পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१३ বস্বতই খৰ্ব্বত ঘটে যদি জবরদস্তির দ্বারা তাহাদিগকে ফার্সি শেখাইবার আইন করা হয়। বাংলা যদি বাঙালী মুসলমানের মাতৃভাষা হয় তবে সেই ভাষার भर्श शिाई তাহাদের মুসলমানিও সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ হইতে পারে। বর্তমান বাংলা সাহিত্যে মুসলমান লেখকের প্রতিদিন তাহার প্রমাণ দিতেছেন। র্তাহীদের মধ্যে র্যাহারা প্রতিভাশালী, তাহারা এই ভাষাতেই অমরত লাভ করিবেন। শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষাতে র্তাহার। মুসলমানী মালমসলা বাড়াইয়া দিয়া ইহাকে আরো জোরালে করিয়া তুলিতে পরিবেন। বাংলা ভাষার মধ্যে ত সেই উপাদানের কম্‌তি নাই—তাহাতে আমাদের ক্ষতি হয় নাই ত। যখন প্রতিদিন মেহল্লখ করিয়া আমরা হয়রান হই, তখন কি সেই ভাষায় আমাদের হিন্দুভাবের কিছুমাত্র বিকৃতি ঘটে ? যখন কোনো কৃতজ্ঞ মুসলমান রায় তাহার হিন্দু জমিদারের প্রতি আল্লার দোওয়া প্রার্থনা করে, তখন কি তাহার হিন্দু হৃদয় স্পর্শ করে না ? হিন্দুর প্রতি বিরক্ত হইয়। ঝগড়া করিয়া যদি সত্যকে অস্বীকার করা যায়, তাহাতে কি মুসলমানেরই ভালো হয় ? বিষয়-সম্পত্তি লইয়া ভাইয়েভাইয়ে পরস্পরকে বঞ্চিত করিতে পারে, কিন্তু ভাষ|সাহিত্য লইয়৷ কি আত্মঘাতকর প্রস্তাব কখনো চলে ? কেহ কেহ বলেন, মুসলমানের ভাষা বাংলা বটে, কিন্তু তাহা মুসলমানী বাংলা, কেতাবী বাংলা নয়। স্কটুলণ্ডের চলতি ভাষাও ত কেতাবী ইংরেজি নয়, স্কটুলগু কেন, ইংলণ্ডের ভিন্ন-ভিন্ন প্রদেশের প্রকৃত ভাষা সংস্কৃত ইংরেজি নয়। কিন্তু তা লইয়াত শিক্ষ-ব্যবহার কোনো দিন দলাদলির কথা শুনি নাই। সকল দেশেই সাহিত্যিক ভাষার বিশিষ্টত থাকেই । সেই বিশিষ্টতার নিয়ম-বন্ধন যদি ভাঙিয়া দেওয়া হয়, তবে হাজার-হাজার - গ্রাম্যতার উচ্ছম্বলতায় সাহিত্য থান থান হইয় পড়ে। . স্পষ্ট দেখা যাইতেছে, বাংলা দেশেও হিন্দু-মুসলমানে বিরোধ আছে। কিন্তু দুই তরফের কেহুই একথা বলিতে পারেন না যে এটা ভালো। মিলনের অন্য প্রশস্ত ক্ষেত্র আজে প্রস্তুত হয় নাই। পলিটিক্সকে কেহ কেহ এইরূপ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩ee .[ &sч stч, эх «e" ক্ষেত্র বলিয়া মনে করেন, সেটা ভুল। আগে মিলনট সত্য হওয়া চাই, তা’র পরে পলিটিক্স সত্য হইতে পারে। খানকতক বে-জোড় কাঠ লইয়া ঘোড়া দিয়া টানাইলেই যে কাঠ আপনি গাড়িরূপে ঐক্য লাভ করে একথা ঠিক নহে। খুব একটা • খড় খড়ে ঝড় ঝড়ে গাড়ি হইলেও সেটা গাড়ি হওয়া চাই। পলিটিক্সও সেইরকমের একটা যানবাহন। যেখানে সেটার জোয়ালে ছাপ্পরে চাকায় কোনোরকমের একটা সঙ্গতি আছে সেখানে সেট। আমাদের ঘরের • ঠিকানায় পৌছাইয়া দেয়, নইলে সওয়ারকে বহন না করিয়া সওয়ারের পক্ষে সে একটা বোঝা হইয়া উঠে। বাংল। দেশে সৌভাগ্যক্রমে আমাদের একট, মিলনের ক্ষেত্র আছে। সে আমাদের ভাষা ও সাহিত্য । এইথানে আমাদের আদানে-প্রদানে জাতিভেদের কোনো ভাবনা নাই । সাহিত্যে যদি সাম্প্রদায়কিতা ও জাতিভেদ থাকিত তবে গ্রীকৃ সাহিত্যে গ্রীকৃ দেবতার লীলার কথা পড়িতে গেলেও আমাদের ধৰ্ম্মহানি হইতে পারিত । মধুসূদন দত্ত খৃষ্টান ছিলেন। তিনি শ্বেতভূজা ভারতীর ধে বন্দনা করিয়াছেন সে সাহিত্যিক বন্দনা, তাহাতে কবির ঐহিক পরিত্রিক কোনো লোকসানের কারণ ঘটে নাই। একদা নিষ্ঠাবান হিন্দুরাও মুসলমান-আমলে আরবী ফাসি ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন ; তাহাতে র্তাহাদের ফোট ক্ষীণ বা টিকি থাটো হইয় যায় নাই। সাহিত্য পুরীর জগন্নাথক্ষেত্রের মতে, সেখানকার ভোজে কাহারো জাতি নষ্ট হয় না। - অতএব সাহিত্যে বাংলা দেশে যে একটি বিপুল মিলন-যজ্ঞের আয়োজন হইয়াছে, যাহার বেদী আমাদের চিত্তের মধ্যে, সত্যের উপরে ভাবের উপরে যাহার প্রতিষ্ঠ, সেখানেও হিন্দু-মুসলমানকে যাহারা কৃত্রিম বেড়া তুলিয়া পৃথক্ করিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছেন তাহার মুসলমানেরও বন্ধু নহেন। দুই প্রতিবেশীর মৃধ্যে একটা স্বাভাবিক আত্মীয়তার যোগস্থত্রকেও র্যাহার ছেদন কুরিতে চাহেন, তাহাদের অন্তধ্যামীই জানেন তাহার ধর্শ্বের নামে দেশের মধ্যে অধৰ্ম্মকে আহবান করিবার পথ খনন করিতেছেন। কিন্তু আশা করিতেছি তাহাদের চেষ্টা ব্যর্থ হইবে । কারণ, প্রথমেই বলিয়াছি বাংল