পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وي8N بو! প্রবাসী—ভাদে, ১ওee [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রাচ্যে বৃটিশের প্রভুত্ব আর কতদিন থাকিবে ? ‘জাপান উইকৃলি ক্রনিকূল এশিয়ার শ্রেষ্ঠ সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলির অন্যতম। সম্প্রতি এই পত্রিকাতে জাপানী সংবাদপত্ৰ-মহলে প্রাচ্যে বৃটিশ প্রভুত্বের কতদূর ও কি কারণে হানি হইয়াছে সেই বিষয়ে যে-সকল মতামত বাহির হইয়াছে তাহার একটি বর্ণনা প্রকাশিত হইয়াছে। আমরা এবিষয়ের সত্যমিথ্যা আলোচনা না করিয়া শুধু জাপানীদিগের এসম্বন্ধে কি-প্রকার ধারণা তাহাই উইকৃলি ক্রনিক্ল এর প্রবন্ধের সাহায্যে দেখাইতে চেষ্টা করিব । জাপানী কাগজগুলিতে যখন বৃটেনের “যন্ত্রণা” ( anguish ) সম্বন্ধে কোন আলোচনা উত্থাপিত হয় তখন প্রধানত বৃটেনের চীনদেশে প্রভুত্বহানির কথাই বলা হয়। এই “যন্ত্রণা”র বিষয়ে “হোচি" (Hochi) নামক সংবাদপত্র বলেন যে, বৃটেনের পক্ষে বর্তমানে পৃথিবীতে নিজের শক্তি ও প্রতিষ্ঠা অক্ষুন্ন রাখা ক্রমশ দুরূহ হইয়া উঠিতেছে। বৃটেনের শক্তি প্রধানতঃ প্রাচ্যের পূৰ্ব্বতম দেশগুলিতেই স্বপ্রতিষ্ঠিত ছিল এবং সে-সকল দেশে ঐ শক্তি অদম্য বলিয়াই গ্রাহ হইত। সম্ভবত ইয়োরোপীয় যুদ্ধ না হইলে এশক্তি আরও বহুকাল অক্ষুণ্ণ থাকিত । কিন্তু বৃটেনের দুর্ভাগ্যক্রমে মহাযুদ্ধ লাগিয়া পৃথিবীর জাতিগুলির পরস্পরের তুলনায় শক্তির অনেক পরিবর্তন ঘটিয়া গেল এবং এই পরিবর্তন প্রাচ্যে বিশেষ করিয়া স্পষ্ট হইয়া উঠিল । একথা অনায়াসে প্রমাণ করা যায় যে, যুদ্ধের পূৰ্ব্বে এশিয়ার অতি অল্প স্থান ব্যতীত সৰ্ব্বত্রই বৃটিশের প্রভুত্ব পুরামাত্রায় বজায় ছিল। যুদ্ধের পরে এঅবস্থার অনেক পরিবর্তন ঘটিয়াছে। তুরস্কে বৃটিশের বিরুদ্ধবাদীগণ নিজেদের আদশানুরূপ কাৰ্য্য করিতে সক্ষম হইয়াছেন। পারস্তে বৃটিশ প্রভুত্ব সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয় নাই বটে, কিন্তু সে-প্রভুত্ব আর পূৰ্ব্বের ন্যায় প্রবল নাই। ভারতবর্ষে বৃটিশ রাজত্ব এখনও রহিয়াছে; কিন্তু একথা অস্বীকার করা যায়না যে, সে-দেশে শাসন-কাৰ্য্য ক্রমশঃ কঠিন হইয়া উঠিতেছে। বৃটিশ শাসকদিগের হস্তে আন্তর্জাতিক খবরাখবর প্রেরণের ক্ষমতা এতটা রহিয়াছে যে, এক্ষণে ভারতের যথার্থ অবস্থা কি তাহ বলা শক্ত ; কিন্তু এটুকু বেশ বুঝা যাইতেছে যে, গত কয়েক বৎসরের মধ্যে ভারতে একটি অসাধারণ রাষ্ট্রীয় জাগরণ জাসিয়াছে। পালামেণ্টে কিছুকাল পূর্বে শ্ৰীমতী বেলাস্তের হোমরুল বিল