পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] আত্মদর্শন Ե-) লোপ পাইতেছে—দেশ ও কালের মিলনের সেই কল্পমুহূৰ্ত্তে—নিখিলবিশ্বের ছন্দ-নৃত্যে ভূমাকে দেখিব । এই আমার সঙ্কীর্ণ হৃদয়ের মধ্যে—এই ক্ষুদ্র আমিত্বের বুকেই নিৰ্ব্বিকল্প-অহং, ভূম-অহম ঘুমাইতেছেন। এই একক অহম রম্য রলণর মধ্যে আছে, এবং তাহার প্রত্যেক খণ্ড-চেতনার মধ্যেও আছে, কিন্তু সমস্তকে ছাড়াইয়াও আছে। সেই বিরাটু আমি, রম্য রলার বাহিরে যাহা কিছু আছে—সেই সকল আত্মা ও দেহ সবকে পরিব্যাপ্ত করিয়া আছে । আমার এই মহান চলনধৰ্ম্মী বৰ্ত্তমানের মধ্যে আমি অগণ্যরূপে বিকশিত হইতেছি—এই বিবৰ্ত্তনের মধ্যে ছেদ নাই ইহার শেষ নাই । - আমার অসংখ্য রূপের মধ্যে একটা রূপ একটা পদবী হইতেছে রম্যারল । তবে কেমন করিয়া নিৰ্ব্বোধের মত ভুলিয়া আছি যে ইহাই আমার একমাত্র সত্তা নয়, আমার নিখিলকে প্রাণে পূর্ণ করিয়া আছেন সেই ভূম ? এই ভ্রম আমার বড়-আমির নহে; এই ভূমা আমি দুরে এবং অন্তিকে, একই কালে ইহা এই খণ্ড-জীব এবং সমস্ত জীব-গোষ্ঠ। স্বতরাং ভ্রম করিতেছে রম্য রল। কারণ সে ভূমার অংশমাত্র, পূর্ণ ভূম নহে। কিন্তু ইচ্ছা করিলে এই সঙ্কীর্ণ-আমি ভূম-আমিতে পৌছিতে পারে, সেই সৰ্ব্বব্যাপীর সৰ্ব্বাঙ্গভূত্ব লাভ করিতে পারে, পুরা মাত্রায় অনুভব করিতে না পারিলেও আভাসে বুঝিতে পারে। আমার মধ্যে ভূম কেমন করিয়া আছেন? নিখিল সত্তার সঙ্গে আমার মৌলিক যোগ রহিয়াছে ন্তিবাহভূতির * : *k, **safo (indeterminate) ইহলেও ক্রমশঃ বুদ্ধিবৃত্তির (reason) শৃঙ্খলায় পৰ্য্যবসিত হয়। প্রত্যেক খণ্ড আমি ও তাহার মধ্যে আবদ্ধ খণ্ডিত বিশ্বের প্রত্যেক আংশিক প্রকাশ, একটি পথ দিয়া অনন্তের সঙ্গে কারবার করিতে পারে। ইহা বুদ্ধিবৃত্তির পথ—ইহাই অনন্তের দিকের বাতায়ন (femetre de l'Eternite) ** for Rossi (Intuition) arso কাছে আইসে, প্রত্যেকের মূল প্রকৃতির রূপটি চকিতে দেখাইয়া দেয় এবং তখনি আমরা আপন আপন সঙ্কীর্ণ সীমাগুলি চিনিয়া লই—অথচ সেইসঙ্গেই, যে বিরাট জীবন হইতে দুরে পড়িয়া আছি, তাহার অসীম বিস্তারটিও দেখিতে > > পাই। ভূমার বোধ জীবন্ত জাগ্রত হইলে আর বুদ্ধির যেন কাজ থাকে ন—শুধু "স্ব"-ভাবটির বোধ বজায় রাখিয়৷ গেলেই যথেষ্ট। এই আত্মবোধের অতল সমুদ্র এবং তাহার অসীম চাঞ্চল্য ভেদ করিয়া আছে শাশ্বত শান্তি! বুদ্ধি এই অখণ্ড ভূম-চৈতন্তের একটি নিম্নস্তরের রূপমাত্র— ইহা আপেক্ষিক সত্তার রূপ—ইহা বস্তুত দেবরূপ নহে, নরদেব অবতার। অখণ্ড পূর্ণ চৈতন্যই ভূমা ভগবান। ভূমাই জীবাত্মাসমূহের যোগসূত্র পরমাত্মার সহিত প্রত্যেক জীব কি বন্ধনে যুক্ত তাহা আমরা দেখিয়াছি ; এক্ষণে দেখা যাকৃ জীবসকল কোন যোগস্থত্রে গ্রথিত এবং কিভাবে ভূমাকে অবলম্বন করিয়া জীবাত্মাসকল প্রত্যেকের সঙ্গে যোগ স্থাপন করে । যাহা-কিছু জীবন্ত, সকলই যদি আমার আমির রূপান্তর হয়, তাহা হইলে আমার বর্তমান অবস্থায় যখন আমার চোখ খুলিয়া গিয়াছে এবং আমার ব্যক্তিগত জীবনের মোহ কাটিয়াছে—-তখন কেন আমি আমার ইচ্ছামত যে-কোন জীবে প্রবেশ করিতে পারি না ? সমস্তই কি ভূম নয় ? এবং ভূমা কি আমার এই আমি নন ? তবে কেন আমার এই চারিদিকের জীবদের বুঝিতেও পারি না ? তাহারা কি আমারই অংশ মাত্র নয় ? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া দরকার ; আমাদের প্রত্যেকেই ভূমার অর্থাৎ চিরন্তন একের অংশ, কিন্তু আমাদের রূপ যে আপেক্ষিক ও ব্যক্তিগত। ভূমাই কেন্দ্র এবং তাহার সঙ্গে প্রত্যেক খণ্ড চেতনা ও সম্ভাব্যতার সমষ্টিই সংযুক্ত । অন্য কোন প্রকারের সংযোগ আর সম্ভব নহে ; এই যে সঙ্কীর্ণ দেহভাণ্ড, যাহার মধ্যে আমাদের আত্মা আবদ্ধ হইয়া অন্য আত্মা হইতে পৃথক হইয়া পড়িয়াছে, এই দেহভাগুটি চূর্ণ করিয়া সমস্ত অন্তরাল দূর করিতে পারে শুধু মরণ। কিন্তু এই জীবনেই আত্মায়-আত্মায় যোগ কত দূর অবধি যাইতে পারে? আমার এই ছদ্মবেশের মোহ কাটাইয়াছি ; আমার যথার্থ সত্তার স্মৃতি জাগিয়াছে, প্রজ্ঞার সাহায্যে আমার ভূম-স্বরূপ অবধি অধিরোহণ করিতে পারি ; তাহা হইলে অবরোহণ-ক্রমে