পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বরেন্দ্র কৈবর্ত-নাংক ভীমের রাজধানী

  • S&

হয়, ব্যাখ্যাতে টীকাকার শব্দটিকে "শক্র-কৃত” বলিয়া বিশেষত না করিয়া, অধিকতর সঙ্গতের সহিত “শক্রনিৰ্ম্মিত” প্রভৃতি শব্দদ্বারা বিশেষিত করিতেন । নগরাদির নিবেশ বুঝাইতে ‘কৃত অপেক্ষা ‘নিৰ্ম্মিত প্রভৃতি শব্দের প্রয়োগ মুণ্ঠতর হইত। আরও একটি কথা—এস্থলে “আপদং” পদটিও “ডমরং” পদের বিশেষণরূপে ব্যবহৃত হইয়াছে । রাজ্যে উপপ্লব’ উপস্থিত হইলেই ইহাকে সংসারের আপদৰূপে বর্ণনা করা সম্ভবপর—“উপপুর’ কেমন করিয়া সংসারের আপদ হইতে পারে তাহা বিবেচ্য। সে যাহা হউক, ডমর-শব্দের বাস্তবিক অর্থ কি তাহাই এখন দেখা যাউক । অতি প্রাচীন কোষ রচয়িত্ত অমরসিংহ নিজ অভিধানে ( তৃতীয় কাণ্ডের সংকীর্ণ বর্গে ২১৪ ) যুদ্ধ-সম্পৰ্কীয় জয়, নিগ্রহ, অনুগ্রহ, অভিগ্রহ, সংগ্রহ, প্রভৃতি শব্দের পরিভাযা দিবার পরে সেই প্রসঙ্গেই লিখিতেছেন—“ডিম্বে ডমর-বিপ্লবোঁ”— ভানুজিদীক্ষিত ব্যাখ্যায় লিখিলেন—এই তিনটি শব্দ লুণ্ঠনাদি অর্থে প্রযুক্ত। ক্ষীরস্বামীর মতে শবত্রয় “অশস্ত্রকলহ” অর্থে প্রযুক্ত। একাদশ দ্বাদশ শতাব্দীর কোযকার “কলিকাল-সৰ্ব্বজ্ঞ” হেমচন্দ্র ও তদীয় “অভিধান-চিন্তামণি”তে যুদ্ধ-সম্পৰ্কীয় জয়-পরাজয়, অবমৰ্দ্দ-নিযুদ্ধ, পলায়ন-অপক্রম প্রভৃতি শব্দের পারিভাষিক ব্যাখ্যা দিয়া লিখিলেন (৩ মৰ্ত্তাকাণ্ডে )—“ডমরে ডিম্ব-বিপ্লবে ।” আবার তিনিই টকাতে লিখিলেন "দাম্যতি ডমর: লুণ্ঠ্যাদি । অশস্ত্রকলহ ইত্যেকে ” “দমেনিদ্ধ। দশ্চ ডঃ – (উণা ৪-২ ) ইত্যর: তত্র ।” সন্ধ্যাকরের অপেক্ষা কিছু প্রাচীনতর অভিধান-কারক যাদব-প্রকাশও র্তাহার বৈজয়ন্তী নামক কোষে এই ‘ডমর’-শব্দটিকে কোন কোন শব্দ-পৰ্য্যায়ে ধরিয়াছেন তাহাও উদ্ধৃত হইতেছে। তিনি লিখিলেন— “ডমরোপপ্লবোৎপাত উপসর্গ উপদ্রবঃ ” স্বতরাং ‘ডমর’-শব্দ যে উপপ্লব, উৎপাত, উপসর্গ বা উপদ্রব অর্থাৎ লুণ্ঠনাদিপূর্বক বিদ্রোহকে বুঝায়—সে বিষয়ে আর কাহারও কোন সংশয় থাকা উচিত নহে। অতএব ইহাই নিশ্চিত যে, রাম-চরিতের টাকাতে যাহা মূলে উপপ্লবং ছিল ( জানি না পাণ্ডুলিপিতে এখনও তাহাই আছে কি না ? ) তাহাই সম্ভবতঃ লিপিকরপ্রমাদে পাণ্ডুলিপিতে “উপপুরং বলিয়া লিখিত হইয়া থাকিবে । কিন্তু শান্ত্রিমহাশয় শব্দটিকে শুদ্ধভাবে ছাপিলেই সকলকে এতটা প্রমাদে পড়িতে হইত না । আরও একটি কথা-কবির প্রযুক্ত “অলাবীৎ’ ক্রিয়া লক্ষ্য করিয়াও ডমরকে উপপুর বলিয়া ব্যাখ্যা করা উচিত নহে । কৈবৰ্ত্তদের ডমর বা উপপ্লবকে সংসারের আপদ মনে করিয়া কবি রামপাল কর্তৃক তাহার উচ্ছেদ-সাধনের বর্ণনায় ‘অলাবৎ’ ক্রিয়ার উপযুক্ত প্রয়োগ করিয়াছেন । টীকাকার বিপৎ-পক্ষে ব্যাখ্যাতে"সংসার-বিপ্লবনাৎ’-পদের প্রয়োগ দ্বারাও ডমরের অর্থ যে-বিপ্লব তাহার স্পষ্ট সূচনা করিয়াছেন। দেশ তখন একরূপ অরাজক—ইহার নেতা নাই । অকর্ণধার নেীকার মত তাহ যেন কোথায় ভাসিয়া চলিতেছে, সেইজন্য রামপাল প্রজাবগকে নানারূপ অর্থদানাদিদ্বারা সন্তোষিত করিয়া তাহাদিগকে বিপদ হইতে উদ্ধার করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। ডমর-পক্ষের ব্যাখ্র্যাতেও টীকাকার স্পষ্টতরভাবে লিখিলেন যে, রামপাল এই ডমর ( বিপ্লব ) করপল্লবলীলা দ্বারা অর্থাৎ আয়ুধচেষ্ট দ্বারা দমন করিয়াছিলেন। ‘ডমরকে এইস্থানে উপপুর বা স্থানবিশেষের সংজ্ঞ মনে করিয়া কেহ ভ্রাস্তিতে আর না পতিত হন—এইজন্যই সেইরূপ ব্যাখ্যার এইরূপ প্রতিবাদ করা হইল। বরেন্দ্ৰ-ভূমিতে কৈবৰ্ত্ত-নায়ক ভীমের কোন স্বতন্ত্র নগর বা উপপুর ছিল না—থাকিলেও তাহার নাম কিছুতেই ‘ডমর’ হইতে পারিত না। ঐতিহাসিকগণের অকারণ দুর্ব্যাখ্যায় ব৷ ভ্রাত্তিতে ঐতিহাসিক সত্যের অপলাপ না হয়—এই প্রবন্ধ লিখিবার ইহাই প্রধান উদ্দেশু। কারণ, পরবর্তী লেখকগণ গতানুগতিতেই বেশী চলেন-ভুলটা দৃঢ় হইয়। গেলে তাহার ত্যাগের ইচ্ছা সরল হয় না। তথ্যের সন্ধানে অত্যুৎকট কল্পনার আশ্রয় লওয়া বাঞ্ছনীয় न८३ ।। هلا لا سهلا له وذ