পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woe দাদন করিয়া তাতিদিগের নিকট হইতে ব্যবসাটি (শিল্পটি নহে ) হস্তগত করিবার চেষ্টা করিতেছেন । ইহাতে র্তাতিদিগের অবস্থা তাদৃশ সচ্ছল না হইলেও ব্যবসাহিসাবে ইহা দেশ-বিদেশে প্রসার লাভ করিলে দাদনকারিগণের অবস্থা উন্নত হইবার সম্ভাবনা । ফলতঃ বৈদেশিক প্রতিযোগিতায় ইহাকে বাচাইয়। রাখিতে হইলে, এই শিল্পকে শুদ্ধ বীরভূমেরই কতকটা অংশের প্রয়োজন পূরণে সীমাবদ্ধ না রাখিয়া, দেশ-বিদেশে প্রচলিত করিবার জন্য যৌথ কারবার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন। যৌথ কারবার অর্থে আমরা যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলিতেছি না। আমরা ইহাকে কুটরশিল্প-হিসাবেই উন্নত দেখিতে চাই । কিন্তু তাহা করিতে হইলে কিছু অধিক-পরিমাণ মূলধন ও সমবেত চেষ্টার প্রয়োজন । কত নারী যে অন্নের অভাবে অকালে ব্যাধিগ্রস্ত হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইতেছে, কত “বাসী - বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড অনাথ বিধবা, কত নিষ্কৰ্ম্ম যুবক যে উদরের জালায় অসৎপথ-অবলম্বনে বাধ্য হইতেছে, তাহা কাহারও অবিদিত নাই । ইহাদিগকে গুটি হইতে স্থতা বাহির করিতে শিখাইয়া কাজে লাগাইতে পারিলে, তাত ধরাইয়া মাকু ঠেলিতে শিখাইলে দেশের অন্ন-সমস্যা দূর করিতে কয়দিন লাগে ? কিন্তু এসব করিতে অর্থ চাই, অক্লান্তকৰ্ম্মী মাহুষ চাই, প্রণালীবদ্ধ চেষ্টা চাই । দেশে বনের অভাব নাই । এইসব বনে গুটির যত্ব করিতে হইবে এবং শত্রুর হস্ত হইতে ইহাদিগকে রক্ষা করিতে হইবে । আমরা আজি ও কি আপনার পায়ে ভর দিয়া দাড়াইতে চেষ্টা করিব না ? আমাদের ঘরে অন্নসংস্থানের এমন সুন্দর উপায় থাকিতে, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের এমন পথ থাকিতে, এখনও কি আমরা পরের দুয়ারের দিকে চাহিয়া বসিয়া থাকিব ? আধুনিক জার্মান নারীর আর্থিক প্রচেষ্টা শ্ৰী বিনয়কুমার সরকার পশ্চিম ও পূৰ্ব্বদেশ সম্বন্ধে আমাদের দেশে প্রধানত দু'রকম মতবাদ প্রচলিত আছে । একদল লোক বলেন, পশ্চিম এসে ভারতের তথা এশিয়ার পায়ে মাথা নত করবে ; একদিন আমাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করতেই হবে । আর একদল বলেন, সুয়েজের ওপারের লোকের জন্য এক পথ, এপারের লোকের জন্য আর-এক পথ ; ওদের পথে ওরা চলুক, আমাদের পথে আমরা চলব। আমি এ দু'রকম মতেরই ঘোরতর বিরোধী । প্রাচীন যুগে এশিয়া ইয়োরোপের গুরুস্থল ছিল, এদাবী ইতিহাসগত দাবী নয়। প্রাচীনকালে গ্রীক, বৌদ্ধ বা মৌর্য্য আমলে অথবা মধ্যযুগের বাদশাহী আমলে কখনো ভারত,ইয়োরোপের গুরুগিরি করেছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। আমাদের ঠাকুরদার। ওদের ঠাকুরদাদের সমানে সমানে হয়তে। চলছিলেন, কিন্তু তাদের হারিয়ে আগে চলে গেছেন একথা স্বীকার করা চলে না। আমার কাছে অতীতের ইতিহাসের এই বাণী । ভবিষ্যতে এশিয়া প্রভুত্ব করবে এমন কোনো লক্ষণও দেখছি না। ওদের পথ ওদের,আমাদের পথ আমাদের—একথা ভ্রান্ত, অসত্য এবং প্রমাণ-বিরুদ্ধ। আমরা যে পশ্চিমের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছি তা’র দৃষ্টান্ত সমাজে, রাষ্ট্রে,সাহিত্যে প্রতিদিন পাওয়া যায় । একথা পূৰ্ব্বে বহুবার বলেছি এবং আজও আবার বলি যে, দুনিয়া চিরদিন ঠিক একভাবে চলে’ এসেছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। চীন বল, জাপান বল, ভারত বল, ইয়োরোপ বল, সব একদিকে চলেছে, তবে ওরা এগিয়ে গেছে, আমরা ওদের পিছু-পিছু ওদের রাস্তাতেই চলেছি—এই | পার্থক্য । জমিদার-চাষী রাজা-প্রজা স্ত্রীপুরুষের সম্বন্ধ যা-কিছু বল সবই জগতে একই রূপ নিয়ে গড়ে উঠছে। প্রভেদ এই যে, যে-সব কাজ ওরা ৩০, ৪০ ৫০ বা ৬০ বছর আগে করেছে এতদিন পর আমরা তা কিছু কিছু করেছি বা করবার চেষ্টায় আছি। স্কুল, কলেজ,