পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&లిపి প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৬ ২৬শ ভাগ, ১৯ খণ্ড ৬ । এই সন্মিলনী বাঙ্গালার হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে বিদ্বেষ-বহ্নি জ্বলিয়া উঠিয়াছে তাহার জন্য অস্তিরিক ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করিতেছে এবং ইহা স্থির করিতেছে যে, বাঙ্গলার হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সত্তাৰ স্থাপিত হইয়। উভয় ধৰ্ম্মাবলম্বী সাম্প্রদায়িকত (Communalism) ত্যাগ করিয়া জাতীয়তার { Nationalism ) ভাব লইয়া একযোগে জাতীয় উদ্বোধনের কার্য্য না করিলে বাঙ্গtলায় স্বরাজ স্থাপন হওয়া অসম্ভব । অতএব সিরাজগঞ্জ হিন্দু-মুসলমান চুক্তিপত্র ( Hindu-Moslem Pact) সম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বলিয়া এই সন্মিলনী উক্ত চুক্তিপত্র বর্জন করিতেছে। কৃষ্ণনগরে অন্যান্য সভা-সমিতি— গত মাসে কৃষ্ণনগরে শ্ৰীযুক্ত নিৰ্ম্মলচন্দ্র চক্সের সভাপতিত্বে বঙ্গীয় ছাত্রসম্মিলনী ও ত্রযুক্ত উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে বঙ্গীয় যুবক সন্মিলনীর অধিবেশন হইয়াছিল। বাংলার যুবকগণকে লক্ষ্য করিয়া শ্ৰীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ তাহার অভিভাষণে বলিয়াছেন – “সমাজকে এমন করিয়া নুতন ভাবে গড়িয়া তুলিতে হইবে যাহতে সমাজে নুতন প্রাণের সঞ্চার হয়, সমাজ আত্মরক্ষা করিতে সামর্থ্য লাভ করিতে পারে। ইহাই সমাজ-সেবার প্রকৃত উদ্দেষ্ঠ । যেখানে এই প্রকৃত উদ্দেশ্বের অভাব, সেখানে বস্তা-বা দুর্ভিক্ষ-পীড়িত লোকদের দুঃখের লাঘব করিয়া আত্মতুষ্টি বা আত্মার সগদতি হয় ত হইতে পারে, কিন্তু সমাজের স্থায়ী উপকার হয় না । সমাজকে সবল ও আত্মরক্ষণসমর্থ করিয়া তুলিতে পারিলে প্রকৃত রাজনীতি চর্চার ফরণ হইবে ও এতদিনের পরাধীনতার গ্লানি কাটিয়া যাইবে । এইভাবে সমাজসেব। যদি এই সন্মিলনীর উদ্দেশ্য হয়, তাহ হইলে ভগবানের নিকট প্রাথন করি, যেন তিনি আপনাদের শরীর, মন ও বুদ্ধির মধ্যে শক্তির ধারা প্রবাহিত করেন। লক্ষ্য যদি আপনাদের স্থির হয়, সংকল্প যদি দৃঢ় হয়, তাহা হইলে নিষ্ফলকাম হইবার কোনই কারণ নাই। জগঙে এমন কোন বাধাই নাই যাহা সাধনার বলে অতিক্রম করা যায় না।” ঢাকা জেলা সম্মিলনী— গত মাসে শ্ৰীযুক্ত সরোজিনী নাইডুর সভানেতৃত্বে ঢাকা জেলা সন্মিলনীর অধিবেশন হইয়া গিয়াছে। অভিভাষণে খ্ৰীযুক্ত নাইডু বলিয়াছেন—হিন্দু জাতির সংহতি-শক্তি নাই, হিন্দুদের সংগঠিত হওয়৷ উচিত। মুসলমানদের সংগঠিত হওয়া কৰ্ত্তব্য, তবে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মহে,-যে-দেশে উভয় সম্প্রদায়ের লোকদিগকে একত্রে বাস করিতে হইবে, সেই দেশের কার্য্য উভয়কেই করিতে হইবে। খদর সম্বন্ধে শ্ৰীমতী নাইডু বলেন, পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ বয়ন-শিল্পকাৰ্য্যে ঢাকার অধিবাসীবৃন্দের অঙ্গুলির কৌশল দেখান উচিত। সভানেত্রী অস্পৃষ্ঠত নিবারণ জন্ত সকলকে অনুরোধ করেন। এই অধিবেশনে নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলি গৃহীত হইয়াছে – এই কনফারেন্স দেশবন্ধু দাশ, স্তীর স্বরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্তার কে জি গুগু, রাজা শ্ৰীনাথ রায় ও বাবু ভুপেন্দ্রনাথ বস্বর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করিতেছে । যে-সকল ব্যক্তিকে অর্ডিনান্স, ও ৩নং রেগুলেস অনুসারে আটক রাখা হইয়াছে, তাহদের প্রতি সন্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন এবং ঐসকল যুবককে বিন বিচারে আটক রাখার জন্ত গবৰ্ণমেন্টকে নিন্দ করা বাইতেছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামী হইতে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়কে বিরত থাকিতে অনুরোধ করা হইয়াছে