৬২ বিদ্যালয়ে পড়তে এল, সেদিন তা’কে দেখবার জন্যে মুদ, দোকানী, পৃষ্ঠস্থ কেরাণী যে-যেখানে ছিল সবাই রাস্তায় বেরিয়ে এল। এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই। ওর ৪০ বছর আগে সা করেছে আমরাও আজ ত| করি । কোনো মেয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে সায় তবে ভাবি এ আবার কি জানোয়ার । আজি ১৯২৬ সালে ফ্রান্সের একজন বিখ্যাত সমাজ তত্ত্ববিদ বলেছেন—ল্যাটিন-জাতের মেয়েদের ধর-কুণো করে না রাখলে আর উপায় নেই। ইটালীর একটি বিখ্যাত কাগজের সম্পাদিক। আমাকে সেদিন বলেছিলেন, আমেরিকার মেয়েদের মতন অমির কথনে হ’তে পারব না । দৃষ্টান্ত এইরকম আরও অনেক দেওয়া যেতে পারে। এই থেকেই বোঝা যাবে নারীর স্বাধীনতার অভাব আমাদের দেশেই কিছু নূতন নয়। যে-সব দেশে নারীরা চরম স্বাধীনতা লাভ করেছে বলে আমরা মনে করি সেইসব সভ্য দেশেও আজ নারীর স্বাধীনতা-সম্বন্ধে এইরকম মনোভাব বৰ্ত্তমান আছে । তবু হয়েছে । জাৰ্ম্মানীর মেয়েদের কল্পনাতীত পরিবর্তন তা’র আজকাল সব কাজে যোগ দিচ্ছে । যত-রকম স্কুলকলেজ আছে সৰ্ব্বত্র তা’র পড়তে আরম্ভ করেছে। কেউ ডাক্তারি পড়ে, কেউ উকীল হচ্ছে, কেউ টেক্নিক্যাল স্কুলে বিদ্যাভ্যাস করছে, কেউ কাগজ চালায়, কেউব লেখক হচ্ছে, কেউ বা রাইস্তাগে যাচ্ছে । মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মেয়েদের প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে,—উচু, নীচু ও মাঝারি মধ্যবিত্ত । বেযে কাজ করে’ এর নানা উপায়ে আর্থিক উন্নতি ও পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের পথ পরিষ্কার করে’ এনেছে তা প্রধানত এই কয়টি –( ১ ) গৃহস্থালীর কাজ, ( ২ ) শিল্পকাজ, (৩) বৈজ্ঞানিক ও টেক্নিক্যাল কাজ এবং (৪) সমাজ-সেবা । এর সবগুলি আলাদা করে” বিশ্লেষণ করা দরকার। '(১) গৃহস্থালী কাজ —আমাদের দেশের লোকের একটা ধারণ আছে যে, ইয়োরোপের মেয়েরা বুঝি নাচগান করে, স্ফক্তি করে, হোটেলে রেসটােরাতে ঘুরেঘুরেই জীবন কাটায়। কিন্তু তা যে কত বড় ভুল প্রবাসী— বৈশাখ, ১৩৩৩ "দেশের মেয়েদের অন্তত পচিজনের সমান । গৃহস্থের রান্নাঘরে প্রবেশ করে দেখেছি, ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড ধারণ সে-কথা শুধু এইটুকু মাত্র বললেই বোঝা যাবে যে, ওদেশে একজন মেয়ে যে-কাজ করে তা আমাদের মেঝে ঝণট দেওয়া, দেওয়াল ঝ tট দেওয়া, ঘরের ছাত বাট দেওয়া, কাপড় কাচা, ধাতুর জিনিষ পরিষ্কার করা, রান্না করা, রান্নাঘর পরিচ্ছন্ন রাখা, এত কাজ গুর দিন রাত্রি করে যে, মা দেখলে বোঝা যায় না। আমি হঠাৎ না বলে?কয়ে’ না জানিয়ে বিনা নোটিশে নানা সময়ে অনেক কোনোদিন কোনে সময়ে এতটুকু নোংরা দেখিনি । হঠাৎ ঢুকেই মনে হয়েছে যে, এটা বুঝি একটা উচু দরের ল্যাবোরেটারী। এত সব কাজ করে’ ও মেয়ের কাগজ পড়ে, ফুলের বাগান তৈরী করে, গান লেখে, ছেলেদের লেখাপড় শেখায় এবং আরো কত কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। গৃহস্থালীর এই কাজগুলি যদি অন্য লোক দিয়ে করতে হয় তবে খরচ অনেক বেশী পড়ে । কাজেই এক হিসাবে এই কাজ গুলি অর্থার্জনের একটি অঙ্গ বলে’ ধরে” নেওয়ী চলে । কিন্তু এইখানেই গৃহিণীপনার শেয নয় । জাৰ্ম্মানীতে এই গৃহিণীপনাই একটা বেশ উচুদরের ব্যবসার মধ্যে দাড়িয়ে গেছে । এই বিদ্যায় যে-সব রমণী উচ্চরূপে শিক্ষিত, দক্ষ, বা পারদর্শী, তারা নিম্নলিখিত প্রতিষ্ঠান বা আস্তানার কত্ৰী হ’য়ে উপার্জনে সক্ষম হন। (ক) হোটেল, রেস্টোর, বা ছাত্রাবাসের সর্ববিধ বিধি-ব্যবস্থার দায়িত্ব নেওয়া । (খ) স্বাস্থ্য-নিবাস পোল। —এই প্রতিষ্ঠানের চরম উন্নতি জাৰ্ম্মানীতে হয়েছে। এই স্বাস্থ্যনিবাসগুলি একাধারে হোটেল ও হাসপাতাল । কারে অসুখ হ’লে নিজ বাড়ীতে রেখে শুশ্য ও পথ্যাদির ব্যবস্থার মধ্যে অনেক ঝঙ্ক:ট আছে । এই স্বাস্থ্যনিবাসে তাদের রেখে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন দেখে যাওয়ার ব্যবস্থ} আছে । এতে সময়ের অপব্যয় থেকে ও অনেক হাঙ্গামার হাত থেকে বাচা যায়। জাৰ্ম্মানীর বড়-বড় সহরে প্রায় প্রতি রাস্তায় এইরকম স্বাস্থ্য-নিবাস আছে । (গ) ছাত্রী-আবাস খোলা । এ গুলি একাধারে
পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।