াইবার জন্য । কিন্তু বরপণের তিন শত টাকা কোনো উপায়েই জোগাড় করা গেল না। তবুও সরযুর মা সম্বন্ধ ভাঙিতে কিছুতেই রাজী হইলেন না। কোন অসম্ভবের আশায় জানি না, তিনি সতীশ সরযু সকলের সঙ্গেই ঝগড়া করিয়া সম্বন্ধ বজায়ই রাথিলেন । সরযু দিন দিন শুকাইয়া কাঠ হইয়। উঠিতে লাগিল, কিন্তু তাহাতে সহানুভূতির বদলে তাহার অদৃষ্টে জুটিল গfলাগালি । সতীশ হয়ত বা বোনের হৃদয়ের কথ খানিকট বুঝিতে পারিয়াছিল, কিন্তু সংসারের অভাবের হিত যুদ্ধ করিতেই তাহার সকল শক্তি শেষ হইয়া খাসিয়াছিল, মায়ের সহিত যুদ্ধ করিবার আর তাহার শক্তি ছিল না। ( ৩ ) “ম, এইবার তুমি সামূলাও, আমার দ্বার। আর হয়ে উঠবে না। তুমিই এ বিপদ বাধিয়েছ, এখন তুমি যেমন ক’রে পার ব্যবস্থা কর।” মা তখন কপাল চাপড়াইয়। কঁাদিতে ব্যস্ত। ঘরের কোণে লাল চেলীর কাপড়ে সজ্জিত। সরযু চুপ করিয়া বসিয়া আছে। তাহার জাত গেলে, তাহার আপনার হৃদয়ের ধৰ্ম্ম রক্ষা হয়। কোনটা যে তাহার স্পৃহণীয় তাহাই যেন সে নির্ণয় করিতে ব্যস্ত ছিল। বিবাহের লগ্ন গভীর রাত্রে, নিমন্ত্রিতের সংখ্যাও বিশেষ কিছু নাই, বাড়ী একরকম নিঃকুম। বরযাত্রীর দল বর লইয়। আসর ত্যাগ করিয়া গিয়াছে, কারণ তাহাদেব প্রতিশ্রুত টাকার এক পয়সাও তাহাদের দেওয়া হয় নাই। অবশু তাহারা পাড়া ত্যাগ করিয়া যায় নাই, কয়েকট বাড়ী পরে, একই রাস্তার উপর আর একটা বাড়ীতে তাহার। অপেক্ষা করিতেছিল, তাহাদের আশা ছিল যে, চাপ দিলেই বিধবার লুকানো পুজি হইতে টাকা বাহির হইয়৷ আসিবে। সতীশের কথায় তাহার মা কান্নার মুর আর এক পদ চড়াইয়। বলিলেন, “আমি মৃেয়েমানুষ, কোথা দিয়ে কি করব ? তুই এত বড় বেটাছেলে ধবে থাকৃতে জাতট। মারা যাবে ? বাপ নেই মেয়ের, তুই বড় ভাই ত রয়েছিস ? তোরই ত এখন দায় ।” সতীশ চাপ। গলায় গর্জন করিয়া বলিল, “উৎপাত বাধাবার বেল ত কোনে বড় ভাইয়ের ডাক পড়েনি, এখনই তোমার সে কথা মনে পড়েছে। হাজার বার বারণ করিনি তোমায় এ সম্বন্ধ করতে ! আমার কি আছে যে এখন এ দায় থেকে উদ্ধার হব ? এক আমায় কিনে নিয়ে যদি কেউ টাকা দেয় । তারই চেষ্টায় চললাম।” সতীশ বাহির হইয়া গেল। সরযু বলিল, “কি সৰ্ব্বনাশই করলে মা। এর চেয়ে জাত যাওয়াই ভাল ছিল। দাদা কোথায় গেল জান ?” মা কাদিতে কঁদিতে বলিলেন, “কোথা থেকে জানব?”