পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখf ] মুসলমানরা তাহদের দাবীকে যোগ্যতা বা অবাধ প্রতিযোগিতায় কুত্তকাৰ্য্যতার উপর স্থাপিত করিতে পারে নাই। তাহাদের “রাজনৈতিক গুরুত্ব” প্রভৃতি লম্ব চৌড় কথা যাহাই হউক, প্রকৃত প্রস্তাবে তাহারা ইংরেজের অনুগ্রহই চাহিয়াছে। যাহারা আবদার করে ও অনুগ্রহ চায়, তাহাদিগকে মানুষ নাপছন্দ না করিতেও পারে ; কিন্তু যাহারা ন্যায্য দাবী বলিয়া কিছু চায় এবং অবাধ প্রতিযোগিতার পথ দিয়া নিজেদের সমকক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করিবার স্পৰ্দ্ধ রাখে, তাহাদিগকে প্রীতির চক্ষে দেখা বা তাহাদের ‘বেয়াদবী’ সহ করা সহজ নহে । এইরূপ নানা কারণে ইংরেজ হিন্দুমুসলমানের মধ্যে অপক্ষপাতিতা করিতে পারে না । তাহার উপর, ইংরেজের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা নির্বাহ মুসলমানদের উপর নির্ভর করে। তাহদের বাবুচি, খানসাম প্রভৃতি ভূত্য সাধারণতঃ মুসলমান। জাতিভেদ বশতঃ নিম্নশ্রেণীর হিন্দুরাও এইসব কাজ সচরাচর করে না } অবগু, ইংরেজ-শাসন-কালে কখন কথন মুসলমানদের প্রতি ইংরেজরা বিরূপও হইয়াছে । কিন্তু তাহা ঘটিয়াছে তখনই যখন মুসলমানের সাক্ষাৎ বা পরোক্ষভাবে ইংরেজের রাষ্ট্ৰীয় প্রভুত্বের বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছে। সিপাহী বিদ্রোহের পর ইংরেজরা ধুয়া ধরিয়াছিল, “The Muhammadan religion must be suppressed,” "মুসলমান ধৰ্ম্মের উচ্ছেদসাধন করিতে হইবে” ; কিন্তু দূরদর্শী ও প্রভাবশালী কোন-কোন ইংরেজ রাজনীতিজ্ঞের চেষ্টায় এরূপ কোন অনিষ্টকর নীতি অবলম্বিত হয় নাই । গত শতাব্দীতে ওয়াহাবীদের দ্বারা ইংরেজবিরোধী যে-সব চেষ্টা হইয়াছিল, তাহাও কিছুকালের জন্য মুসলমানদিগকে ইংরেজদের অপ্রিয় করিয়াছিল। কিন্তু সচরাচর হিন্দুদিগকে দাবাইয়া রাখিয়া মুসলমানদিগের আবদার শোনাই ইংরেজদের প্রধান নীতি। অবশ্য যাহাতে মুসলমানদেরও ক্ষমতা বেশী বাড়িয়া না . ধায়, সেদিকেও ইংরেজদের তীক্ষ দৃষ্টি আছে। প্রতিযোগিতায় মুসলমানেরা কখনও ইংরেজদের বা হিন্দুদের সমকক্ষ হইতে পারিবে না, ইহা বলা আমাদের বিবিধ প্রসঙ্গ-ভারতীয় মুসলমানদের একটি ভ্রম (tరిక উদ্বেগু নহে। সমকক্ষ তাহারাও হইতে পারে। তাহার প্রমাণ, কোন-কোন মুসলমান কেবলমাত্র যোগ্যতার জোরে সিবিল সার্বিসে প্রবেশলাভ করিয়াছেন এবং ব্যবস্থাপক সভাদিতে নেতৃস্থানীয় হইয়াছেন। ভারতীয় হিন্দুরা যাহা পারে, ভারতীয় মুদলমানেরাও তাহ পারে। কেন না, উভয় সম্প্রদায়ই প্রধানতঃ এক জাতি হইতে উৎপন্ন।

ভারতীয় মুসলমানদের একটি ভ্রম ভারতীয় মুসলমানেরা এই একটি ভ্রমকে আকৃড়াইয়া ধরিয়া আছে যে, তাহারা বিজেতা ও হিন্দুরা বিজিত । কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য কথা এই, যে, যে-সব বিদেশী মুসলমান ভারতবর্ষে আসিয়া যুদ্ধে জয়ী হইয়াছিল, অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমান তাহদের বংশধর নহে। মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সীর এবং পূর্ব ভারতের (অর্থাৎ বাংলা আসাম প্রভৃতির ) প্রায় সব মুসলমান ত হিন্দুবংশজাত বটেই, এমন-কি পঞ্জাবী মুসলমানদের মধ্যেও শতকরা বেশী লোক বিদেশীবংশজাত নহে—তথাকার সেন্সাস সুপারিণ্টেণ্ডেণ্টের আন্দাজ অনুসারে শতকরা ১৫ জন মাত্র বিদেশীবংশজাত * কিছুদিন হইল, বিলাতের রয়্যাল সোসাইট অব আর্টসের সম্মুখে পঞ্জীবের ভূতভূৰ্ব্ব জবরদস্ত লাট মুসলমানদের বন্ধু স্তার মাইকেল ওডোয়াইয়ার একটি প্রবন্ধ পড়িয়া দেখান, যে, পঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের অনেক সন্ত্রান্ত মুসলমান পরিবার রাজপুতবংশজাত, যদিও তাহারা নিজে বিদেশী রক্তের দাবী করেন। প্রকৃত কথা এই, যে, মুসলমান রাজত্বের সময় যে-সব হিন্দু ভয়ে কিম্বা আর্থিক বা সামাজিক কোন লাভের আশায়, কিংবা মুসলমান ধৰ্ম্মকে ভাল মনে করিয়া, বিজেতাদের ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়াছিল, বর্তমান - - а в а еwhile the Muhammadans of the Eastern tracts and of Madras were almost entirely descendants of converts from Hinduism, by no means a large proportion even of the Muhammadans of the Punjab are really of foreign blood, the estimate of the Punjab Superintendent being about 15 percent.” —P. 116, Vol I, Census of India, 1921. 率 *