পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գե Հ করছি। চারদিক নিস্তব্ধ। যেখানে দু' পাশের গাছের ছায়ায় রাস্ত একেবারে অন্ধকার সেখানে আমাদের ল্যাম্পের আলো অন্ধকার দূর করে যাবার যেমনি পথ কবৃছিল, ফাক রাস্তার চাদের আলোতে নিজের অস্তিত্ব মিলিয়ে ঠিক তেমনি সুবিধার কারণ হচ্ছিল। প্রায় ১০টার সময় রাস্তার পাশে খালের ধারে একটি স্বনার জায়গায় আমরা সে রাতের খাওয়া শেষ করলাম। দূরে বোধ হয় রেলওয়ে ষ্টেশনের অালে দেখা গেল । প্রবাসী—ভাদ্র, >еоа [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড সমস্ত রাত বাইক করার সঙ্কল্প কোথায় ভেসে গেল । বাকী রাতটুকু ঐখানেই কাটাব স্থির করা হ’ল । রাত ১১ , টার পর কুদরা ষ্টেশনে এসে পৌছলাম। অ্যাসিষ্ট্যান্ট ষ্টেশন মাষ্টার মহাশয় বাঙালী । আমাদের পরিচয় পেয়ে ওয়েটং রূমে থাকৃবার ও আলো জল ইত্যাদির ব্যবস্থা ক’রে দিলেন । ডিঙ্গীরি থেকে আজ মোট ২৮ মাইল অসি৷ হ’ল । কলকাত থেকে মোট ৩৭৭ মাইল এসেছি। ( ক্রমশ: ) গীতাঞ্জলি ও অতীন্দ্রিয় তত্ত্ব শ্ৰী শিবকৃষ্ণ দত্ত রবীন্দ্রনাথের ভগবৎ প্রেমের পূর্ণ পরিণতি গীতাঞ্জলিতে । উপনিষদের সার তত্ত্ব ইহার অধিকাংশ সঙ্গীতে ফুটিয়া উঠিয়াছে । মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ বালক রবীন্দ্রনাথের হৃদয়ে যাহার বীজ বপন করিয়াছিলেন, কালক্রমে তাহা অঙ্কুরিত হইয়। মহা মহীরুহে পরিণত হইয়াছে। উপনিষদে যে জটিল অতীন্দ্রিয় তত্ত্ব রহিয়াছে তাহা হৃদয়ঙ্গম করা সাধারণ মানবের পক্ষে সম্ভবপর নহে । কবি সেই দুৰ্ব্বোধ্য সত্যকে কবিত্বের কোমলতা ও মাধুর্য্যে মণ্ডিত করিয়া অপূৰ্ব্ব সঙ্গীতকারে ফুটাইয়া তুলিয়াছেন । ভগবান স্থষ্টির ভিতর দিয়া জীবকে ধে আহবান করিতেছেন, জীব ও ব্রহ্মের মাঝে যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ, তাহার প্রতি ফ্ল্য করিয়া কবি গাহিলেন :– আমার মিলন লাগি তুমি অসচ কবে থেকে তোমার চন্দ্র সুর্য্য তোমায় রাখৰে কোথায় ঢেকে । কত কালের সকাল সাঝে তোমার চরণ-ধ্বনি বাজে গোগলে দূত হৃদয় মাঝে গেছে আমার ডেকে ॥ তাহার চঞ্জ, স্থধ্য, তাহার আকাশ, জল, বাতাস, অালো তাহার অপার করুণারই সাক্ষ্য দিতেছে । জীবকে যে তিনি কত ভfলবাসেন তাহ! তিনি তাহার সৃষ্টির মধ্য দিয়া বিচিত্র ভাবে অহরহ প্রকাশ করিতেছেন । পঞ্চেন্দ্রিয়ের সহিত বাহ জগতের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ । কবির সকল ইন্দ্ৰিয়ই অতিজাগ্রত,—তাই তাহার অনুভূতিও অতি সূক্ষ্ম ; নয়ন নীলাকাশের দিকে ফিরাইলেই তাহার “নীলাকাশশায়ী” অপূৰ্ব্ব মুরতির কথা মনে পড়ে ! শ্রবণ শক্তি কবির এতই স্বক্ষ যে, তিনি বিশ্বের মধ্যে সেই অপরূপের মধুর স্বরঝঙ্কার অহরহ শুনিতে পান –“তুমি কেমন করে গান কর যে গুণী ( আমি ) অবাক হয়ে শুনি, কেবল শুনি !” ফুলের স্বগঞ্চে সেই চির মুন্দরের অমৃত স্বরূপটি যেন বিজড়িত। মৃদু মন্দ মারুতের মধুর স্পর্শখানি করুণাময় নিখিল স্বামীর সর্বময় সূক্ষ্মরূপের আভাস দিয়া যায়। এইরূপে বাহ জগতের পঞ্চভূত গ্রাহ যাবতীয় বস্তুর মধ্য দিয়া কবি অরূপের আনন্দময় সান্নিধ্যে সহজ গতি-বিধি লাভ করিয়া এক অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দ মুখ অনুভব করিতেছেন, তাই কবি দেখিতেছেন সারা স্বষ্টিতে কেবল অনাবিল আনন্দ, দুঃখের লেশমাত্র নাই – সকল আকাশ সকল ধরা আনন্দে হাসিতে ভরা, যেদিক পানে নয়ন মেলি, ভালো সৰি ভালে ।