পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] ব্যবস্থা না থাকায় তাহারা শিবিকারোহণে সুরুল হইতে গণুটীয়ার কুঠীতে যাতায়াত করিতেন। বীরভূমের গণুটীয় রেশম-শিল্পের জন্য সৰ্ব্বদেশে বিশেষভাবে পরিচিত ছিল । মেীরাক্ষী নদীর তীরে এই স্ববৃহৎ কাবৃথান রেশম-শিল্পের বিশেষ উপযোগী ছিল । রেশম-শিল্পের মূল্য বুঝিয়া ইংরেজ ও ফরাসীরা এদেশে আসিয়া নানাস্থানে রেশম-কুঠী নিৰ্ম্মাণ করেন । বীরভূমের গণুটীয়ার বিরাট কুঠী তন্মধ্যে অন্যতম । সৰ্ব্বপ্রথম ফ্রাসাডর্স ( Frushard ) সাহেব ইংরেজী ১৭৮৬ খৃষ্টাব্দে এই বিরাট কুঠার চালনা করেন। তাহার মৃত্যুর পর জন্‌ চীপ ( Jhon Cheap) সাহেব উক্ত বৃহৎ কারখানা চালাইতে থাকেন ; কিন্তু ১৮২৮ খৃষ্টাব্দে গণুটয়ার কুঠাতে তাহার মৃত্যু হওয়ায় সেক্সপিয়ার ( Shakespeare \ Hfczt{3 অধীনে উক্ত কুঠা >br○○ পৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত পরিচালিত হয়। এইখানেই ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর কৰ্ম্মচারীগণের শিল্পব্যবসা কৰ্ম্মের সমাপ্ত হয়। উক্ত কুঠী কলেক্টর কর্তৃক গৃহীত হইয়া খাসমহলরূপে কিছুদিন চালিত হয় । পরে বেঙ্গল সিল্ক কোম্পানি উক্ত কুঠী ক্রয় করিয়া তাহার পরিচালন করেন । কোটামুর, ভদ্রপুর, তারাপুর প্রভৃতি স্থানে গণুটীয়া কুঠার এক-একটি করিয়া শাখ!-কুঠা নিৰ্ম্মিত হয়। এইসমুদয় স্থানে রেশম চাষ ও রেশমী বস্ত্র বয়ন করিয়া বৈদেশিকের প্রচুর অর্থলাভ করেন । কালের গতিতে এই বিরাট কুঠ সহসা উঠিয়া গিয়া বীরভূমের উন্নতমুখী রেশমশিল্পের বহু ক্ষতি করিয়াছে। তবে বিদেশীর : ত হইতে এই শিল্প আমাদের আপন হাতে আসয় অনেক সুবিধা হইয়াছে বলিতে হইবে । হাতের তাত বিদেশী কলের তাতের প্রতিযোগিতায় পারিয়া উঠিত না বলিয়া অনেক তত্ত্ববায় ইহা পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হইয়াছিল । মুখের বিষয়, এখন আমাদের দেশী তাতে আপন হাতে পূরা স্বদেশী ভাবে রেশ মী-বস্ত্র বয়ন হইতেছে । গণুটায়ার কুঠতে প্রত্যহ দুই সহস্ৰাধিক লোক কাজ করিত । এইসমুদয় লোক আবার নানা শ্রেণীর কাৰ্য্যে বিভক্ত ছিল। কেহ রেশমী পোকা ( পলু-পোকা )-গুলির যত্ন করিত, কেহ গুটি সিদ্ধ করিত, কেহ স্থত তুলিত, సెbr=br বীরভূমের রেশম-শিল্প ዓፄ » কেহ কেহ বা আমদানি-রপ্তানি কাৰ্য্যে নিযুক্ত থাকিত । ইউরোপে সুলভে রেশমের চাষ হইলে দেশীয় শিল্পগুলি তাহার প্রতিযোগিতায় অাটিয়া উঠিতে না পারায় বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, রাজসাহী প্রভৃতি জেলার বিদেশীগণ কর্তৃক চালিত কুঠীগুলি উঠিয়া যাইতে বাধ্য হয় । বাৎসরিক লক্ষ লক্ষ টাকার আয় অবিলম্বে পরিত্যাগ করা একটা সহজ ব্যাপার নহে। ইংরেজ ও ফরাসী চালিত কুঠীগুলি উঠিয়া যাওয়ায় দেশীয় তন্তুবায়গণ তাহাদের পিতৃপুরুষ-পরিচালিত সাধের শিল্পের পুনরায় উন্নতি সাধন করিতে মনোনিবেশ করেন । বেঙ্গল সিদ্ধ কোম্পানী-ভূক্ত ভদ্রপুরের কুঠা মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর-নিবাসী সেথ মমুরুদিন মহাশয় চারি সহস্ৰ টীকায় ক্রয় করিয়া এই শিল্পটিকে উন্নতির পথে লইয়। যাইতেছেন । বাকী কুঠীগুলি একেবারে কার্ঘ্যের অনুপযুক্ত হইয়া পড়িয়াছে বলিলেই হয় । বীরভূমের মাড়গ্রাম, বসোয়া, বিষ্ণুপুর, পলস, নোয়াদ, লোহাপুর, কোটাস্কর, তারাপুর, ভদ্রপুর, মাধ্যার ও তেঁতুলিয়ার রেশমই বিখ্যাত । বীরভূমের উত্তরপূৰ্ব্ব অঞ্চলের মেীরেশ্বর থান হইতে মুরারই থানার শেষসীমা পৰ্য্যন্ত অধিকাংশ গ্রামেই রেশম-গুটি ও তুতপাতার চাষ প্রচলিত আছে। রামপুরহাটের অধীন মাড়গ্রামের তস্তবায়ুগণ রেশম-শিল্পে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করিয়াছে। বসোয়, বিষ্ণুপুর ও তেঁতুলিয়। এই গ্রামত্রয় পরস্পর হইতে বেশী দূরে অবস্থিত নহে। এই গ্রাম কয়খানিতে প্রায় সাত আট শত ঘর তাতীর বাস । তাতাপাড়া, রীরসিংহপুর, করিধা প্রভৃতি গ্রামের তন্তুবায়গণকে যেমন তসর ও সাদাস্থতার অন্যান্য বস্ত্র বয়ন করিতে দেখা যায় তেমনি এই গ্রামসমূহের তত্ত্ববায়গণকে রেশম চাষ ও রেশম বস্ত্র বয়ন করিতে দেখা যায়। তাঁতীপাড়া, বীরসিংহপুর, করিধা প্রভৃতি গ্রামে রেশমের চাষ করিতে দেখা যায় না। জলবায়ুর পার্থক্য হিসাবে বীরভূমের এইসব স্থান রেশমচাষের তাদৃশ উপযোগী নহে। যাহারাই পলুপোকার ( রেশমী-পোকা ) চাষ করে তাহারাই যে বস্ত্র বয়ন করে এমন নহে। অনেক ভঞ্জসন্তান পলুপোকার চাষ করিয়া গুটিগুলি তত্তবায়গণকে