পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] মৃত্যু-দূত Ø8ፃ ষ্টুডিথ তার হৃদয়ের গোপন কথা আমার কাছে কখনো প্রকাশ করেনি। হয়ত বা আমারই ভুল হচ্ছে।” গুস্তাভসন গম্ভীরভাবে বলিল, “যদি সিস্টার ঈডিথের নিজের মুখ থেকে আপনি কিছু না শুনে থাকেন তা হ’লে আমার মনে হয় আপনার ভুল হচ্ছে ।” দরজার পার্থে বসিয়া ডেভিড হলমও গম্ভীর হইল। কথাবাৰ্ত্তার ধারা পরিবর্তিত হইতে দেখিয়া সে খুলী হইল লী । “গুস্তাভসন, আমি জোর ক’রে বলতে পারি না যে, প্রথম যখন সিস্টার মেরী ভেভিড হল কে দেখেছিল তখন তার মনে শুধু দয়া ছাড়া আর কোনো ভাব জেগেছিল। এবং পরেও যে তাকে ভালোবাস্বার কোনো বিশেষ কারণ ঘটেছিল তাও নয়। কচিৎ কদাচিৎ সিস্টার ঈডিথের সঙ্গে তার দেখা হ’ত—এবং বরাবরই সে তার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। প্রায়ই অনেক স্ত্রীলোক এসে অভিযোগ ক’রে ধ্যে যে, ডেভিড হল্ম্ তাদের স্বামীদের নানা পাপ প্রলোভন দেখিয়ে তাদিকে কাজ করতে দিচ্ছে না ; সহরে অন্যায়, নিষ্ঠুরতা ও পাপ বেড়ে চলেছে। যখনই এই হতভাগ্যদের সঙ্গে সে মিশত তখনই তাদের সৰ্ব্বনাশ হ’ত—অধিকাংশ অন্যায়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে মূলে ডেভিভ হলম্কেই পাওয়া গেছে। সিস্টার ঈডিথ যে, প্রকৃতির লোক—ডেভিডের এই দুৰ্দ্দান্তপণাই তাকে } ধ্বংসের পথ থেকে রক্ষা কবৃবার জন্তে ঈডিথকে প্ররোচিত করেছিল। এই বন্য পশুকে সে তীক্ষ অস্ত্র নিয়ে তাড়া ক’রে ফিরছিল—সে যতই তার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল—ততই ঈডিথ উৎসাহিত হ’য়ে তাকে যেন আক্রমণ করতে চেষ্টা করেছে। তার বিশ্বাস ছিল যে, একদিন-ন-একদিন সে জয়লাভ করবেই, কারণ তার নিজের শক্তি যে ডেভিডের শক্তির চেয়ে বেশী সে-বিষয়ে তার সন্দেহ মাত্র ছিল না।” র্তাহার সঙ্গী বলিয়া উঠিল, “নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই । সিস্টার মেরী আপনার কি সেই সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে, সিস্টার ঈডিথ ও আপনি একট। তাড়িখানায় ੋ পতিতআশ্রমের বিজ্ঞাপন বিলি ক’রে ফিরছিলেন ? সেদিন সিস্টার ঈডিথ ডেভিড হলমকে একটা টেবিলে এক ছোকৃরার সঙ্গে বসে থাকতে দেখেছিলেন। ডেভিড হলম্ আপনাদের সম্বন্ধে কুৎসিৎ ঠাট্টা করছিল, লোকটা সেই কথা শুনে ডেভিডের সঙ্গে হাস্ছিল। সেই যুবকটিকে দেখে সিস্টার ঈডিথ ব্যথিত হয়েছিলেন। তিনি তার কানে কানে বলেছিলেন অমনভাবে ধ্বংসের পথে নিজেকে ছেড়ে না দিতে। যুবকটি র্তার কথার উত্তর দেয়নি কিম্বা তার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়েও যায়নি–কিন্তু তাকে বছ কষ্টে তাঁর সঙ্গীদের কাছে একটা কষ্ট-হাসি হাসতে হয়েছিল। সে তাদের মধ্যে থেকে সবারই মত গ্লাসে মদ ঢেলে নিলে, কিন্তু তার ঠোট পৰ্য্যন্ত কিছুতেই সে গ্লাস তুলতে পারেনি। ডেভিড হল এবং অন্যান্য সকলে তাকে ঠাট্টা ক’রে বলেছিল যে, সে সিস্টারের কথায় ভয় পেয়েছে। কিন্তু সিসটার মেরী, ভয় পাওয়া দূরে থাকৃ সে তার করুণা দেখে অভিভূত হয়েছিল—তিনি যে তার ওপর দয়া ক’রে তাকে সাবধান ক’রে দিতে দ্বিধা করেননি এইটাই সে যুবকের মনে তীরের মত বিধেছিল , তার মনে এমন একটা বিপৰ্য্যয় ঘটে গেল যে, সে অন্য সকলকে ছেড়ে তার পথে চলাই স্থির করেছিল। এঘটনাটা যে সত্যি তা আপনি জানেন। আরো জানেন যে, সেই হতভাগ্য যুবকটি কে ৷” সিস্টার মেরী শান্তভাবে বলিলেন, “আমি তাকে জানি গুস্তাভসন, সে সেদিন থেকে আমাদের একান্ত বন্ধু ও হিতাকাজী । সেদিন সিস্টার ঈডিথ ডেভিড হল্ম্‌এর শয়তানীকে পরাস্ত করেছিল বটে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সে নিজে পরাজিত হয়েছে। সেই পৰ্ব্বরাত্রে সে এমন ঠাণ্ড লাগিয়েছিল যে, তাকে সেদিন থেকে বরাবরই সর্বনেশে কাশরোগে কষ্ট পেতে হয়েছে—আজও সেই রোগেই সে ভুগছে। এই অসুস্থত। তার প্রধান বাধা ছিল এবং হয়ত এইজন্যেই সে ঠিকমত লড়তে পারেনি।” so যুবকটি বাধা দিয়ে বললে, “সিসটার মেরী, আপনি যা বললেন, তাতে ক’রে ত বোঝা যায় না যে, সিস্টার ঈডিথ ডেভিড হলমকে ভালোবাসতেন।” “তুমি ঠিক বলেছ গুস্তাভসমূ-প্রথমটা তা বোঝা যায়নি বটে। পরে আমি কেন এই ভালোবাসার কথা