পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

な)? বৃষ্টিটায় ধানের চারা এক হাত বেড়ে উঠবে । তার পর মনে পড়ল, সরকারদের এদে পুকুরে খুব সম্ভব কইমাছ উঠতে লেগেছে ; বৈশাখ মাসের প্রথম বৃষ্টি—এ সময় মাছ ডাঙায় না উঠে যায় না। গামছা মাথায় সে চুপি চুপি বেরুল ৷ পুকুরের কোণে কাট-বিটকের ঝোপ । জীবধর সেইখানটায় চুপ ক'রে বসে রইল। জলস্রোত গড়িয়ে পড়ছে। মাছ থলুবল করছে, কিন্তু একটাও ডাঙায় ওঠে না। —হ’ল কিছু ? ঘাড় তুলে দেখে কানাই গায়েন। হাতে তার একট। খালুই। সে-ও একই উদ্দেশে বেরিয়েছে। কানাই বলল— এখানে কিছু হবে না, বার জনে ঘাট দিয়ে গেছে। তার পর ফিস-ফিস ক'রে বলতে লুগিল—মাঠের দিকে যাই চল। নৈমদি মোড়ল শোলা-বনে চারে পেতেছে । বিশ-ত্রিশথান পেতেছে । চারো কই-মাগুরে ভরে গেছে । সোলা-বনের মাগুর—জান ত ? কানাই ছু-হাতে মাগুর মাছের যে আয়তন দেখাল, রুই-কাংলাও অত বড় হয় না। পায়ের উপর দিয়ে স্রোত চলেছে, ছপছপ ক’রে ছু-জনে মাঠের দিকে চলল। জীবধর বলল—নৈমন্দ্বি যদি ঘাপটি মেরে বসে থাকে কোথাও ? →বয়ে গেছে নৈমন্দির । যাত্রার দল ক’রে বেড়ায়, এই বৃষ্টিতে বৈঠকঘরে কথা মুড়ি দিয়ে নাক ডাকছে,—দেখগে क्षे९- - অt’লের উপর দিয়ে পথ । অ’লের কানায় কানায় জল । আর একটু এগুতে পায়ের পাতা ডুবে যেতে লাগল। জীবধর বলল—বাপ রে, জল জমেছে ত খুব— কানাই বলল—তা বৃষ্ট্রিট। কম হ’ল নাকি ! মাঠে ঘাসপাতা মিলছিল না। গরুগুলো শুকিয়ে মরছিল ; এবার খেয়ে বঁচিবে— - - —তোমার ত কেবল গরু আর গরু । জুই-ক্ষেত চেড়ে চাষার ছেলে গোয়াল হ’লে হয় ঐ রকম । কিন্তু হাসতে গিয়ে জীবধরের হাসি এল না । সে অবাক হয়ে গেছে। বলল—আরে, বিল যে জলে জলে নৈরেকার। দেলখোলায় জল উঠেছে—কাওটা কি ! ! কানাই বলল--দাড়িয়ে গেলে ধে । প্রবাসী సిఉ88 জীবধর বলল—তুমি এগুতে লাগ, কানাই। আমি মাঠের দিকটা ঘুরে অমনি যাচ্ছি। না-হয় দু-জনেই ঐ পথে ঘুরে যাই চল । কিন্তু কানাইয়ের এক কাঠা জমি নেই, মাঠে ঘুরতে যাবে সে কি দেখতে ? জীবধর একাই চলল । দূর থেকে দেখা গেল, আ’লের উপর দুলি দাড়িয়ে । বাতাসে খোলা চুল উড়ছে, দিগন্ত-বিসারী সবুজ আউশধানে তার কোমর অবধি ডুবে গেছে। দুলি চেচিয়ে চেচিয়ে ডাকছে—ওরে গয়লা, দেখেছি—দেখেছি---সব কীৰ্ত্তি দেখতে পাচ্ছি গো— অতএব কাছাকাছি কোথাও মন্দরামও আছে । নন্দরাম কানাইয়ের ছেলে। গোয়ালা বললে সে ক্ষেপে যায়, আর দুলিও তাকে ঐ ছাড়া ডাকবে না। বাপকে দেখে মেয়ের মূৰ্ত্তি রণরঙ্গিনী হয়ে উঠল। বলল—দেখ বাবা, দেখ— অনেক দূরে ধানের চারা নড়ছে বটে ; ধানবনের মধ্যে গরু ! গরুর পিছনে নন্দরাম অাছে। জীবধর বলল— তুই যে আম কুড়োতে গেলি— দুলি বলল—গেলাম ত । তার পর দেখি, গয়লা গরু নিয়ে মাঠে আসছে। পিছন পিছন এলাম । জানি, ধান খাওয়াবে। ও কি কম শয়তান ! খাওয়াচ্ছেও তাই— নন্দরাম কাছে এসে পড়েছে, অালের উপর উঠে সে রুখে দাড়াল। —খবরদার দুলি, মুখ সামলে কথা কস্। দুটো আগ কেটে খেয়েছে কি ন-খেয়েছে— হয়েছে কি তাতে ? ছুলি মুখ ঘুরিয়ে বলল—হয়েছে কি ! যাদের জমি চযতে হয় না, খালি গরু তাড়িয়ে বেড়ায়—তারা কি বুঝবে, আগা কেটে খেলে কি হয়— জীবধরের কানে এসব যাচ্ছে না । সে দেখছে, হৈ-চৈ ক'রে গ্রামের দিক দিয়ে অনেক লোক ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে চলেছে । ~~কি ? কি ? ব্যাপার কি ? --সৰ্ব্বনাশ হয়ে গেছে, সর্দার। বাধ ভেঙেছে । খালের নানাজল উঠছে। শীগগির চল । " জীবধর পাগল হয়ে ছুটল।