পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo e প্রবাসী—শ্রাবণ ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড লিস্টার ঈঙিথ ভেবেছিল, হয়ত তাতে ক’রে হলমের উপকার হবে। আমি বলতে বাধ্য যে, সে সিস্টার ঈডিথের প্ররোচনায় একাজ করেছিল; ডেভিড হল যাদের চরম সৰ্ব্বনাশ সাধন করতে পারে তাদের সঙ্গে আবার মিলিত হ’ল। আমি এবিবয়ট অনেক ভেবে দেখেছি ও এগনে ভাবছি। আমি এখনো বুঝতে পারি না যে, যদি হলমের উপর তার নিবিড় ভালবাসা না-ই ছিল ত হ’লে সে নিজের ঘাড়ে এতবড় একটা কাজের দায়িত্ব নিতে স্বীকার পেলে কেমন ক’রে ?” o মহিলাটি বিশেষ জোর দিয়ে শেষের কথাগুলি উচ্চারণ করিলেন। মৃত্যুশয্যাশায়ী রমণীর ভালোবাসার কথা শুনিয়া অদৃষ্ঠদেহধারী যে দুইজন চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিল তাহার শান্ত হইল। যুবকটি চোখের উপর হস্ত অfচ্ছাদিত করিয়া স্ত৭ হইয়া বসিয়া রহিল। ভূমিশায়ী লোকটির মুখে এই ধরে আনীত হইবার পূৰ্ব্বে যে ভয়াবহ ঘূণার ভাব ফুটিয়৷ উঠিয়াছিল তেমনই ঘৃণ ফুটিয়া উঠিল । সিস্টার মেরী বলিলেন, “ডেভিড হলম কোথায় গেছে আমরা কেউই জানতাম না ; কিন্তু সিস্টার ঈডিথ এক ভিখারীকে দিয়ে তাকে খবর পাঠfল যে তাকে তার স্ত্রী ও ছেলেদের থাবর দিতে পারে ; সে অবিলম্বে হাজির হ’ল । সিস্টার ঈডিথ স্বামী-স্ত্রীর মিলন ক’রে দিলে, তাকে ভদ্রপোষাক পৰ্ববার ব্যবস্থা ক’রে দিলে এবং সহরে এক , রাজমিস্ত্রীর কাছে তাকে এক কাজও দিলে। সিস্টাব ঈডিথ হলমের কাছ থেকে কেনে প্রতিশ্রুতি চায়নি। সে জানত, যে ওই প্রকৃতির লোকদের প্রতিজ্ঞা দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না। বুদ্ধিমান কৃষকের মত, যে বীজ আগাছার মধ্যে অঙ্কুরিত হয়েছে তাকে তুলে মাটীতে সে পুতে দিলে ; তার বিশ্বাস ছিল সে কৃতকাৰ্য্য হবে ।” “যদি তার শরীর অসুস্থ হ’য়ে না পড়ত তবে হয়ত সে কৃতকার্ষ্য হ’ত, কিন্তু গোড়াতেই সিসটার ঈডিথের ফুসফুসের ব্যারাম হ’ল । সেটা যখন সেরে আসতে লাগল ও সে শীগগির সম্পূর্ণ স্বস্থ হবে বলে আমরা আশী কবুলাম তখনই সে আবার আক্রাস্ত হ’ল ও আমরা তাকে স্বাস্থ্যাগারে পাঠাতে বাধ্য হ’লাম। “ডেভিড হল যে তার স্ত্রীর প্রতি কেমন ব্যবহার করেছিল সেকথা বলার প্রয়োজন নেই তুমি তা বেশ জান। আমরা খালি সিস্টার ঈডিথকে এ বিষয়ে কিছু জানতে দিইনি। জানলে সে ব্যাথা পেত, আমরা আশ। করেছিলাম যে, এবিষয়ে সে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থেকেই দেহত্যাগ করবে, কিন্তু আজ আর সে বিশ্বাস নেই। আমার মনে হয় সে সমস্ত জানে, কেমন ক’রে তা বলতে পারি না । “ডেভিড হলমের সঙ্গে তার যে অদ্ভুত অপার্থিব বন্ধন ছিল তা এত নিবিড় যে, আমার বিশ্বাস, সে কোনে অলৌকিক উপায়ে ডেভিড-সংক্রান্ত সমস্ত ব্যাপার জানতে পারে এবং সে সমস্ত জানে ব’লেই আজ সমস্ত দিন তার সঙ্গে কথা বলবার জন্য ছটফট করছে । সে ডেভিডের স্ত্রী ও ছেলেদের অকথিত যন্ত্রণার কারণ হয়েছে এবং তার কৃতকাৰ্য্যের প্রতিকার করুবার তার আর বেশী সময় নেই। আর আমরাও এমন অসহায় যে, ডেভিড়৫ে এখানে নিয়ে এসে যে তার মৃত্যুকালে কিছু সাহায্য কবুব তাও পারছি না।” যুবকটি প্রশ্ন করিল, “সিস্টার মেরী, তাতে লাভ হবে কি ? তিনি এত দুৰ্ব্বল যে, তাকে কিছু বলবার ক্ষমতা ও র্তার নেই।” সিস্টার মেরী দৃঢ় স্বরে বলিলেন, “তার হয়ে আমিই ডেভিডকে কথা বলব। মৃত্যু-শয্যার পাশে যদি আমি কথা বলি তা হ’লে সে বোধ হয় তা শুনবে ।” “তাকে আপনি কি বলবেন ? বলবেন কি সিস্টার ঈডিথ তাকে ভালোবাসতেন?” সিস্টার মেরী সহস দণ্ডায়মান হইয়া তাহার বুকে উপর হস্ত রাখিয়া নিমীলিত নেত্ৰে উৰ্দ্ধমুখী হইয়া প্রার্থন করিতে লাগিলেন,— “ভগবান, দয়া ক’রে সিস্টার ঈডিথের মৃত্যুর আগে ডেভিড হলমকে তার কাছে এনে দাও। তাকে বুঝিয়ে দাও সিসটার ঈডিথ তাকে কত ভালোবাস্ত ! তার ভালোবাসার আগুন যে তার আত্মার কঠোরতাকে গলিষ্ট্রে দেয়। ভগবান, তার এই ভালোবাসা কি ডেভিডহল এর অন্তরকে গলাতে পারবে না ? হে শক্তিমান