পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] ন-কোনো অর্থকরী বৃত্তিতে নিযুক্ত। প্রাপ্তবয়স্ক অবিবাহিত কন্যাকে পিতামাতার উপর আর্থিক হিসাবে নির্ভর করিতে প্রায় দেখা যায় না। নারীদের মাহিনা অবশ্য পুরুষদের অপেক্ষ কিঞ্চিং কম। কোনো কোনো কাজে অবিবাহিতা মেয়েদেরই লোকে বেশী চায়। স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা পত্নীই সন্তানদের অভিভাবক হইতে পারেন। আদালতে জুরী হইবার অধিকার নারীর আছে। যে-নারী সমাজের কোনো কল্যাণ-চেষ্টায় ব্রতী থাকে, সে অবিবাহিত, বিবাহবিচ্ছিন্না এমন-কি সস্তানবতী কুমারী হইলেও সমাজ তাহাকে কোনো প্রকারে নিগ্রহ করে না । তথাপি যে অষ্ট্রিয়ান রমণী জাতীয় জীবনে আশামুরূপ প্রভাব বিস্তার করিতে পারিতেছে না, তাহার একটি গুরুতর কারণ আছে। মহাযুদ্ধের ফলে অষ্ট্রিয়াদেশ বিশেষভাবে নিপীড়িত হইয়াছে ; এবং বিশেস করিয়া সখানকার নারীদেরই যুদ্ধদানব আর্থিক অভাব ও পারিবারিক শোকদুঃখ ও লাঞ্ছনায় একেবারে মুহমান করিয়া ফেলিয়াছে। যুদ্ধের এই শোকাবহ পরিণামকে জয় করিয়া আর্থিক ও পারিবারিক দুঃখের উপরে উঠিয়া আদশ জীবন নিৰ্ব্বাহ করিবার জন্য যে উদ্ধ ও শক্তি ও ত্যাগ breą উৎসাহ থাকা দরকার নারীরা আজও তাহা সংগ্ৰহ করিতে পারেন নাই, তাই জাতীয় জীবনে র্তাহীদের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি এখনও তেমন দৃঢ় হয় নাই । আমি প্রধানত সাহিত্যক্ষেত্রের রচনা ও অনুবাদাদির কাৰ্য্য লইয়াই থাকি ; নারীর ভোট-সংগ্রামের সহিত আমার সাক্ষাৎ সম্বন্ধ বিশেষ ছিল না ; তবে নারী পরিচালিত সামাজিক হিতসাধন ব্যাপারে আমি ১৯১৫ সাল হইতে যুক্ত ছিলাম। ১৯১৭ হইতে ১৯১৯এর মধ্যে অষ্টিয়ার শক্ৰদেশীয় যত নারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমবেত করিয়া ব্যার্ণ এবং জুরিকে যে আন্তর্জাতিক নারীসংঘের অধিষ্ঠান হয় তাহাতে আমি শাস্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করিয়াছি, এবং যুদ্ধের ফলে যে লক্ষ লক্ষ শিশু অনাথ হইয়াচে, তাহীদের লালন-পালনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত নিখিল ইউরোপীয় নারীসংঘেরও সেবিকা ছিলাম । আমার ভারতীয় যে-সকল ভগ্নীরা শাস্তি,মৈত্রী ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার কায্যে জীবন উৎসর্গ করিয়া সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইয়াছেন, তাহদের আমার আস্তরিক শ্রদ্ধা, প্রীতি ও সঙ্গষ্ঠভূতি নিবেদন করিতেছি। ত্যাগ শ্ৰী শচীন্দ্রকুমার মৈত্র ( বিবেকানন্দের অমুসরণে ) ভোগ না করিলে ত্যাগের মৰ্ম্ম বুঝিবে কে ? বিলাসীর ত্যাগ সকল ত্যাগের বাড়া, নৃপতি নহিলে কি ত্যাগ করিবে ভিক্ষুকে ? পথ কি দেখাবে যে-জন দৃষ্টি-হারা ?