পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 যিনি অবিবাহিত তিনি কুমার ; সেই কুমারের উপবনে কামনার সংস্রব নেই, সেখানে রমণীর প্রবেশাধিকার নেই—সেখানে রমণী গভিশপ্ত। সেই কুমারের উপবনে প্রবেশ করে’ উৰ্ব্বশ পুরুরবার দৃষ্টি থেকে অন্তর্কিত হলো— উৰ্ব্বশী পুরুরবার কামনায় কুপিত হয়ে কুমার-বনে গিয়ে আত্মগোপন করলে । এতক্ষণ পর্য্যক্ষ কামনাপরবশ পুরুরবা সৌন্দর্য্য-লক্ষ্মীকে শরীরিণী দেখছিলো ; এখন তাকে হারিয়ে তাকে সৰ্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত দেখতে লাগলে । তখন বর্ষাকাল। বর্ষার কবি কালিদাস মেঘদূত-কাব্যে বলেছেন— “মেঘলোকে ভবতি মুখিনোহপ্যন্তথাবুত্তিচেত: কণ্ঠাসে-প্রণয়িনি জনে কিং পুনর দূরসংঙ্কে ৷”— মেঘোদয় দেখলে প্রিয়পাশ্ববৰ্ত্তী জনেরও চিত্ত উদাস হয়, বিরহী জনের তে কথাই নেই। পুরুরবার চিত্তও প্রিয়।-বিরহে চঞ্চল হয়ে উঠেছে, সে কল্পনায় সৰ্ব্বত্র প্রিয়ের আবির্ভাব অবলোকন করছে। বর্ধার আবির্ভাবে নুতন ভূঁইচাপা ফুল ফটে উঠেছে, তা দেগে পুরুরবা বলছে— “আরক্ত-কোটিষ্টির ইয়ং কুমুমৈর নবকন্দলী মলিনগর্ভৈ: | কোপাদ অস্তবাম্পে স্মরয়তি মাং লোচনে তস্যাঃ ॥” রক্ত-প্রান্ত কৃষ্ণমধ্য নবকনালী ফুল যেনো গে তাহার কোপছলছল লোচন রাতুল f সেই সুগাত্রী উৰ্ব্বশীর অলক্তক-রঞ্চিত পদরাগ বনস্থলীর বুকে অঙ্কিত দেখতে দেখতে পুরুরবা চলেছে । কিছুদূর গিয়ে সে দেখলে—শাম্বলাচ্ছাদিত স্থানে রক্তবর্ণের ইন্দ্রগোপ কীট বিকীর্ণ হয়ে রয়েছে , অমনি তার ভ্রম হলে সেখানি বুঝি লাল-লুটি-দে গুয়| টিয়া-পাপীর পেটের হয ফিকে-সবুজ-রঙের কাপড স্থার প্রিয় ফেলে রেগে গেছে— · শুকোদরতামম স্তনা শুকম্‌! ময়ূরের ‘মৃদুপবন-বিভিন্নে৷ ধন-রুচির-কলাপ:’ মুচু পবনে বিচ্ছিন্ন ঘন মনোরম চন্দ্রকঅঙ্কিত কলাপ দেখে পুকুরবার মনে পড়লো 'স্বকোঃ কুসুম-সনাপ কেশপাশ —সেই স্তকেশীর কুসুম-ভূষিত কেশপাশ : রাজহংসকৃজিত শুনে পুরুরবার ভ্রম হয় বুঝি সৈ উৰ্ব্বশীর নূপুর-শিঞ্চি শুনছে । পুরুরব। সকে সঙ্গোধন করে বলছে-- মদখেলপদং কথং সু তস্যাঃ সকলং চেীর গতং ত্বয়া গৃহীতম! প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড কেমন করে কর্লি রে চোর এমন অপহরণ আমার প্রিয়ার চরণ হতে লীলাঞ্চিত গমন ? পুরুরব নদীর রূপে সাকার উৰ্ব্বশীকেই দেথতে পেলে তরঙ্গ-প্রভঙ্গ। মুভিও-বিহুগশ্রেণি-রসন বিকর্ষপ্তী ফেনং বসনম্ ইব সংরস্তু-শিথিলম্। যথ জিহ্মং ধাতি স্থলিত অভিসন্ধায় বহুশে নদীভাবেনেয়ং ধ্রুবম্ অসহমান পরিণত ॥ ( বিক্রমের্ববর্শী ৪র্থ অঙ্ক ) নদীতরঙ্গ প্রিয়ার ভ্ৰকুটি, মুখর পার্থীর মেখলাখনি, পুঞ্জিত ফেন অঙ্গের বাস গমন-ত্বরায় শিথিল মানি । একে বেঁকে তার স্থলিতগমন দেখিয়া আমার মনেতে ভায় প্রেয়সী আমার কোপের জ্বালায় গলিয়া নদীর রূপেতে ধায় । পুরুরব উৰ্ব্বশীকে খুজতে খুজি তে চলেছে আর দেখছে তার উৰ্ব্বশী সীমার সঙ্গীণত ছাড়িয়ে সৰ্ব্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে । পুরুরব চলতে চলতে পথে গৌরীচরণকৃতাঙ্গরাগ-যোনি একটি মণি কুড়িয়ে পেলে—সেই মণিটি গৌরীর চরণের অলক্তকরাগ জমাট বেঁধে রূপ ধরেছে, সেটি পুরুরবার সঙ্গে উৰ্ব্বশীর মিলনের সোনার কাঠি বা জীয়ন কাঠি । কিন্তু পুরুরবা জানে না যে সেটি মিলন-মণি ; সে রক্তাশোকস্তবক-সমরাগ সেই মণিটিকে সুন্দর মন্দার-পুপ-অধিবাসিত উৰ্ব্বশীর শিখাতে অর্পণ করবে বলে তুলে নিলে । তখনি তার মনে হলো—সৈব প্রিয়া সংপ্রতি দুলভ। মে—সেই প্রিয় তে এখন আমার দুর্লভ, এ মণি তবে কি হবে ? তখনি আবার তার অন্তরে এই দৈববাণী শুনতে পেলে যে সে তার প্রিয়াকে ফিরে পাবেই পাবে । তপন সে সেক্ট মণিটি সঙ্গে রেগে দিলে । পুরুরবা চলতে চলতে দেখলে একটি লতা কুসুমবিরহিত। শূন্তাভরণা মেঘজলে আর্ট হয়ে রয়েছে । সেই নিরলঙ্কার লতাকে দেখেই পুরুরবার মনে হ’লো— কোপবশে ত্যক্ত ভূষণ। তানিয়ন। স্তম্বী শু্যামাঙ্গী এই তো আমার প্রিয় , সে উৰ্ব্বশীভ্রমে যেই সেই লতাকে আলিঙ্গন করলে , অমনি সেই মিলন-মণির স্পশ লেগে লতাটি উৰ্ব্বশীর রূপ ধারণ করলে । পুরুরব। যে-উৰ্ব্বশীকে এতক্ষণ সৰ্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত দেখছিলে। সেই বিচ্ছিন্ন রূপকে এখন একটি লতার বাহুল্যবর্জিত শ্রীর ভিতর থেকে একত্র কৃড়িয়ে পেলে! উৰ্ব্বশীর সঙ্গে মিলন হ’লে পুরুরব। উৰ্ব্বশীকে বললে – দেপে