পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ó88 প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৩ { ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড করিতে পারে, তাহার অনেক কারণের মধ্যে একটা কারণ এই, ধে, অধিকাংশ স্থলে তাহাদের দুবৃত্ততায় বাধা দিবার জন্য প্রতিবেশী পুরুষের যথাসাধ্য চেষ্টা করে না। কেহই এচেষ্টা করেন নাই, বলিলে ভুল হইবে। যথাসময়ে কেহ কেহ চেষ্টা করায়, অল্পসংখ্যক স্থলে দুবৃত্তের নিজেদের উদ্দেশ্য সিদ্ধ করিতে পারে নাই। দুই একজন নারী প্রাণ দিয়া নিজের সতীত্ব রক্ষা করিয়াছেন। কিন্তু মোটের উপর ইহা সত্য, যে, বাংলাদেশে যে-সব জেলায় নারীর উপর অত্যাচার বেশী, তথাকার পুরুষেরা এই অত্যাচার দমন করিবার জন্য পৌরুয দেখাইতে পারে নাই । জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের বাংলা ভাষার অভিধানে কাপুরুষের একটি অর্থ "যে নারীর মর্য্যাদা রক্ষণ করিতে পারে না” লেখা আছে। বঙ্গের এই কাপুরুষতা দূর করিতে হইবে। মুসলমান নারীদের উপর যে অত্যাচার হয় না, তাহী নহে ; কিন্তু নিৰ্য্যাতিতা ও ধর্ষিতাদের মধ্যে হিন্দু নারীর সংখ্যাই বেশী। এইজন্য বঙ্গের কাপুরুষতার কলঙ্ক দূর করিবার দায়িত্ব হিন্দুদেরই বেশী । মৌলানা শোকৎ আলি যখন বলিয়াছিলেন, “কাফেররা কাপুরুষ, তাহারা মরিতে ভয় করে,” তখন সে কথায় অমুসলমানদের রাগ হইয়াছিল। আমরা উহার সাৰ্ব্বজনিক ও সাৰ্ব্বকালিক সত্যতা স্বীকার করি নাই ; কাপুরুষতা যে মুসলমানদের মধ্যেও আছে, তাহাও বলিয়াছিলাম। কিন্তু পূৰ্ব্ববঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের হিন্দুদিগকে মৌলানা শোকৎ আলির কথা মিথ্যা প্রমাণ করিতে হইলে প্রাণপণ করিয়া নারীনিৰ্য্যাতন বন্ধ করিতে হইবে । বঙ্গের সংবাদপত্ৰসকলে মসজিদের সামনে গীতবাদ্য সম্বন্ধে যত লেখালেখি ও আন্দোলন হইয়াছে, নারীনির্ধ্যাতনের বিরুদ্ধে তাহার শতাংশও হয় নাই। অথচ মসজিদের সামনের রাস্ত দিয়া গীতবাদ্যসহ মিছিল লইয়া যাইবার অধিকার স্থাপন করা অপেক্ষ নারীর মর্য্যাদা রক্ষা কোনক্রমেই কম আবশ্যক নহে । এই বিষয়ে “সঞ্জীবনী” সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক আন্দোলন করিয়াছেন । তাহাতে লেখা হইয়াছে, যে, গত তিন বৎসরে আনুমানিক পাচশত নারী অত্যাচরিত হইয়াছেন । এই পাশব অত্যাচারের উপর আবার সমাজের অত্যাচার আছে। অত্যাচরিতা নারীরা প্রায়ই সমাজে আর. পূৰ্ব্বস্থান পান না । কি ঘোর অবিচার ! নারীনিৰ্য্যাতন ও গবন্মেণ্টের কর্তব্য গবন্মেণ্ট, রাজনৈতিক কারণে ১৮১৮ সালের তিন নম্বর রেগুলেশুন বলবৎ রাখিয়াছেন, হাজার হাজার কংগ্রেস ভলান্টয়ারকে জেলে পাঠাইয়াছিলেন, বেঙ্গল অর্ডিন্যান্স জারী করিয়াছেন—নানা বেআইনী আইন দ্বারা “শাস্তি ও শৃঙ্খলা” রক্ষা করিতেছেন ; গুণ্ড৷ আইন এবং কলিকাতা অঞ্চলকে নিরাপদ করিবার জন্য নূতন আইন প্রণয়ন করিয়াছেন। কিন্তু এই যে নারীর সৰ্ব্বনাশ বৎসরের পর বৎসর চলিয়া আসিতেছে, ইহা নিবারণের জন্য বিশেষ কোন উপায় অবলম্বিত হইতেছে ন। একটি মাত্র ইংরেজ বালিকাকে উত্তরপশ্চিম সীমাস্তের পরপারস্থ কতকগুলা পাঠান হরণ করায় সমস্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের টনক নড়িয়াছিল, তাহার উদ্ধার সাধনু এবং উদ্ধারকত্তাদিগকে পুরস্কৃত করিয়া তবে ইংরেজ নিশ্চিস্ত হয়। আর ৫০০ ভারতীয় নারীর সৰ্ব্বনাশেও আমাদের নিদ্রার ব্যাঘাত হয় না, গবন্মেণটও বেশ আরামে আছেন । শ্বেতনারীর অপমান হইলে ইংরেজদের ও ইংরেজ গবন্মেণ্টের কেমন টনক নড়ে, তাহার আর-একটি দৃষ্টান্ত কয়েকদিন আগেকার নিম্নলিখিত সংবাদে পাওয়া যায় — Violence By Natives In Kenya. On White Women. LAw To BE TIGHTENEI). (Reuter’s Service.) - Nairchi, May 31. The Governor Sir Edward Grigg announced in the Legislature to-day, following a number of recent crimes of violence against White women by natives, that. Government intended to tighten the law relating to punishment of the crimes, thus giving a greater sense of security, and also enlist the assistance of the chiefs and headmen, who themselves did not countenance such acts. কতিপয় শ্বেতকায় নারীর উপর আফ্রিকাস্থ কেন্যা দেশের নেটিভেরা বল প্রয়োগ করিয়াছে। এই জন্ত আইন আরও শক্ত করা হইতেছে এবং নেটিভ সর্দার ও গ্রামের মোড়লদেরও সাহায্য লওয়া হইতেছে। ইহার শত গুণ অত্যাচার বঙ্গনারীর উপর হওয়াতেও কিন্তু বাংলা গবন্মেণ্ট-ও-ভারত গবন্মেণ্ট নিশ্চিন্ত আছেন। সাধারণ আইনে দুবৃত্তের। কখন কখন শাস্তি পাইতেছে স্বীকার করি, কিন্তু তাহা যথেষ্ট নহে । মন্দির ও বিগ্ৰহনাশ পূৰ্ব্ব ও উত্তরবঙ্গের কোন কোন জেলায় মুসলমান সম্প্রদায়ের কলঙ্কস্বরূপ কোন কোন লোক হিন্দুদের মন্দির ও দেবদেবীমূৰ্ত্তি অপবিত্র ও নষ্ট করিতেছে, এইরূপ সংবাদ কাগজে বাহির হওয়ায় গবন্মেণ্ট এবিষয়ে একটু অদ্ভুত