পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| N ইংরেজ গবর্ণমেণ্ট ও হিন্দু সম্প্রদায় ইংরেজ গবর্ণমেণ্ট, ভারতবর্ষের সমুদয় ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি সমান ব্যবহার করিবেন, এই দাবী ন্যায়সঙ্গত এবং সৰ্ব্বদাই করাও উচিত। কিন্তু এরূপ অপক্ষপাত ব্যবহার আশা করা উচিত নয়। তাহার কারণ অনেক । ভারতবর্ষের অধিকাংশ লোক হিন্দু। মুসলমানরা সংখ্যায় কেবলমাত্র হিন্দুদের চেয়ে কম। শিক্ষায়, বাণিজ্যে, কলকারখানায় ও কুটীরে শিল্পদ্বারা পণ্যদ্রব্য উৎপাদনে, সাহিত্য, বিজ্ঞান এবং ললিত কলা ইত্যাদিতে মুসলমানের হিন্দুদের চেয়ে অগ্রসর নহে। সংখ্যাধিক্যবশতঃ এবং এইসকল কারণে ভারতে হিন্দুদের একটা স্বাভাবিক প্রাধান্য আছে । তাহার উপর যদি ইংরেজ সৰ্বকার সরকারী চাকরীতে নিয়োগের এবং ব্যবস্থাপক সভা প্রভৃতিতে প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচনের ব্যবস্থা কেবলমাত্র যোগ্যতা অনুসারে করেন, তাহা হইলে হিন্দুদের এই > প্রাধান্য আরও বাড়িবে। কিন্তু যাহারা সংখ্যায় বেশী, তাহাদের প্রাধান্য না বাড়াইয়া কমানই ইংরেজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আবশ্বক। এইজন্য সরকারী ব্যবস্থা এরূপ হইয়াছে, যে, সকল প্রদেশেই যোগ্যতর হিন্দু থাকিতেও বিস্তর অপেক্ষাকৃত অযোগ্য মুসলমান চাকরী পাইয়াছে ও প্রতিনিধি হইয়াছে। ইহার ফলে যোগ্যতর হিন্দুদের প্রতি অবিচার হইয়াছে, দেশ যোগ্যতম লোকদের সেবা হইতে বঞ্চিত হইয়াছে, এবং হিন্দুদের প্রতি অবিচার হওয়ায় তাহাদের ও মুসলমানদের মধ্যে মনোমালিন্ত জন্মিয়াছে। - শেষোক্ত ফলটি ইংরেজের ভেদনীতির পরিপোষক। ভারতবর্ষের সকল ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে ঐক্য হইলে এবং হিন্দুদের সকল জাতের লোকদের মধ্যে ঐক্য یئتلئنالائ!!!!!!!!! 丽* ! - }} * } ས་ཆའོ། ། k a of হইলে ইংরেজের প্রভুত্ব টিকিতে পারে না। এই কারণে ভেদনীতি অবলম্বন দ্বারা ঐক্যের পথে বিশ্ন উৎপাদন ইংরেজদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আবশ্যক। কিন্তু আমাদের চেষ্টা ঠিক ইহার বিপরীত হওয়া উচিত। ইংরেজরা এইরূপ ভাণ করেন, যে, তাহারা মুসলমানদের নিকট হইতে, দিল্লীর বাদশাহের নিকট হইতে,ভারতবর্ষের রাজত্ব পাইয়াছেন বা কাড়িয়া লইয়াছেন। প্রকৃত ঐতিহাসিক সত্য এই, যে, ইংরেজ-রাজত্বের ভিত্তিস্থাপনের সময়ে দিল্লীর বাদশাহ সাক্ষীগোপাল মাত্র ছিলেন ; মরাঠারাই তখন দেশে প্রবলতম শক্তি। বড় বড় যুদ্ধ তাহাদেরই সঙ্গে হইয়াছিল। ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম কোণে অন্য প্রবল শক্তি ছিল শিখদের। তাহাদের সঙ্গেও ইংরেজকে খুব লড়িতে হইয়াছিল। উত্তর ভারতে হিমালয়ের নিকটবৰ্ত্তী স্থান-সকলেও ইংরেজদের বড় যুদ্ধ মুসলমানের সঙ্গে হয় নাই, হইয়াছিল গুর্খাদের সঙ্গে। তা ছাড়া, ইহাও মনে রাখিতে হইবে, যে, কোন সময়েই মুসলমানের সমগ্র ভারতবর্ষের রাজা হয় নাই । এইসব কারণে ইংরেজরা বেশ জানে, যে, তাহীদের রাজত্ব যখন স্থাপিত হয়, তখন মুসলমানরা ভারতের প্রবলতম সম্প্রদায় ছিল না, হিন্দুরাই প্রবলতম ছিল। তাহার মানে এই, যে, মুসলমানদের ভারতবিজয়ের কুফল তখন হিন্দুরা কাটাইয়া উঠিতেছিল এবং মুসলমানরা তখন হীনবল হইয়া গিয়াছিল। ইংরেজ-রাজত্বেও হিন্দুর যতদিকে যতটা উন্নতি করিয়াছে, মুসলমানের ততট। করে নাই। সুতরাং যোগ্যতমের আদর করিলে সংখ্যা ভূয়িষ্ঠ হিন্দুদিগকেই আরও প্রবল করা হইবে। ইহা ইংরেজের স্বার্থরক্ষার অমুকুল নহে। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে হিন্দুদের পরাজয় হওয়ায়