পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వచి প্রৰণসী $N9gg নন্দ উদাসভাবে বলল—কোথায় কার জমিতে যাব, কে ফ্যাসাদ বাধাবে চক্ষু কপালে তুলে কানাই বলল—বলিস কি রে ? তামাম মাঠে নোনা লেগেছে, এখন আবার গরুর ভাবনা ? গভর নড়াতে চাস না, সেই কথাটা বল। —জান না ত মাঠের খবর। পরের জমিতে গরু নামাতে দেবে কেন ? নন্দরাম অবাধে মিথ্যা ব'লে চলল— ঐ ত সর্দার-খুড়োর ক্ষেতে নিয়ে গিয়েছিলাম। গরু ধরে তারা খোয়াড়ে দিতে যায়। অনেক বলে-কয়ে ছাড়িয়ে আনলাম । তার পর বলল—টীকাকড়ি দিয়ে একটা বিলিব্যবস্থা ক’রে নিলে হয় কিন্তু । নৌকোর ধান কেনার চেয়ে তাতে সস্তায় হবে । কানাই বলল—টাকা চায় নাকি ? নন্দ বলল—তারা জন-কিষেণ দিয়ে চাষ করিয়েছে, খরচ হয়েছে—চাবে না কেন? টাকা-পচিশেক হাতে গুজে দিয়ে একটা ব্যবস্থা ক’রে নাও গে, বাবা । আমাদের বিশটা গরু এই মগুম খেয়ে শেষ করতে পারবে না— ই—ব'লে কানাই গুম হয়ে খানিক ভাবতে লাগল। বলল—পচিশ টাকা না আরও কিছু ! আচ্ছা দেখছি আমি । সদ্ধার পুর কানাই জীবধরকে নিয়ে নীলরতন চাটুজ্জের বৈঠকখানায় গেল। গ্রামের অনেকেই সেখানে ; আড্ড' সেছে। দশ টাকার একথান নোট সে জীবধরের ক্টোচার খুটে বেঁধে দিল। —ন, ন—সর্দার-ভাই, সে কি হয় ? গতরে খেটেছ, এত পয়সা খরচ করেছ, তোমার কত ক্ষতি হয়েছে। তবু যা হোক, বীজ-ধানের দামটা ত ঘরে উঠল । এই কাটা মাস ক্ষেত আমার জিম্মায় থাকবে, গরুগুলো চরে খাবে— মাঘ-ফাঙ্কনের মধ্যেই তোমার ক্ষেত তুমি ফিরে পাবে। চাটুজ্জে মশায়রা সব গুনে রাখলেন। নম্বরামের বুকের ছাতি ফুলে গেছে। এখন ছলিদের বাড়ীর সামনে দিয়েই গরু তাড়িয়ে মাঠে যায়। দুলিকে দেখলেই শস্ব-সাড়া বেড়ে ওঠে। ছলি কিন্তু ভুলেও তাকায় না। রূপারবেলা আবার যখন গরু ফিরিয়ে আনে, মেয়েট ঐ সময় প্রায়ই ঘাটে বসে বাসন মাজে। একটা দিনও সে মুখ তোলে না। কুড়িট গরু হৈ-হৈ শৰে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া—তা কাল দুলির কানেই যায় না যেন! আবার একদিন বড় মেঘ ক’রে এল। তার পর ঝমঝম ক'রে বৃষ্টি। বৃষ্টি-বৃষ্টি-রাত দুপুর অবধি একটানা বৃষ্টি চলল। শুকনো মাঠেঘাটে জলের তুফান বইতে লাগল। দু-এক দিনের মধ্যে দেখা গেল, লাল ধানবন আবার সবুজ হয়ে উঠেছে। জীবধর ক্ষেতের ধারে গিয়ে দাড়াল, মুখ হাসিতে ভরে গেল। সেখান থেকে সোজা গেল সে চাটুজ্জে-বাড়ী। বলল—চাটুজ্জে মশায়, কপাল ফিরেছে। ধানের চেহারা দেখবেন একবার গিয়ে । কানাইয়ের টাকা ফেরত দিতে যাচ্ছি । কানাই আকাশ থেকে পড়ল। বলে—বোশেখে এমন বর্ষ, দেখেছ কখন ? তোমার কপালে নোনা লেগেছিল ; আমার কপালে নোনা ধুয়ে সাফ হয়ে গেল। আমি গোলা বঁধেছি। টাকা অামি ফেরত নেব না । আবার সেই দিন দুলির সঙ্গে নন্দরামেরও ঝগড়া লাগল। নন্দরাম অভশত খবর রাখে না, গরু নিয়ে যেমম যায়, তেমনি যাচ্ছিল। দুলি তার সাড়া পেয়ে কাজকৰ্ম্ম ছেড়ে রাস্তার উপর মুখোমুখি এসে দাড়াল। —ও গয়লা, গরু নিয়ে যাচ্ছ যে বড় ! নন্দরাম অবাক হয়ে গেছে। বলল-আজকে নতুন যাচ্ছি নাকি ? দুলি হাসিতে যেন ফেটে পড়তে লাগল। বলল— ক্ষেতের নতুন রূপ খুলেছে, দেখ গে গিয়ে । দরদ হয় না ? গরু দিয়ে খাওয়াতে সরম লাগে না ? হ্যা রে গয়লা ? নন্দর রাগ হয়ে গেল। বলল—ই্যা—হঁ্য— টাকা দিয়েছি—গরু দিয়ে খাওয়াই, যা করি—গায়ের মানুষ কথা বলতে যাবে কেন ? আর, যার তার কাছে কৈফিয়ংই বা দিতে যাব কেন ? ছলি মুখ ঘুরিয়ে বলল—সাধে কি গম্বুল বলি ? হতে চাষ, ধানের মৰ্ম্ম বুঝতে পারতে। চলদিকি কানাই-জেঠার কাছে, বিচারটা কি হয় দেখি— у ছলি কিছুতে ছাড়ল না। গরু রইল সেখানে, ঝগড়া করতে করতে দু-জনে চলল কানাইয়ের কাছে । নন্দ