১ম সংখ্যা ] আত্মদর্শন ፃፃ হইতেই প্রস্তুত সেই সব স্বর্থী নিরুদ্বেগ মানুষদের বলি— তোমাদের ভগবান, ভক্ত, সাধু ও পুরোহিতগণকে ধ্যান ও পূজাৰ্চনা করিয়া যাও, সেই বিশ্বাস তোমাদের অধাত্মজীবনের সত্য, তাহাই তোমাদের আনন্দ। আমি যাহা কিছু দিতে চাই তাহাতে তোমাদের হয়ত কোন কাজ নাই। সমস্ত প্রাণ দিয়া বিশ্বাস করিয়া যাও—তোমাদের দেবতা আমারও দেবতা। শুধু স্মরণ করাইয় দিই যে, যে চোখে তোমাদের দেবতাকে দেখিতেছ সেই চোথই র্তাকে আপন সীমায় যেন সঙ্কীর্ণ না করে । করিলে ক্ষতিই বা কি ? তোমাদের দেবতা তোমাদের আদর্শের নীচে ঘাইতে পারেন না। তোমাদের আনন্দ সেইখানেই । আমার দেবতা তার বৃহত্তর রূপে আমার কাছে নিজেকে প্রকাশ করিয়াছেন—আমার দেবতা তোমাদের আমার দেবতাকে দেখিতে আমার নিজের চোপে কুলায় না, তোমাদের চোখ আমার দরকার ; তাই আমার অহম্কে চাপিয়া আমি তোমাদের সঙ্গে সেই গভীর রহস্য-নিকেতনে যাইতে চাই যেখানে তোমাদের ও আমার জীবন ধারার মূল উৎস। সকলেরই জীবনের কুলদেশে আমাদের দেবতাকে দেখিতেছি,–এই সহজ আবিষ্কারটি আমার সমস্ত দুঃখবেদনাকে সার্থক করিয়াছে, অর্ণমায় আনন্দে পূর্ণ করিয়াছে—ইহাই আমি আনন্দের .. যুদে তোমাদের উপহার দিতে আসিয়াছি। সকলের । ( > ) সত্যের অভিসারে বাহির হইতে হইলে যতটুকু ইচ্ছাশক্তি ও আত্মশক্তির প্রয়োজন তাঙ্গ সঞ্চিত হইয়াছে বলিয়া অনুভব করিলে দেকাৰ্ত্তের ( Descartes ) পস্থা অমুসরণ করিতে হুইবে ; এই বিশ্বজগৎ সম্বন্ধে অন্তলোকের যত ধারণ ব্যাখ্যাদি আছে তাহা যেন নাই এইভাবে সমস্ত পূৰ্ব্বসংস্কার মুক্ত হইয়া স্বরু করিতে হইবে। যে কোন বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে সমস্তকেই সন্দেহ করিতে হইবে ; থাকিবে শুধু একটিমাত্র অসন্দিগ্ধ অটল *f**f** "Minimum quid quod certum sit et inconcussum.” যদি সেই কেন্দ্রটির সত্য-অবস্থান কোথাও থাকে, যদি তাহাকে কোথাও স্থির-নিবদ্ধ করা যায়, সে আমার এই . আমিত্বের মধ্যে, কারণ যাহা কিছু আছে সমস্তই এই ‘আমি’র সাহায্যে আমার মধ্যেই দেখিতে পাই। সুতরাং যাহা কিছু আমার বাহিরে আছে ও বাহির হইতে আসিতেছে বলিয়। বোধ হয় সমস্তকে এড়াইযা আমার আমিত্বের মধ্যে ঝাপ দিতে হইবে । তবেই শুদ্ধতম সত্যতম সত্তার উপলব্ধি সম্ভব। সার সত্য যদি কোথাও থাকে সে ঐখানেই । এই অনুসন্ধানের যে ফল পাইয়াছি তাহ প্রথমে দুই এক কথায় ইঙ্গিত করিব, পরে তাহার বিকাশটি দেখাইতে চেষ্টা করা যাইবে । (ক) . নিরপেক্ষ বাস্তব কোথাও নাই, আছে শুধু বৰ্ত্তমানের ইন্দ্রিয়চেতন| (sensation) । ইহাকে অস্বীকার করিবার উপায় নাই ; কোন যুক্তি বা তর্ক ইহাকে টলাইতে পারে না, Sganarcle এর ভাণ্ডার সামনে সন্দেহবাদী Marphurius এর কোন সন্দেহই দাড়াইতে পারে না । (মলেয়ারের ‘দায়ে পড়ে দারপরিগ্রহ’ দ্রষ্টব্য । ) (খ) নিরপেক্ষ নিশ্চয়তা কোথাও নাই, আছে শুধু আমাদের আমিত্ব ও আমিত্বের ভিতর দিয়া “সত্তা’র । উন্মেষ। Spinoza তাহার নীতিগ্রন্থের ( Ethics ) প্রারম্ভে ইহার আভাস দিয়া গিয়াছেন । এই নিশ্চয়তার বিরুদ্ধে কোন বাস্তবই টিকিতে পারে না ; এই নিশ্চয়ত আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি ও আমাদের চিত্তবৃত্তির প্রেরণা ; ক্ষুধা ও তৃষ্ণার হ্যায় ইহা আমাদিগকে আকর্ষণ করিতেছে। সমস্ত দার্শনিক তর্ক এই দুইটি বিচার ধারায় উপনীত করে ; ইহাদের মধ্যেই সমস্ত চিস্তার পর্য্যবসান। কিন্তু এই দুইটি বিযুক্ত হইলেই অসম্পূর্ণ। আমিত্বের মধ্যে : সত্তার বিকাশ যুক্তিকে বাদ দিয়া বুঝা ধায় না ; বর্তমানের ইন্দ্রিয়চে বন! আবার সর্বদা নিশ্চয়তার অটল ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়। যুক্তি আসিয়া তাহদের সন্দেহ করিতে পারে । কিন্তু কোনই সন্দেহ নাই এইখানে যে, আমাদের একদিকে আছে নিশ্চয়তা আর একদিকে বাস্তব। এই দুই এর কোন একটির কাছে আত্মসমর্পণ করিতে
পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।