৪র্থ সংখ্যা ] মহিলা-মজলিস—এলেন কেই \967S অধিকারবাদীরা কেবল ভাঙ্গার ব্যাপার লইয়াই ব্যস্ত নহেন, গড়ার কাজেও সাড়া দিয়াছেন, তখন এই বিবাদ কযুৎ পরিমাণে মিটিয়া যায় ! সুতরাং নারীঅধিকারবাদকে স্বপথে পরিচালনা করিয়া এবং সোসিয়ালিজম ও শান্তিবাদের কায্যে সাহায্য করিয়া এলেন কেই আমাদের যুগের নারী-আন্দোলনের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অলঙ্কত করিয়া আছেন। নারী-জগতের প্রতিনিধিরূপে র্তাহার স্থান কোথায় তাহা কাল নিরূপণ করিবে। আপাতত আমরা এইটুকু উল্লেখ করিতে পারি যে, ডাঃ জর্জ ব্রাণ্ডেসের মত খুতখুতে সমালোচক এবং পণ্ডিতও একবার কোপেনহেগেনের একটি জনসভায় তাহাকে, “স্বইডেনের শ্রেষ্ঠ মনীষাময়ী মহিলা, সুইডেন কেন, ইউরোপ অথবা জগতের শ্রেষ্ঠ মনসাশালিনী মহিলা” বলিয়া অভিনন্দিত করিয়াছিলেন । র্তাহার কৰ্ম্মজীবনের মূল্য অার একদিক দিয়াও আছে । বৃদ্ধিবৃত্তির উৎকর্ষ যে নারী-হৃদয়ের গভীর ভাবাবেগ ও সৌন্দয্যাতৃভূতি খৰ্ব্ব করিয়া দেয় না এলেন কেইর জীবন তাহা কাৰ্য্যত দৃঢ়ৰূপে প্রমাণ করিয়া দিয়াছে। আমার কথা প্রমাণ করিবার জন্য আমি কেবল দুইটি বাক্যাংশ উদ্ধৃত করিয়া দিব । এলেন কেই প্রকৃতির বিশেষ অনুরাগিণী ছিলেন বলিয়া প্রাকৃতিক দৃশ্ব ও জীবজন্তুর চিত্রাঙ্কণে আধুনিক ইউরোপীয় শিল্পীগণের শ্রেষ্ঠ Bruno Liljeforsএর বিষয় বিশেষভাবে আলোচনা করেন । এলেন কেইর কথাগুলি আপনার বক্তব্য প্রকাশ করিবে । “প্রকৃতির কণ্ঠে যদি সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতে চাও (Liljefors যেমন করিয়াছেন) তাহা হইলে প্রকৃতির ক্রোড়েই আপনার নীড় বাধিয়া শিকারী মৎস্যজীবী কি বনের পশুর মত সেইখানে বাস করিতে হইবে । দিন ও রজনীর সহিত, স্বৰ্য্য ও চন্দ্রের সহিত, কুয়াস ও তুষারের সহিত এবং জল ও মাটির সহিত কথা কহিতে হুইবে । সকল রকম আলো ও ছায়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাইতে হইবে... কীটপতঙ্গ, তৃণদলের পর্য্যন্ত কণ্ঠস্বর শুনিতে হইবে ; আলো ও অন্ধকারের লুকোচুরি খেলায় তাহার কেমন করিয়া পরম্পরের অঙ্গে বিলীন হইয়া যায় তাহা চাহিয়া Ե-8ա Ֆ 8 দেখিতে হুইবে । তারপর এইসকল ধ্বমি ও রূপকে আত্মার অন্ত:স্তলে ধীরে ধীরে প্রবেশ করিয়া লুকাইয়া হারাইয়া বিস্কৃতির অন্তরালে মিশিয়া যাইতে দিতে হইবে, যেন অন্তরপটে চিত্রিত এইসব বিভিন্ন ছায়ামূৰ্ত্তি সংগ্রামের ভিতর দিয়া আত্মপ্রতিষ্ঠা করিয়া চৈতন্যলোকে আবার নবরূপে জন্মলাভ করিতে পারে ।” কবি ও চিত্রকরের অন্তভূতির কি অপূৰ্ব্ব সংমিশ্রণ! কিন্তু রাজনীতিবিদ, বক্ত, জননেতা, শিল্পী ও ভাবুক এলেন কেইর সর্বোচ্চ মহিমা তাহার মাতৃভাবে—নারীত্বের সেই অনুপম সম্পদে। তিনি আধুনিক যুগের vestal Wirginএর (রোমক দেবমন্দিরের চিরকুমারী পরিচারিকা) মত সত্য ও প্রেমের আলো চিরউজ্জল রাখিবার জন্য আজীবন একক জীবন যাপন করিয়াছেন বটে, কিন্তু " মাতৃহৃদয়ের স্বগীয় রূপ র্তাহার অন্তরে কোনো দিন স্নান হয় নাই । তাহার শ্রেষ্ঠ পুস্তক “শিশু শতাব্দী’তে তিনি লিথিয়াছেন ঃ– “শিশুর স্বতঃস্ফৰ্ত্ত স্বভাবকে পরের বোঝার চাপে পিশিয়। মারাই গুরুগিরির পাপ । তাহার সম্মুখে যে একটি নূতন প্রাণ, একটি বিশেষ ব্যক্তি আপনি ভাবিবার অধিকার লইয়া আসিয়া দাড়াইয়াছে একথা শিক্ষক অনুভব করিতেই পারেন না। চিরপুরাতন মনুষ্য জাতিরই একটি নবতর প্রকাশ ছাড়া এই নবীন আত্মার ভিতর শিক্ষক আর কিছুই দেখিতে পান না। পিতামাতাও সমাজের দাবীমত সস্তানদিগকে সকল গুণের এক-একটি আদর্শ মূৰ্ত্তি দেখিতে বদ্ধপরিকর হইয়া উঠেন। সুতরাং আমরা হতাশ হইয় দেখি যে, সেই এক ছাচে ঢাল মজবুল ছেলে, মিষ্টি মেয়ে, ও কেতাদোরস্ত কৰ্ম্মচারীর দল চক্রের মত্তন ঘুরিয়া ঘুরিয়া আসে । কিন্তু হিসেবী ভদ্রতায় পালিত এইসব বালকবালিকার ভিতর অনাবিষ্কৃত পথের নূতন পথিক, ও অজ্ঞাত ভাবের নূতন ভাবুক, এমন সব নূতন ছাচের মানুষ কুচিং দেখা যায়।. আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিবেকগত শান্তি দিতে হইবে ; প্রচলিত মতবাদ, ধরাবাধ৷ প্রথা ও সুবিধাজনক মনোবৃত্তি সকলকে অগ্রাহ করিতে সাহস দিতে হইবে। তবেই এই সমষ্টিগত বিবেকের
পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/3/3e/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80_%28%E0%A6%B7%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B6_%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97%2C_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu/page712-1024px-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80_%28%E0%A6%B7%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B6_%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97%2C_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu.jpg)