পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চীন ও জাপান উত্তর-চীনে জাপানের বর্তমান ‘সাম্রাজ্য-অন্বেষণ’ অভিধানের গোড়ার কথা অনেক দিন আগেকার। ১৮৯৪ খ্ৰীষ্টাব্দে চীন-জাপান যুদ্ধের ফলে বিজয়ী জাপান ফরমোজা দ্বীপ দখল করে । তখন জাপান প্রতীচ্যের খোলস ছাড়িয়া পাশ্চাত্যের নূতন সজ্জা ধরিয়াছে এবং সেই সঙ্গে তার সাম্রাজ্যপিপাসাও আরম্ভ হইয়াছে। মাঝে ১৯০১ সালে বক্সার-যুদ্ধ মিটিবার পরে জাপান ইউরোপ ও আমেরিকার দক্ষ্যদলের সঙ্গে (র্তাহাদের অনেকে এখন পরম সাধু সাজিয়াছেন) মিশিয়া চীনদেশে নানা প্রকার অধিকার পায়। সেই সব অধিকারের ভাগ লইয়াই ১৯০৫ সালে রুশ-জাপান যুদ্ধ বাধে এবং যুদ্ধে জয়ী হওয়ায় জাপান কোরিয়া ও মাঞ্চুরিয়ার ইজারা পায়। ইজারার পথ সাম্রাজ্যের দিকে লইবার জন্য কোরিয়ায় প্রথম ‘স্বাধীন রাজা' বসাইয়া, পরে ১৯১০ সালে জাপান কোরিয়াকে নিজ সাম্রাজ্যভূক্ত করে। মহাযুদ্ধের সময় জাৰ্ম্মানীর সাম্রাজ্যবাদ-দমনকারীদিগের সঙ্গে মিলিবার ফলে ১৯১৫ সালে শানটুঙ্গের এক বন্দর জাপানের হাতে আসে, কিন্তু ১৯২২ সালে অন্য শক্তিপুঞ্জের চীন-প্রেমের বন্যার ঢেউ বেশী হওয়ায় সেটা চীনকে ফেরত দিতে হয়। ১৯৩২ সালে মাধুরিয়ার ইজারাও ঐ ভাবে চীনকে ফরত দেওয়ার আভাস-ইঞ্জিতে জাপান এবার রুদ্রমূৰ্ত্তি ধরে। পাশ্চাত্য শক্তিপুঞ্জ প্রথমে লম্ফঝম্প করিয়া পরে ধর্মের গীত গাহিয়া ‘দুত্তোর ছাই বলিয়া সরিয়া পড়েন। ধর্থনীতিগায়কদিগের মধ্যে আমাদের ভূতপূৰ্ব্ব লাট পিটন সাহেবও ছিলেন। যাহা হউক, জাপান অত্যুচ্চ চিাত্য নীতি অনুসারে মাঞ্চুরিয়ায় “স্বাধীন রাজ্য” বগাইয়ী ১৯৩২ সাল হইতে নিজের দখল মজবুত করিতে Afরম্ভ করে । এই দখল নিৰ্ব্বিবাদ করিবার জচ্চ জাপান ১৯৩৩ সালে মাঞ্চুরিয়ার পাশ্ববৰ্ত্ত জিহোল প্রদেশ অধিকার করে । o 曾 e উত্তর চীনে মাঞ্চুরিয়ার পরে চাহার হোপেছ, কুইয়ান, X 3 শানসি ও শানটুঙ্গ এই পাঁচটি প্রদেশ আছে। একত্রে এই পাচটিকে আর একটি তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত পিইপিং ষ্টেশনের সম্মুখভাগ করিয়া মাঞ্চুরিয়া-রাজত্ব নিষ্কণ্টক করা ও সঙ্গে সঙ্গে চীনে সাম্রাজ্য স্থাপনের আর একটি ধাপ গাখিতে আরম্ভ করা —ইহাই এখন জাপানের চেষ্টা । তাহার পথরোধ করার কোন ওজর আপত্তি সে শুনিতে প্রস্তুত নয় এবং ইহাও সত্য যে জোর গলায় প্রতিবাদ করার মত সাহস কাহারও জোগাইতেছে না। - ১৯৩২ সালের শেষে জেনিভায় লিটন-কমিটি মাঞ্চুরিয়া দখল সম্বন্ধে রিপোর্ট দাখিল করিলে, জাতিসঙ্ঘে জাপানী প্রতিনিধিবর্গ প্রথমে দুই-এক মাস কূটতর্কে জয়লাভের • চেষ্টা করে। যখন তাহারা দেখিল যে পাশ্চাত্যদল তাহাদের নিজস্ব পন্থায় অন্ত দেশীয়দের অধিকার দিতে রাজী নয় অথচ জাপানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের ভরসাও তাহাঙ্গের নাই তখন তাহারা তর্কযুক্তি ছাড়িয়া মাংস্ত স্থা অবলম্বনই শ্ৰেষ্ঠ মনে করিল। ফলে ১৯৩৩ সালের ১লা জানুয়ারী তাহারা শানহাইকোয়ান দখল করে এবং ২১শে ফেব্রুয়ারী (জাতিসঙ্ঘের কমিটি যেদিন মাঞ্চুরিয়া সম্বন্ধে তাহাজের চেষ্টা ব্যর্থ বলেন সেই দিনই ) পুনৰ্ব্বার জিহোল আক্রমণ আরম্ভ করে ।