এবং উভয়দলের নেতৃগণ হিন্দু भूशलमान गमञ्च भभाषाप्नद्र अछ अश्रृङ्गक इश्ब्राप्श्न । অপর এক প্রস্তাবে অস্পৃপ্ততা দোষ নিবারণ, খদ্দর পরিধান, স্বদেশী পরিধান, স্বদেশী দ্রব্যাদি ব্যবহার, প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের চেষ্টা, কুপ খনন প্রভৃতি দেশহিতকর কাৰ্য্যের জগু অমুরোধ করা হইয়াছে। সৰ্ব্বশেষে বৰ্ত্তমান কলিকাতার হাঙ্গামায় র্যাহার প্রাণত্যাগ করিয়াছেন তাহাদের জন্ত শোক প্রকাশ করা হইয়াছে। স্মৃতি-বাধিকী— - গত মাসে পরলোকগত আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও আশুতোষ চৌধুরীর দ্বিতীয় স্মৃতি-সভার অনুষ্ঠান হইয়াছে। পরলোকগত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ডেঞ্জস্বিতী, স্বদেশপ্রেম, নিৰ্ভীকতা ও অসাধারণ পাণ্ডিত্য বাংলার জাতীয় জীবনের সম্পদূরূপে জাজ্বল্যমান রহিয়াছে। পরলোকগত আশুতোষ চৌধুরী মহাশয়ের বিদ্যবিত্ত অসাধারণ ছিল । উাহীর বাণী “পরাধীল জাতির রাজনীতি নাই" জগতে আমাদের স্থান নির্দেশ করিয়া দিয়াছে। ভারতীয় সঙ্গীতের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাহার অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্ত ও বাংলার কৃষ্টির মূৰ্ত্তিমান বিগ্ৰহরুপে তিনি চিরকাল আমাদের পুজা পাইবেন। এই দুই তেজস্বী পুরুষের চরিত্র যতই আলোচিত হইবে আমাদের ততই মঙ্গল। শীঘ্রই ইহাদের স্থায়ী স্মৃতি-রক্ষার ব্যবস্থ হওয়া বাঞ্ছনীয়। হিন্দু-মুসলমান— বাংলার মফঃস্বল হইতে প্রত্যহ হিন্দুদের দেবমূৰ্ত্তি ভাঙ্গার অর্থব মন্দির অপবিত্র করার সংবাদ আসিতেছে। পুৰ্ব্ববঙ্গের মৈমনসিংহ, নোয়াখালী, বরিশাল, উত্তর-বঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুপ্রধান স্থানসমুহ হইতে এইরূপ পৈশাচিক লীলার সংবাদ পাওয়া গিয়াছে। মুসলমান মোল্লারাও নানা স্থানে হিন্দুবিদ্বেষ প্রচার করিতেছে বলিয়া প্রকাশ । সহযোগী আনন্দবাজার এই সম্পর্কে মৈমনসিংহের কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করিয়াছেন। তাহতে প্রকাশ, “সমস্ত জিলা জুড়িয়া যে-ভাবে নিত্য একই ভাবে মন্দিরাদি ধ্বংস হইতেছে, তাহাতে সকলেরই এই বিশ্বাস দৃঢ়মূল হইতেছে যে, শিক্ষিত মুসলমানগণ অজ্ঞ গ্রাম্যমুসলমানদের দ্বারা এইসমস্ত কাৰ্য্য করাইতেছে। মোল্লা-মৌলবীগণ, বিশেষতঃ নোয়াখালী জিলার মৌলবীগণ এই জিলার গ্রামে গ্রামে হিন্দু-বিদ্বেষ প্রচার করিয়৷ বেড়াইতেছে।” দুৰ্ব্বত্তদের অত্যাচার কেবল হিন্দুর মুর্ষি ও মন্দির ভাঙ্গাতেই শেষ হইতেছে না। তাহারা পুতন নুতন উপায় তাহদের পাশবিক প্রবৃত্তি চরিতার্থ করিতেছে। প্রকাশ, ‘সিরাজগঞ্জের সন্নিহিত বালিয়াজান গ্রামে জনৈক মুসলমান গো-হত্যা করিয়া তাহার নাড়ীভুড়ি ফেলিয়া নমঃশূদ্রদের কূপগুলি অপবিত্র করিয়াছে। এই কূপগুলিই পানীয় জলের জন্য নমঃখুদ্রদের একমাত্র সম্বল।" ংলা সরকার এসব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি দিতেছেন বলিয়া মনে হয় না। কারণ, অত্যাচার দিন দিন বাড়িয়াই চলিয়াছে। সম্প্রতি বাংলা গবর্ণমেণ্ট এই সম্বন্ধে এক ইস্তাহার প্রকাশ করিয়া সংবাদপত্রগুলির স্বন্ধে সমস্ত দোষ চাপাইয় দিয়া নিশ্চিন্ত হইবার চেষ্টা করিয়াছেন। সরকারী ইস্তাহারে প্রকাশ–“অনেক ক্ষেত্রেই যে-সব স্থানে ঐ-সব ব্যাপায় ঘটিতেছে, সেইসব ব্যাপারের প্রতি তথাকার লোকের যতটা দৃষ্টি আকৃষ্ট ন হইয়াছে, সংবাদপত্রে তদপেক্ষ অধিক দৃষ্টি আকৃষ্ট হুইয়াছে, এবং যে-সব দেবমূৰ্ত্তি ভঙ্গ হইয়াছে, বা স্থানান্তরিত হইয়াছে, সেগুলির অধিকাংশই এইরূপ দেবমুত্তি, যেগুলি একদিন পুজার পর বাঙ্গলার কোন-কোন অঞ্চলে জলে বিসর্জন করা হইয় থাকে, কিন্তু কোন-কোন অঞ্চলে পরবর্তী উৎসব পর্য্যস্ত অরক্ষিত অবস্থায় ফেলিয়া রাখা হইয়া থাকে স্বতরাং ইহা সহজেই বুঝা যাইতে পারে যে, ঐরূপ ক্ষেজে গোপনে ঐসৰ দেৰমূৰ্ত্তি অপসারণে কিম্ব ভঙ্গ করতে ৰাধা দেওয়া