পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१३७ প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৩ [ २७ं खांशं, भषि ५७ আসিয়া হাজির ৷ গৌরীকে দেখিয়াই সে একগাল খাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কেন ভালবাসে ? সে কি আমার হাসিয়া বলিল, “আরে গৌরীরাণী, হিয়া কি হচ্ছে ?” স্বনরিয়ার বয়স অল্প ; লম্বা পাতলা চেহারা, রংটি মিশমিশে কালো, কিন্তু তাহারই ভিতর একটা শ্ৰী আছে । সে ছোট বেলায় মিশনারি মেমদের কাছে মানুষ - , কাজেই চালচলনে তাহার একটু ফ্যাসানের গন্ধ পাওয়া যায়। পরে দুই চারজন বাঙালীর বাড়ী কাজ করিয়া বাংলা বলার সখটাও তাহার প্রচুর। গৌরী স্বনরিয়ার কথায় হাসিয়া জবাব দিল, “আটা পিস্তে শিখছি।” স্থনরিয়া বলিল, "রাণী, দেখে যাও, ইধর একটা বড় উমৃদ চিজ আছে।” চিজটা কি দেখিবার জন্য গৌরী ছুটিয়া গিয়া স্বনরিয়ার গায়ের উপর পড়িল । স্থনরিয়া একটু তফাতে সরিয়া গিয়া বলিল, “ইখানে দেখাব না ; ওই ফাটক ’পর চলো, দেখাব।” গৌরী অগত্যা তাহাই চলিল । সদর দরজার কাছে গিয়া ফিকা বাসন্তী রঙের শাড়ীর আড়াল হইতে সুনরিয়া একটা মোটা গোলাপী খাম বাহির করিয়া গৌরীর হাতে দিল । গৌরী বলিল, “এটা কি কবুব ?” স্বনরিয়া বলিল, “খুলে দেখো না-চিজ আছে।” থামটা খুলিতেই একটা আশমানী রঙের রেশমী রুমাল ও গোলাপী কাগজে বাংলা হস্তাক্ষরে লেখা একটা কবিতা বাহির হইল । সুনরিয়া দস্ত বিকশিত করিয়া বলিল, “কেমন ‘বাঢ়িয়া রুমাল দেখেছ ? তুমার ভালো লাগে?” গৌরী বলিল, “হ্যা, বেশ ভাল ত ! তুমি কোথায় পেলে ?” স্বনরিয়া বলিল, “আরে, হামি কি পাব, গৌরীরাণী ! নিপেন-বাৰু তুমার লিয়ে ভেঙ্গেছে।” গৌরী বিস্ময়ে চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া বলিল,“নিপেন-বাৰু কে ? আমাকে কেন দিয়েছে ?” - স্বনরিয়া বলিল, “সে বড়া ডাগদার সাহেবের ছেলে আছে । তুমাকে খুব ভালোবাসে তাই ভেজ ল ৷” স্বনরিয়া একটু মুচকিয়া হাসিল। গৌরী একটু ভ্যাবাচ্যাকা কেউ হয় ?” মুনরিয়া হাসিয়া গৌরীকে একটা ঝণকানি দিয়৷ বলিল, “আরে পাগল ! কেউ হোবে কেন ? তুমি এত খপস্বরং আছ ; তুমাকে দেখে তার দিল খুলী হয়, তাই ভালোবাসে।” গৌরী যে কিছুই বুঝিল না তাহা নহে। স্বন্দর হইলে তাহাকে মানুষের ভাল লাগিতে পারে ; কিন্তু অজানা অচেন মানুষকে লুকাইয়া জিনিষ পাঠাইয়া দিবার অর্থ কি ? গেীরীর মনে কেমন একটা খটকা লাগিল । সে বলিল, “মাকে দেখাই গিয়ে ?” স্বনরিয়া ব্যস্ত হইয়া বলিল, “না, ন, মাকে দেখাতে নাই। তুমি এই দোহা পড় আর এই রুমাল রাখ। তুমার ভালো লাগে কি না লিখে দাও,আমি বাবুকে চিঠঠি দিয়ে দেব ।” গৌরী ভাবিল এর মানে কি ? একজনের আমাকে ভাল লাগিয়াছে, সে যদি কিছু দিয়া থাকে, তবে মাকে দেখাইব না কেন ? গৌরী তাহার বিগত জীবনের স্বল্প অভিজ্ঞতার সহিত কি একটা মিলাইয়া দেখিয়া স্থির ৫ করিল পুরুষের পক্ষে মেয়েদের এইরকম ভালবাসাটা ঠিক যথাযথ জিনিষ নহে, অন্তত তাহার ভিতর গোপন করার একটা প্রয়োজন আছে। স্বতরাং এটা নিশ্চয়ই খারাপ কাজ, মাকে বলিলে মা তাহাকে । বকিবেন। অতএব কিছু না বগাই গৌরী স্থির করিল। তাহার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে আর একটা সমস্তার বোঝা বাড়িল । সে স্থনরিয়াকে রুমাল ও কবিতা ফিরাইয়া দিয়া বলিল, “তুমি নিপেন-বাবুকে ফিরিয়ে দিও। আমি ত তাকে কখনও দেখিই নি । তার জিনিষ আমি নেব না।” সুনরিয়া একটু গম্ভীর হইয়া কি ভাবিল। আর বেশী পীড়াপীড়ি করিল না। চিঠি ইত্যাদি ফিরাইয়া লইয়া বলিল, “মাকে বোলো না, গৌরীরাণী । মা তা হ’লে আমাকে বক্বে। তুমাকে ভি বক্বে।” স্থনরিয়া চলিখা গেল। - সন্ধ্যায় গৌরী যখন নদীর ধারের বারান্দায় বেড়াইতেছিল, তখন আজ আবার তাহার চোখে পড়িল সেই