লেবর-পার্টির সাহায্যে প্রথম বাৰু গাঠ হওয়ার অবস্থা পার হইয়াছে। ভারতীয় এ্যাসেম্বলীতে স্বরাজীদিগের ব্যবহার শাস্তু হইলেও তাহার ভিতর বিপদের বীজ নিহিত রহিয়াছে । মার্চ মাসে তাহার, গভর্ণমেণ্ট প্রশ্নের উত্তর না-দেওয়াতে সদলবলে এ্যাসেম্বলীগৃহ পরিত্যাগ করে। মোটের উপর বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের ভারতে বিপদাশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ অাছে । চীনে বৃটিশ-বিরুদ্ধতা বৃটিশ কৰ্ম্মচারীগণের সর্বাপেক্ষ ভয়ের কারণ তাহদের চীনদেশে শক্তিহ্রাস। ক্যান্টন প্রদেশে বৃটিশ-বিরুদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে হংকংএর বাণিজ্য শতকরা ৫০ ও ংকংএর লোক-সংখ্যা শতকরা ৩০ কমিয়া গিয়াছে । কুয়োমিংটাং ( Kuomingtang ) যখন ক্যান্টনে প্রথমে বৃটিশদিগকে বয়কট করিতে আরম্ভ করে, তখন বৃটিশ কৰ্ম্মচারীগণ তাহাদের তাচ্ছিল্যের চক্ষেই দেখিয়াছিল, কিন্তু বৰ্ত্তমানে তাহদের এবিষয়ে মত সম্পূর্ণ বিভিন্ন রূপ ধারণ করিয়াছে । ইয়াংসি ( Yangtse ) বরাবরও বৃটিশ-বিরুদ্ধতা বৃদ্ধি পাইতেছে। সাংহাইয়ে যখন জাপানী স্থতার মিলে ধৰ্ম্মঘট হয় তখন চীনাদিগের মধ্যে বৃটিশ-বিদ্বেষের পরিবর্তে জাপানী-বিদ্বেষ প্রচার করিবার বহু চেষ্ট হয়। ইহার উদ্দেশ্য ছিল চীনাদিগের বিদ্বেষ-বহ্নি হইতে বৃটিশদিগকে বাচাইয়৷ জাপানীদিগকে ঘায়েল করা। কিন্তু এই চেষ্টা ব্যর্থ হয় । সকল দিক দিয়া দেখিলে দেখা যায় যে, বৰ্ত্তমানে বৃটেন্‌কে চীনে নিজেদের পূর্বকালীন রাষ্ট্রীয় প্রথা পরিবর্তন করিয়া চীনাদিগের মতানুসারে কার্ষ্য করিতে হইবে, এইরূপ একটা দুৰ্দ্দমণীয় প্রয়োজনীয়তার আবির্ভাব হইয়াছে। হোচি (Hochi) পত্রের মতে যদিও বৃটেন, এ কঠিন সমস্তায় পড়িয়া সকলের সহানুভূতি পাইতে পারে তথাপি তাহার পক্ষে যাহা প্রাচ্যের জাগরণের স্বাভাবিক ফল তাহা হইতে রক্ষণ পাওয়া সম্ভব হুইবে না। জাপান বৃটেনের বিপক্ষে নহে চুয়ো (Chao) পত্র বলেন যে, ইহা অতিশয় আশ্চর্ঘ্যের বিষয় যে, চীনে বিদেশী-বিরুদ্ধতা ক্রমশঃ অধিক পরিমাণে বৃটিশ-বিরুদ্ধতায় পরিণত হইতেছে। চুয়োর টােকিও প্রতিনিধির মতে ৩০শে মের ঘটনাবলি সমস্তই বৃটিশের উদ্দেশ্যে ঘটিয়াছিল। যদিও জাপানী মিলেই এসকল ঘটনার সূত্রপাত হয় তথাপি উহার আসল উদেশ্ব ছিল বৃটেনের বিরূদ্ধাচরণ। জাপান নাম দিয়া কাৰ্য্যারম্ভ সহজ হুইবে বলিয়াই এরূপ ভাবে ধর্শ্বঘট আরম্ভ হয় । একথার সত্যতা প্রমাণ হয় যখন আমরা দেখি যে, ঐসকল ঘটনার ফলভোগ বৃটেনকেই অধিক করিতে হয়। জাপাশী বয়কট