পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] আর তার উৎসাহ থাকৃত না । কিন্তু রম কোনো দিন এ-ধরণের জিজ্ঞাসাবাদ কবৃত না, অথচ সেবা আর প্রিয়কে কাছে পেলে সে ভারী খুশী হয়ে উঠত। সেজন্যে ওবাড়ীতে যাওয়া রমা বন্ধ করেনি । একদিন সেবা আর প্রিয় রমাদের বাড়ী সমস্ত দুপুরটা কাটিয়ে চলে যাবার সময় রমা বাইরের দরজা পৰ্য্যন্ত তাদের এগিয়ে এসে যখন নিজের শেবার ঘরে ঢুকুছে নখনই মতি-বাবুর সঙ্গে তার চোখে চোথী হ’ল। স্বামীর স্বভাব রমার অজ্ঞাত ছিল না, তাই একটু মুচ কী হেসে বলে—“তথন জু দু’বার কিসের দরকারে এসে ফিরে গেলে শুনি ? জানতে না কি ঘরে অন্য বাড়ীর মেয়েই আছে ?” মতি-বাৰু ইতিপূৰ্ব্বে হঠাৎ ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে মেয়েদের দেখে ফিরে গিয়েছিলেন । খালি পায়ে এসেছিলেন ব’লে মেয়ের কেউ জানতে পারেনি। একবার নদ দুবারই এই ব্যাপার ঘটেছিল –রম বুঝেছিল তার স্বামীর এই হঠাৎ আসার মূলে যে-কারণটি লুকিয়ে আছে ন। ভারী কুৎসিৎ | অবশ্ব সে সঙ্গিনীদের কাছে তার একটুও ফাস করেনি । যাই হোকু এখন স্ত্রীর প্রশ্ন শুনে মতি-বাবু বললেন— “সত্যিই গো তোমার চাবীর থোলোটার ভারী দরকার *য়েছিল—আমার রিঙট খুজে পাচ্ছিলাম না, তা ভাগ্যিস্ চাবীর থোলোটা আমার হাবিয়েছিল—” রম বললে—“কি রকম ?” মতি-বাবু বললেন—“য রটে—তা বটে। চোখ ঠটে। আজ আমার সার্থক হয়েছে, তোমার বন্ধুর সইএর পূপের খ্যাতি সহরে যা রটেছে তা মিছে না।” রমা উত্তর না দিয়ে ঘুমন্ত শিশুটিকে মাছির কামড়ে উস্থুল করতে দেখে ব্যস্ত হয়ে তাকে চাপ ড়ে মশারি ফেলে দিতে লাগল। মতি-বাবু মশারিটা একটু সরিয়ে সেই বিছানার একপাশে ব’সে বললেন—“আহা—রাগ ’ল বুঝি। ত রাগ কিসের, তোমার বন্ধুর রূপের বর্ণনা “ত আমি করিনি, কোনো দিন তাকে আমি আড়ালখাব ডাল থেকে দেখবারও চেষ্টা করিনি। বলে সত্যি fপ না—” প্রবাল ৭৬৩ রমা বিরক্ত হ’য়ে বললে—“পাড়ার কোন বউ-ঝির রূপ যে তোমার চোপ এড়িয়েছে তা ত জানি না ।” মতি-বাবু বললেন—“সেটা ত সব সময়ে ইচ্ছে ক’রে নয়, অনিচ্ছেতেও অনেককে দেখতে হয়েছে। নেহাং চোখোচোথী হ’য়ে পড়লে চোখ বন্ধ করা অভ্যেস মাতুষের নয়, তবু ভাল যে ভগবান পেছন দিকেও দুটো চোখ দ্যান নি, তা হ’লে ত সৰ্ব্বনাশ হ’ত ” “তোমার মত প্রকৃতির লোকের তাতে উপকারই হ’ত—” মুখ ভার ক’রে এই কথা বলে রমা ঘর থেকে থপ ক’রে বেরিয়ে যাবার উপক্রম কবৃতেই মতি-বাবু এগিয়ে গিয়ে স্ত্রীব হাত ধ’রে বুকের ওপর টেনে নিলেন । শশব্যস্তে রমা বলে উঠল, “কবৃছ কি, ছেড়ে দাও,. এখুনি কেউ এসে পড়বে।” “আছা হা, এ ত আর কিছু চুরির ব্যাপার না যে কেউ এসে পড়বে, দেখে কি মনে করবে, এই ভয়েতেই আমি শিউরে উঠ ব ? দিনে রাতে সদাই কি চোর হ’য়ে থাকৃতে বলো নাকি ?” এই বলে মতি-বাবু স্ত্রীর গালে আদরের চুম্বন একে দিলেন। রম কিন্তু জোর ক’রে স্বামীর সোহাগের বঁাধন কেটে নিয়ে সরে দাড়িয়ে বললে—“কিছু বলবার থাকে বলে না, শুনে নিজের কাজে যাই ।” মতি-বাবু বললেন—“এখনো ত বেল তিনটে বাজেনি, এখন আবার তোমার কাজের তাড়া কিসের ? বলছিলাম কি, তোমার নতুন বন্ধুর স্বভাব-চরিত্র কেমন দেখ ছ ?” রম রাগ ক’রে বললে—“দেখো, ওরকম খোজ নেওয়া কিন্তু তোমার ভাল দেখায় না। কার মেয়ের স্বভাব ভাল, কীর বউএর স্বভাব মন্দ, তোমার আমার সে-সব খোজে কি দর্কার ? আর-একটা কথা বলছি শোন, অনেক হয়েছে আর না ; এতদিন আমার চোখ বন্ধ ছিল, আজ আমারও চোখ ফুটেছে। মন্দ স্বভাব তুমি ছাড়, নইলে তোমার ভাল হবে না।” স্ত্রীর কাছ থেকে এমন কথা শোনা মতি-বাবুর কোনোদিন অভ্যাস ছিল না। তিনি বিরক্ত হ’য়ে ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বললেন, “তুমি স্ত্রী হয়ে আমায় শাপ দিচ্ছ না কি ?