৬৬ স্পষ্ট হইয়া পড়ে। আজকাল অনন্ত যৌবনের বাসন অনেক স্বরে ও ছন্দে বাজিয়া উঠিয়াছে—কিস্তু তার প্রথম প্রকাশ এই কবিতাটিতে— সরল এ দেহ যষ্টি সবলে আঘাতি যাও, উজ্জ্বল লোচনোপরি কুস্থাটি বাধিয়ে দাও, শুভ্ৰ হোক, কেশরাজি-এ সকলে নাহি ডরি, বাহিরের যত চাও একে একে লহু হরি, অন্তঃপুরে ক'র না গমন । আত্মার নিবাসে আছে পরশ মণিক তার তাঙ্কারে হারালে হবে এ জগৎ অন্ধকার,--- শারদ কৌমুদী ভার,--বসন্তের ফুল রাশি, কবিতা, সঙ্গীত আর প্রণয়ের আশ্ৰীহাসি আছে, যবে আছয়ে যৌবন । এ ধেীবন ভঙ্গুর দেহ ও সমাপ্ত জীবন নিরপেক্ষ । বসন্ত যেমন ফুল ফোটায়, কিন্তু ফুল-ফোটাই বসন্ত নহে, চন্দ্রোদয়ে সমুদ্রের বুক ফুলিয় উঠে,কিন্তু সে পুলক-ফীতিই যেমন জ্যোৎস্নার প্রাণ 'নহে, তেমনি যৌবন দেহে যে লাবণ্যের তরঙ্গ আনে, যাহা একদিন কুল ছাপাইয়। আকাশ বাতাস, জন্ম মরণ মধুর করিয়া তোলে, তাহারই ভাটার সঙ্গে-সঙ্গে যৌবনের অবসান নয়। আমি যেীবনের লাগি তপস্ত করিব ঘোর, কালে না করিবে জয় জীবন-বসন্ত মোর 求 岑 ః: ইlর পর যেই দিন আয়ু হবে অবসান, ন হইতে শেয এই এ পারে অরন্ধ গান, জীবন গেীবন দোহে বৈতরণ হবে পর, উজ্বল হইবে তদা পশ্চাতের অন্ধকার শরতের চাদনীর রাতে । অনন্ত-পথ-যাত্রীর শেষ হান প্রেম-সাধনার অজর পুপ এই যৌবন। তা’র পর “ভালবাসার ইতিহাস’ । প্রভাতের বাতাস যেমন কোমল স্পর্শে নদীর বুকে পুলক জাগায়, বসন্তের নিঃশ্বাস যেমন করিয়া ফুলের কুঁড়িকে বিকাশ-চঞ্চল করে, তেমনি ভালবাসা কেমন করিয়া ধীরেধীরে হৃদয়ে আসে, সেই লজ্জা-চাঞ্চল্য সেই পুলকবেদনার কথ। ইহার চেয়ে মধুর ভাষায় কোথায় ও ব্যক্ত হইয়াছে কি ? হৃদয়ের অন্তঃপুরে সব বধুটির মত ভালবাসা মৃদুপদে করে বিচরণ, পশিলে আপন কানে আপনার মৃদুগীত সরমে আকুল হ’য়ে মরে সে তখন ; প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড আপনার ছায়৷ দেখি দূরে দূরে সরি যায়, অযুতে অযুত ফুল ফুটে তার পায় পায়। শূন্ত আলয়ের মাঝে উদাদ উদাস প্রাণ, কাদে সদা ভালবাসা কেহ নাহি তার, কেহ তার নাহি বলে সকরুণ গাহে গান, সে যে গেথেছিল এক কুসুমের হার— মাঝে মাঝে কাটা তার কেমনে জড়ায়ে গেছে— টানিয়া লী ফেলে কাটা, মাল| গাছি ছিড়ে পাছে । এই যে মাল ছিড়িবার ভয়ে কাটার আঘাত নীরবে সহ্য করা—এই যে প্রেমের গোপন স্বর-—তাহার পূর্ণ প্রকাশ, মাল্য ও নিৰ্ম্মাল্যের “ভালবাসা’ কবিতায় । প্রকৃতপক্ষে ভালবাসার দুই চিত্র সকল শিল্পে অঙ্কিত হইয়াছে। এক যে উদাম প্রেম, কালবৈশাখীর মত সকল বন্ধন ছিন্ন করিয়া সকল আবরণ উড়াইয় আপনার শক্তি-শেষে তার লীলা-ক্ষেত্র শ্মশান করিয়া যায়, ঘাত। আপনাতে আপনি সম্পূর্ণ ; আর এক প্রেম, যাহা বন্ধনে মুক্ত, বাধাতে পুষ্ট, যাহার সকল সৌন্দর্য্যের অবসান মঙ্গলে, সকল বেদনার-পূর্ণত কল্যাণে । ভারতবর্ষের শিল্পীরা এই শেষ শ্রেণীর প্রেমকে আদর্শ করিয়াছেন । তাই কুমার সম্ভবের অকাল বসন্তের মন্মথজাগরিত প্রেম ধ্বংস হইয়া, কঠিন তপস্যায় পুনঃ প্রাণলাভ করিয়াছে ; তাই শকুন্তলার ক্ষণিক মোহ জাত আবেশ বিস্মৃতিতে লোপ পাইয়া, বিরহে, দুঃখে, অনুতাপে . সম্পূর্ণ হইয়াছে। তাই ভাবিতে আনন্দ হয়, পশ্চিমের বাতাস সৰ্ব্ব প্রথম এদেশের বে নারীদের অবরোধ-প্রাচীর ভাঙ্গিয়াছিল, জড়তার অবগুণ্ঠন মুক্ত করিয়াছিল, তাহার। বাহির হইয়াও এদেশের অস্তরের সে আদশের অনন্ত গৌরব ভোলেন নাই, কবি বলিয়াছেন— (). - তবে কিগে ভালবাসা, বাঞ্ছিত উদ্দেশে ভাস, ফেলিকুল, ভুলি দিক গতি নিরুদেশ ? প্রবৃত্তি-পাষণে ঠেকি, পুণ্যের বিনাশ-থেকে অকালে অকুলে হই জীবনের শেষ ? মরণ-সস্কুল ভবে লাগে ভালবাদ। তবে কোন কাজে ? আগুনের ধে টানে পতঙ্গ মরে, তাহার তীব্রত, সে মরণের মুধুরতা, স্রোতে ভাসিবার আরাম তিনি যে জানেন না তাহা নহে । আছে হেথা বাসলার ক্লেশ, নিতে স্বত্যু অভিমুখ, আছে ভাসিবার স্বপ্ন
পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।